ওবামা ও ইরানের মধ্যে আঁতাত হলে কী হতো?

SHARE

সাবেক এফবিআইপ্রধান জেমস কোমি প্রশ্ন তুলেছেন, বারাক ওবামাকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত করতে ইরান মার্কিন নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করেছে বলে যদি অভিযোগ উঠত, তাহলে সবাই কীভাবে প্রতিক্রিয়া দেখাতেন?

কোমি গতকাল বুধবার এনবিসি টিভিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এই প্রশ্ন তোলেন।
২০১৬ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের পক্ষে রাশিয়ার হস্তক্ষেপের অভিযোগ প্রসঙ্গে কোমি বলেন, ‘চোখ বন্ধ করে একবার শুধু নামগুলো বদলে দিন। রাশিয়া ও ট্রাম্পের জায়গায় ইরান ও ওবামার নামটা রাখুন।’

কোমি বলেন, যদি এমন হতো যে পারমাণবিক চুক্তিতে সুবিধা হবে—এই কারণে ইরান ওবামাকে নির্বাচিত হতে সাহায্য করার লক্ষ্যে যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করেছে! এই প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে ওবামার সহকর্মীদের কেউ ইরান সরকারের প্রতিনিধিদের সঙ্গে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের ক্ষতিকর তথ্য সংগ্রহের লক্ষ্যে গোপনে সাক্ষাৎ করেছেন! এফবিআই সেই খবর জানার পরেও কি বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করবে না?

যদিও ওবামা ও ইরানের মধ্যে এমন কোনো আঁতাতের অভিযোগ ওঠেনি; কিন্তু ট্রাম্প ও রাশিয়া নিয়ে তেমন অভিযোগ ওঠে।

ট্রাম্প টাওয়ারে ট্রাম্পের ক্যাম্পেইনের শীর্ষ কর্মকর্তারা হিলারি ক্লিনটনের ব্যাপারে ক্ষতিকর তথ্য সংগ্রহের উদ্দেশ্যে রুশ সরকারের সঙ্গে বৈঠকে মিলিত হয়েছিলেন। কোমির নির্দেশে এফবিআই সম্ভাব্য আঁতাত নিয়ে তদন্ত করেছিল।

প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর ট্রাম্প কোমিকে সেই তদন্ত বন্ধ করতে অনুরোধ করেছিলেন। কোমি সেই অনুরোধ রাখতে অপারগতা প্রকাশ করলে ট্রাম্প তাঁকে পদচ্যুত করেন। এ প্রসঙ্গে কোমি বলেন, ব্যাপারটা কতটা ভণ্ডামি, শুধু নামটা বদলে দিলেই তা পরিষ্কার হয়।

প্রায় দুই বছর তদন্তের পর গত সপ্তাহে বিশেষ কৌঁসুলি রবার্ট ম্যুলার যে প্রতিবেদন পেশ করেছেন, অ্যাটর্নি জেনারেল উইলিয়াম বার কংগ্রেসের কাছে এক চিঠিতে তার সারসংক্ষেপ দিয়েছেন। এতে তিনি বলেছেন, রাশিয়ার সঙ্গে ট্রাম্প ক্যাম্পেইনের আঁতাতের কোনো প্রমাণ নেই। ট্রাম্প বিচারপ্রক্রিয়ায় বাধা দিয়েছেন, সেটাও পরিষ্কার নয়।

বিরোধী ডেমোক্র্যাটরা এই প্রতিবেদন অবিকৃত অবস্থায় অবমুক্ত করার দাবি তুলেছেন। প্রতিনিধি পরিষদের বিচার বিভাগীয় কমিটি আগামী ২ এপ্রিলের মধ্যে এই প্রতিবেদন তাদের কাছে পৌঁছানোর দাবি জানিয়ে উইলিয়াম বারের কাছে চিঠি লিখেছে।

শুধু এই প্রতিবেদন নয়, ম্যুলার তাঁর তদন্তকালে যে প্রমাণ সংগ্রহ করেছেন, ডেমোক্র্যাটরা সেগুলোও দেখতে চান। এ ব্যাপারে উলিয়াম বার কোনো সুনির্দিষ্ট অঙ্গীকার করেননি।

কমিটির প্রধান জেরি ন্যাডলার গতকাল সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, এ বিষয়ে অ্যাটর্নি জেনারেলের সঙ্গে তাঁর কথা হয়েছে। কিন্তু তিনি কোনো স্পষ্ট প্রতিশ্রুতি দিতে নারাজ।

ন্যাডলার বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন।’

ন্যাডলার জানান, প্রয়োজন হলে তাঁর কমিটি এ জন্য সমন জারি করতে প্রস্তুত।