৭৫ শতাংশ পাসপোর্ট ভেরিফিকেশনে ঘুষ নিচ্ছে পুলিশ : টিআইবি

SHARE

পাসপোর্ট তৈরিতে ভেরিফিকেশনের সময় শতকরা ৭৫ দশমিক ৩ জন গ্রাহকের কাছ থেকে এসবি (স্পেশাল ব্রাঞ্চ) পুলিশ ঘুষ বা নিয়ম-বহির্ভূত অর্থ নেয়।

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) এক গবেষণায় এ তথ্য ওঠে এসেছে। সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়।

গবেষণার ফলাফলে টিআইবি জানায়, পুলিশ ভেরিফিকেশনের নামে ঘুষ বা নিয়ম-বহির্ভূত অর্থ হিসেবে গড়ে একজন সেবাগ্রহীতার কাছ থেকে ৭৯৭ টাকা আদায় করে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, নতুন পাসপোর্টের জন্য আবেদনে পুলিশ ভেরিফিকেশন ব্যবস্থা সাধারণ আবেদনকারীদের হয়রানি ও দুর্নীতির শিকার হওয়ার একটি অন্যতম মাধ্যম হয়ে দাঁড়িয়েছে।

জরিপে দেখা গেছে, নতুন পাসপোর্ট আবেদনের ক্ষেত্রে ৭৬ দশমিক ২ শতাংশ সেবাগ্রহীতা পুলিশি তদন্তে অনিয়ম ও দুর্নীতির শিকার হয়েছেন। এছাড়া ৭৫ দশমিক ৩ শতাংশ গ্রহীতাকে ঘুষ বা নিয়ম-বর্হিভূত অর্থ দিতে হয়েছে।

বলা হয়েছে, পুলিশি প্রতিবেদন প্রণয়নে এসবি পুলিশ কর্তৃক আবেদনকারীদের হয়রানি করার অভিযোগ রয়েছে। যেমন, আবেদনপত্রে অযথা ত্রুটি খুঁজে বের করার চেষ্টা, আবেদনকারীদের জঙ্গি কার্যক্রম বা অন্য রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ততার ভয় দেখানো, বাড়িতে না এসে চায়ের দোকান বা থানায় ডেকে পাঠানো, নিয়ম-বর্হিভূত অর্থ বা ঘুষ দাবি করা এবং ক্ষেত্রবিশেষে তা বিকাশের মাধ্যমে পাঠাতে বলা ইত্যাদি।

পাসপোর্ট অফিস ও এসবি অফিসের মধ্যে পুলিশি প্রতিবেদন সংক্রান্ত তথ্যাদি আদান-প্রদানে সমস্যা ও সীমাবদ্ধতা পরিলক্ষিত হয় বলেও টিআইবির গবেষণায় উঠে এসেছে। এক্ষেত্রে পাসপোর্ট অফিস হতে অনলাইনে আবেদনকারীর তথ্যাদি পাঠানো হলেও এসবি অফিসগুলোর একাংশ হতে প্রতিবেদন অনলাইনে পাঠাতে ঘাটতি রয়েছে। আবার কিছু এসবি অফিস হতে অনলাইনে পাঠানো হলেও তা দেরি করে পাঠানো হয়। ফলে পাসপোর্ট প্রক্রিয়াকরণ সম্পন্ন হতে দেরি হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, এসবি পুলিশ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের মতে, প্রতিবেদন অনলাইনে পাঠানোর ক্ষেত্রে তারা কিছু কারিগরি সমস্যার সম্মুখীন হন। যেমন, অনলাইনে সংশ্লিষ্ট লিংক সব সময় কাজ না করা, অনলাইনে পাঠানোর জন্য এমআরপি প্রকল্পের আওতায় সরবরাহকৃত যন্ত্রাংশ বিকল থাকা এবং এগুলোর করিগরি সমস্যা সমাধানে পাসপোর্ট অফিস থেকে সময়মত সাড়া না দেওয়া উল্লেখযোগ্য।

অন্যদিকে, পুলিশি প্রতিবেদন সংক্রান্ত বিভিন্ন সমস্যা নিরসনে স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে আঞ্চলিকক পাসপোর্ট অফিসগুলোর প্রতি তিন মাস পরপর সমন্বয় সভা করার নিয়ম থাকলেও বাস্তবে তা করা হয় না বলে টিআইবিরি প্রতিবেদনে তথ্য রয়েছে।