গত ফেব্রুয়ারিতে পুলওয়ামা সংকটের সময় পাকিস্তানের একটি এফ-১৬ যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করার দাবি করেছিল ভারত। তবে যুক্তরাষ্ট্রের ফরেন পলিসি নামের একটি সংবাদমাধ্যম বলছে, ভারতের এই দাবি সঠিক নয়। বৃহস্পতিবার প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে দুজন মার্কিন প্রতিরক্ষা কর্মকর্তার বরাত দিয়ে বলা হয়েছে, ওই দুজন কর্মকর্তা পাকিস্তানের এফ-১৬ যুদ্ধবিমানগুলো গুণে দেখেছেন। সেগুলোর মোট সংখ্যায় কোনো গরমিল পাননি তাঁরা। গত ফেব্রুয়ারির আগে পাকিস্তানের যে কয়টি এফ-১৬ ছিল, বর্তমানেও নাকি তাই রয়েছে!
ভারত সরকার গত ২৭ ফেব্রুয়ারি দাবি করেছিল যে, ভারতীয় বিমানবাহিনীর পাইলট অভিনন্দন বর্তমান পাকিস্তানের একটি যুদ্ধবিমানকে তাড়া করেছিল। পাকিস্তানের ওই যুদ্ধবিমানটি ভারতীয় সামরিক স্থাপনা লক্ষ্য করে হামলা চালানোর চেষ্টা করছিল। নিজের বিমান ভূপাতিত হওয়ার আগেই অভিনন্দন পাকিস্তানের একটি যুদ্ধবিমানে আঘাত হানতে সক্ষম হন। এর পর পরই ভারত-পাকিস্তান সীমান্তের লাইন অব কন্ট্রোলে ভূপাতিত হয় অভিনন্দনের বিমান। পাকিস্তানের কারাগারে তিন দিন অবরুদ্ধ থাকার পরে পাকিস্তান অভিনন্দনকে ভারত সরকারের কাছে হস্তান্তর করে।
গত ২৮ ফেব্রুয়ারি ভারতীয় বিমানবাহিনী তাদের দাবির সত্যতা প্রমাণ করতে, পাকিস্তানি যুদ্ধবিমান থেকে ছোড়া একটি মিসাইলের কিছু অংশবিশেষ গণমাধ্যমের সামনে উপস্থাপন করে। তবে সেই সময় ভারত সরকারের কোনো পক্ষই এটি নিশ্চিত করেনি যে, ঠিক কোনো স্থানে অভিনন্দন পাকিস্তানের এফ-১৬ ভূপাতিত করেছিল।
ফরেন পলিসির প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, এ ঘটনার সত্যাসত্য নিরূপণে পাকিস্তান মার্কিন দুই কর্মকর্তাকে তাদের এফ-১৬ যুদ্ধবিমান গুণে দেখার অনুরোধ জানায়। যুক্তরাষ্ট্রের গণনায় পাকিস্তানের সব এফ-১৬ বিমানই পাওয়া গেছে। যেটি ফেব্রুয়ারিতে করা ভারতের দাবির সম্পূর্ণ বিপরীত। প্রতিবেদনটিতে আরও বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃপক্ষের পরিচালিত এই গণনার পরে ভারতের দিক থেকে ওই দিনের যে বর্ণনা দেওয়া হয়েছিল, তা নিয়ে সন্দেহ দেখা দিয়েছে।
ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী নির্মলা সীতারমন বলেছেন, পাকিস্তানের এফ-১৬ যুদ্ধবিমান ভারত ভূপাতিত করেছে এটা নিশ্চিত। ওই সময়ে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বক্তব্যও সেটা স্পষ্ট হয়েছে।
গত ১৪ ফেব্রুয়ারি ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পুলওয়ামায় দেশটির আধা সামরিক বাহিনী সিআরপিএফের গাড়িবহরে আত্মঘাতী হামলা হয়। ওই হামলায় ৪০ জনের বেশি জওয়ান নিহত হন। পাকিস্তানভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন জইশ-ই-মুহাম্মদ এ হামলার দায় স্বীকার করে। এর প্রত্যুত্তরে পাকিস্তানের বালাকোটে বিমান হামলা চালায় ভারত।