‘রক্তাক্ত মধ্যপ্রাচ্যে আর থাকবে না যুক্তরাষ্ট্র’

SHARE

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এমন ঘোষণা দিয়ে বলেছেন, গোটা বিশ্বে পুলিশম্যানের (প্রহরী) দায়িত্ব পালন করার আর কোনো প্রয়োজনীয়তা যুক্তরাষ্ট্রের নেই।

বুধবার হোয়াইট হাউসে এক বিশেষ বক্তব্যে মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কের গতিপথ বদল করার ঘোষণা দেন ট্রাম্প।

সেখানে তিনি আরও বলেন, মধ্যপ্রাচ্যে পুলিশম্যানের দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে তার দেশের অনেক নিরাপত্তা সেবা প্রদানকারী সদস্যকে প্রাণ হারাতে হয়েছে।

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেন, ‘আমরা বের হয়ে আসছি। দীর্ঘদিনের রক্তক্ষয়ী লড়াইয়ে এবার অন্য কারও আসার পালা। গোটা বিশ্বে পুলিশের দায়িত্ব পালন করা আমাদের সামরিক বাহিনীর কাজ নয়। অন্য দেশকেও তাদের ভাগে পড়া দায়িত্ব পালন করতে হবে।’

উত্তর সিরিয়া থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের ঘোষণা দেয়ার জন্য অনেকে তার সমালোচনা করে অভিযোগ তুলেছেন, এমন পদেক্ষেপের মাধ্যমে তিনি ইসলামিক স্টেটের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে যুক্তরাষ্ট্রের দীর্ঘদিনের মিত্র কুর্দি যোদ্ধাদের একঘরে করেছে।

যুক্তরাষ্ট্র সিরিয়া থেকে সেনা প্রত্যাহার শুরু করার পর তুরস্ক কুর্দি যোদ্ধাদের বিরুদ্ধে ওই অঞ্চলে ব্যাপক সামরিক অভিযান শুরু করেছে। গত সপ্তাহে তুরস্ক এমন পাঁচ দিনের যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে এই শর্তে যে ওই সময়ের মধ্যে কুর্দি যোদ্ধাদের তুরস্ক সীমান্ত লাগোয়া ওই অঞ্চল ছেড়ে চলে যেতে হবে।

রাশিয়ার হস্তক্ষেপ
যুদ্ধবিরতি চুক্তির পর রাশিয়া এবং সিরিয়া-তুরস্ক সীমান্ত লাগোয়া অঞ্চল থেকে কুর্দি যোদ্ধাদের অন্যত্র সরে যাওয়ার বিষয়ে কাজ করছে। দৃশ্যপটে রাশিয়ার আগমনের পর কুর্দি যোদ্ধাদের ভবিষ্যত আরও অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। তারা কোথায় যাবে তার পথ খুঁজে পাচ্ছে না।

তুরস্ক-সিরিয়া সীমান্ত থেকে যোদ্ধাদের দ্রুত সরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়ে রাশিয়া হুঁশিয়ার করেছে হয় দ্রুত সরে যান নইলে তুর্কি সেনাদের হাতে মারা পড়তে হবে। সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের প্রধান মিত্র হলো রশিয়া। অথচ সেই রাশিয়াই আবার তুরস্কের সঙ্গে সমঝোতা করেছে। ফলে পরিস্থিতি বেশ ঘোলাটে হয়ে উঠেছে।

কিন্তু ট্রাম্প এদিকে বলছে সিরিয়ায় কিছু মার্কিন সেনা থাকবে। তারা সিরিয়ার তেলক্ষেত্র এলাকাগুলোতে অবস্থান করবে বলেও জানিয়েছেন তিনি। ট্রাম্প বলেন, ‘আমরা তেল ক্ষেত্রগুলোর নিরাপত্তা দিতে সেখানে কিছু সেনা মোতায়েন রাখবো।’

গত ৯ অক্টোবর সিরিয়া থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহার শুরু হলে সেখানে সামরিক অভিযান শুরু করে তুরস্ক। জাতিসংঘ বলছে, তুর্কি অভিযান শুরু হওয়ার পর ওই এলাকা থেকে ১ লাখ ৭৬ হাজারের বেশি মানুষ বাড়িঘর ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছে।