ঢাকা-চট্টগ্রাম-কক্সবাজার হাইস্পিড ট্রেন প্রকল্প ১৫ মাস পেছানোর শঙ্কা

SHARE

প্রায় ১৫ মাস পিছিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে ‘ঢাকা-চট্টগ্রাম ভায়া কুমিল্লা/লাকসাম হাইস্পিড ট্রেন নির্মাণের উদ্দেশে সম্ভাব্যতা সমীক্ষা ও বিশদ ডিজাইন’ প্রকল্প। এর ফলে এই রুটে হাইস্পিড রেলপথ নির্মাণের জন্য মূল প্রকল্প প্রণয়নে আরো অপেক্ষা করতে হবে। ডলারের দাম ও পরামর্শক খাতে ব্যয় বাড়ার কারণে এ দেরি বলে জানা গেছে। এছাড়া প্রথমে চট্টগ্রাম পর্যন্ত প্রকল্প থাকলেও তা বাড়িয়ে কক্সবাজার পর্যন্ত নেয়ার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।

২০১৭ সালের ১৮ মার্চ সমীক্ষা প্রকল্পটি অনুমোদন করা হয়। একই বছরের ৩১ মে পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি হয়। বর্তমানে সমীক্ষাটি চলছে। এটি সম্পন্ন হলে প্রথমবারের মতো ঢাকা-চট্টগ্রামের মধ্যে দ্রুতগতির বুলেট ট্রেন চালু হবে।

চুক্তি অনুযায়ী, পরামর্শক প্রতিষ্ঠান চায়না রেলওয়ে ডিজাইন কর্পোরেশন (চায়না) এবং বাংলাদেশের মজুমদার এন্টারপ্রাইজকে ডলারে পরামর্শক ব্যয় পরিশোধ করতে হবে। এখন ডলারের দাম বেড়ে যাওয়ায় সমীক্ষা প্রকল্পের সময় ও ব্যয় বেড়ে যাচ্ছে বলে জানিয়েছে রেল সূত্র।

সমীক্ষা প্রকল্পটির অনুমোদিত ব্যয় ছিল ১০০ কোটি ৬৯ লাখ ২৯ হাজার টাকা। ২০১৭ সালের ০১ জানুয়ারি থেকে ২০১৯ সালের ৩১ মার্চেল মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করার কথা। বর্তমানে সমীক্ষা প্রকল্প নেয়া হলেও পরবর্তীতে মূল প্রকল্প গ্রহণ করা হবে, যেখানে আরো কয়েক বছর সময় লাগবে।

সমীক্ষা প্রকল্পের মেয়াদ ছিল ২ বছর ৩ মাস। ২০১৭ সমীক্ষা প্রকল্পে পরামর্শক সেবা বাবদ মোট ব্যয় ছিল ৯৭ কোটি ৪১ লাখ ১৫ হাজার টাকা। তখন বৈদেশিক মুদ্রায় অর্থ পরিশোধের ক্ষেত্রে মার্কিন ডলারের সঙ্গে টাকার বিনিময় হার ধরা হয়েছিল ১ মার্কিন ডলার সমান ৭৮ টাকা ৪০ পয়সা। বর্তমানে বাংলাদেশ ব্যাংকের মাধ্যমে ১ মার্কিন ডলার ৮৩ টাকা ৮৫ পয়সা খরচ করে কিনতে হচ্ছে। ফলে এই খাতে অতিরিক্ত ৯ কোটি ৭৭ লাখ ৩৫ হাজার টাকা বাড়ছে। সার্বিকভাবে সমীক্ষা প্রকল্পের ব্যয় বাড়ছে ৯ দশমিক ৫১ শতাংশ। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, এই টাকা সমন্বয় করতে প্রকল্পের মেয়াদ ১৫ মাস বাড়ছে। ফলে এখন প্রকল্পের সময় বেড়ে দাঁড়াচ্ছে ২০২০ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত।

বাংলাদেশ রেলওয়ে এবং চায়না রেলওয়ে ডিজাইন করপোরেশন (চীন) এবং মজুমদার এন্টারপ্রাইজ (বাংলাদেশ) যৌথভাবে সম্ভাব্যতা সমীক্ষা ও নকশার কাজ করছে। প্রকল্পের আওতায় বিভিন্ন অবকাঠামোর বিশদ ডিজাইন প্রণয়ন, দরপত্র দলিলাদি প্রস্তুতকরণ, নতুন রেললাইন পরিচালন প্রক্রিয়া নির্ধারণ, প্রাথমিক পরিবেশ পরীক্ষা প্রতিবেদন তৈরি, প্রকল্পের পরিবেশগত প্রভাব মূল্যায়ন, পরিবেশ ব্যবস্থাপনা ও মনিটরিং, ভূমি অধিগ্রহণ ও পুনর্বাসন পরিকল্পনাও চলমান রয়েছে।

প্রস্তাবিত দ্রুতগতির রেলপথটি যাবে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার মধ্য দিয়ে। এই পথে ঢাকা থেকে কুমিল্লা/লাকসাম হয়ে চট্টগ্রাম পর্যন্ত হাইস্পিড ট্রেন লাইন নির্মাণ করা হলে এ পথে যাতায়াতে এক ঘণ্টারও কম সময় লাগবে। রেলপথটি কক্সবাজার পর্যন্ত বর্ধিত করা হলে পর্যটন নগরী কক্সবাজারে যাতায়াতও সহজ হয়ে যাবে।