শান্তিনিকেতনে বাংলাদেশিদের হেনস্থা

SHARE

মঙ্গলবার রাতে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির চারুকলার পরিচালক আশরাফুল আলম পাপ্লু, বাংলাদেশের একজন সাংস্কৃতিক কর্মী এমদাদুল হক সুফি ও বোলপুরে একটি প্রাইভেট আর্ট গ্যালারির মালিক পুলিশি হেনস্থার শিকার হয়েছেন।

আজ বুধবার সকালে এই তিনজন ব্যক্তি একটি সংবাদ সম্মেলন করে দাবি করেন, শান্তিনিকেতনের মতো সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে পুলিশি হয়রানি এবং পুলিশদের আক্রমণাত্মক অভদ্র আচরণ তাদের অবাক করেছে।

বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি চারুকলার পরিচালক আশরাফুল আলম পাপ্লু, সাংস্কৃতিক কর্মী ইমদাদুল হক, যিনি সাংস্কৃতিক ম্যাগাজিন দেশ প্রসঙ্গর সম্পাদক, বোলপুর প্রাচী প্রতীচী আর্ট গ্যালারি দেখতে এসেছিলেন।

আর্ট গ্যালারিটি নেতাজি মার্কেটের চারতলা ভবনের তিনতলায় অবস্থিত বোলপুরে এটি একটি পরিচিত মার্কেট কমপ্লেক্স।

‘আমরা যখন গ্যালারিতে, নিচতলায় একদল লোককে চিৎকার করতে শুনি, তখন আমরা আমাদের দেশ শিল্প-সংস্কৃতি নিয়ে আলোচনা করছিলাম। আমরা লোকজনের চিৎকার শুনতে পেয়ে যখন কারণ জানতে চাইলাম তখন বলেন তারা পুলিশকর্মী। কিন্তু তারা সবাই সিভিল ড্রেসে ছিলেন, তাই আমরা তখন তাদের পুলিশ হিসেবে চিহ্নিত করতে পারেনি। আমরা যখন তাদের পরিচয় জানতে চাইলাম তখন উনারা পুলিশ হিসেবে পরিচয় দিয়ে আমাদের হুমকি দেওয়া শুরু করে,’ বললেন আর্ট গ্যালারির মালিক তাপস মল্লিক।

তাপস মল্লিক বাকবিতণ্ডা চলাকালে বলেছিলেন সিনিয়র পুলিশদেরকে এই ঘটনার কথা জানানো হোক, ঠিক সেই সময়ে একজন যিনি নিজেকে সাব-ইন্সপেক্টর অনুকূল মাল বলে পরিচয় দিয়েছিলেন, হঠাৎ তাকে গ্রেপ্তারের জন্য একজন নির্দেশ দিলেন এবং তাকে তৎক্ষণাৎ পুলিশের গাড়িতে তুলে নেওয়া হয়েছিল বলে জানান তাপস মল্লিক।

পুলিশ সূত্র জানায়, অনুকূল মাল বোলপুর থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক এবং তার নাইট ডিউটি পরিচালনা করতে সেখানে গিয়েছিলেন।

তাপস মল্লিক আরো বিস্তারিত বলতে গিয়ে বলেন, ‘আমি তাদের অনুরোধ করি আমার সঙ্গে আমার মেয়ে ও অতিথিরা আছে, তাই আমাকে যাতে থানায় নিয়ে না যায়। আমি যখন তাদের বলি, আমি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানাব, তারা আমাকে জোরপূর্বক গাড়িতে নিয়ে যায়।’

‘আমরা শান্তিনিকেতনকে সংস্কৃতি ও শিল্পকলার নিউক্লিয়াস হিসাবে বিবেচনা করি… আমরা অবাক হলাম পুলিশদের মুখ দেখে, তাদের ব্যবহার শুনে। পুলিশের কাছে আমাদের পরিচয় শোনার সময় ছিল না। গতকাল রাতে আমরা যে ঘটনার মুখোমুখি হয়েছি তা প্রকৃতপক্ষে অমানবিক এবং আমাদের অবাক করার জন্য যথেষ্ট ছিল,’ বলেছেন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির পরিচালক আশরাফুল আলম।

বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক কর্মী ইমদাদুল হক সুফি বলেন, আমরা এই ঘটনার পরে খুব আঘাত পেয়েছি পুলিশ অবশ্যই আমাদের হয়রানি করেছে।

এই ঘটনায় অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তা অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করেছেন এবং বলেছেন এ তিন ব্যক্তির মধ্যে একজন ইচ্ছাকৃতভাবে তাদের কাজে হস্তক্ষেপ করেছেন।

বুধবার সন্ধ্যায় অনুকূল মাল বলেছেন, ‘আমি রাতে পেট্রোলিং গেছিলাম এবং আমি দেখলাম বাজারে মেন গেট খোলা ছিল। এখানে অনেকগুলো দোকান রয়েছে এবং চুরির সম্ভাবনা নিয়ে আমি সন্দেহ করি আমি শুধুমাত্র নাইট গার্ডের জন্য চিৎকার করছিলাম এরপর তিন ব্যক্তি নিচ তলায় নেমে এসে আমাকেও হুমকি দেয় আমি তাদের পরিচয় পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তাদের মুক্ত করে দিয়েছিলাম।’

এটি শুধুমাত্র একটি ভুল বুঝাবুঝি হয়েছিল।

তিনি আরো জানান, বীরভূমের জেলা পুলিশ প্রধান শ্যাম সিংহ বলেছিলেন, সেখানে কি ঘটেছিল তা জানতে আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখব।