শ্রীলঙ্কায় জনগণকে আপাতত মসজিদ-গির্জায় না যাওয়ার পরামর্শ

SHARE

ফের সন্ত্রাসী হামলার আশঙ্কায় আপাতত মসজিদ ও গির্জায় না যেতে বাসিন্দাদের পরামর্শ দিয়েছেন শ্রীলঙ্কার ধর্মীয় নেতারা। রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা নিশ্চিতে রাজনৈতিক ঐক্যের ডাক দিয়েছেন লঙ্কান প্রেসিডেন্ট মাইথ্রিপালা সিরিসেনা। এর মধ্যেই দেশটি ভ্রমণে মার্কিন ও ব্রিটিশ নাগরিকদের জন্য সতর্কতা জারি করেছে যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেন।

এদিকে গণনায় ভুল হওয়া দাবি করে, সিরিজ হামলায় নিহতের সংখ্যা প্রায় ১শ’ কমিয়ে ২শ’ ৫৩ বলে জানিয়েছে শ্রীলঙ্কার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এদিকে হামলায় অভিযুক্ত মূলহোতা জঙ্গি নেতা জারহান হাশিম গত রোববারের হামলায় নিহত হয়েছে বলে দাবি করেছেন প্রেসিডেন্ট সিরিসেনা।

নেগোম্বোরের সেন্ট সেবাস্তিয়ান গির্জাজুড়ে এখন কেবলই নিস্তব্ধতা। রোববার ইস্টার সানডের প্রার্থনা চলাকালে আত্মঘাতী হামলা স্তব্ধ করে দিয়েছে জীবনের উচ্ছ্বাস।

শ্রীলঙ্কা সেন্ট সেবাস্তিয়ান গির্জার সহকারী পুরোহিত ফাদার সানজেয়া আপ্পুহামায় বলেন, মানুষজন মারা যাচ্ছে, কাঁদছে, চিৎকার করছে, স্বজনদের খোঁজাখুঁজি করছে। কি যে ভয়াবহতা, বুঝাতে পারবো না। খুবই খারাপ লাগছে এখন, কারণ মানুষকে উপাসনার জন্য আহ্বান জানাতে পারছি না।

শঙ্কা, আতঙ্ক আর ক্ষোভের ছায়া সাধারণ মানুষের জীবনও। বাত্তিকোলার মুসলমানরা ঘরবাড়ি ছেড়ে আশ্রয় নিচ্ছেন মসজিদে। তাদেরকে সেখানে নিরাপত্তা দিচ্ছেন সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা। আরো হামলায় আশঙ্কায় ব্রিটিশ নাগরিকদের সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছে যুক্তরাজ্য। এর মাঝেই ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছেন লঙ্কানরা।

তারা বলেন, ভয়ের মধ্যে বাস করছি আমরা। কাউকে দেখলেই ভয় হয়। যাকে সব সময় যাকে দেখে আসছি তাকেও। গৃহযুদ্ধ চলাকালেও কেউ গির্জায় হামলা চালানোর সাহস করেনি। বর্বর এ হামলার পর দেশজুড়ে কবরের নীরবতা বিরাজ করছে।

বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) সিনামোন এবং শানগ্রি লা হোটেলে সন্দেহভাজন তিন হামলাকারীর সিসিটিভি ভিডিও প্রকাশ করা হয়। এতে হামলাকারীদের কাঁধে একই রঙের ব্যাগ এবং মাথায় ক্যাপ দেখা যায়। আরো কয়েকজন সন্দেহভাজন হামলাকারীর ছবি প্রকাশ করেছে লঙ্কান কর্তৃপক্ষ।

লঙ্কান পুলিশের মুখপাত্র রুয়ান গুনেসেকারা বলেন, তদন্তের জন্য দেশের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ৭০ জনকে আটক করা হয়েছে। এদের মধ্যে ৫ জন নারী। ৩৩ জনকে সিআইডি জিজ্ঞাসাবাদ করছে। ৪ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে টেরোরিস্ট ইনভেস্টিগেশন ইউনিট।

এ অবস্থায় নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে রাজনৈতিক ঐক্যের ডাক দিয়েছেন লঙ্কান প্রেসিডেন্ট।

শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট মাইথ্রিপালা সিরিসেনা বলেন, জনগণের স্বাভাবিক জীবন যাপনের জন্য শান্তিপূর্ণ পরিবেশ তৈরি করতে সেনাবাহিনীকে একজোট হয়ে সহযোগিতার জন্য সবার প্রতি আহ্বান জানাই। বিশ্বের শক্তিশালী বেশ কয়েকটি দেশ অপরাধীদের গ্রেফতারে লঙ্কান গোয়েন্দা বাহিনীর সঙ্গে কাজ করছে।

এদিকে, দুবাইয়ের আইকনিক টাওয়ার বুর্জ খলিফা শ্রীলঙ্কার পতাকার রঙে রাঙিয়ে হতাহতের পরিবারের প্রতি সহমর্মিতা এবং সংহতি প্রকাশ করেছে সংযুক্ত আরব আমিরাত।