ঋণ খেলাপির সংস্কৃতি থেকে আমরা বেরিয়ে আসতে চাই : অর্থমন্ত্রী

SHARE

দেশের সরকারি-বেসরকারি ব্যাংকগুলোর সুদের হার একক ডিজিটে অর্থাৎ শতকরা ৯ ভাগে নামিয়ে আনতে সরকার বদ্ধপরিকর বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। তিনি বলেছেন, এরই মধ্যে ২১টি ব্যাংক একক ডিজিটে নামিয়ে এনেছে, বাকি ব্যাংকগুলোও শিগগিরই একক ডিজিটে নামিয়ে আনবে বলে জানান মন্ত্রী। একই সঙ্গে এই ক্লাসিফাইড ঋণের পরিমাণ আর বাড়বে না বলে ঘোষণার কথাও স্মরণ করে দেন মন্ত্রী।

আজ রবিবার রাতে ডেপুটি স্পিকার মো. ফজলে রাব্বী মিয়ার সভাপতিত্বে সংসদ অধিবেশনে বিরোধী দলীয় প্রধান হুইপ মশিউর রহমান রাঙ্গার জাতীয় সংসদের কার্যপ্রণালী বিধির ৭১বিধিতে আনীত নোটিশের জবাবে মন্ত্রী একথা বলেন। ৭১বিধিতে আনা নোটিশে মশিউর রহমান রাঙ্গা বলেন, সরকারের নির্দেশনা থাকা সত্ত্বেও দেশের ব্যাংকসমূহ ঋণের সুদের হার এখনও এক অংকের ঘরে নেমে আসেনি। এবিষয়ে সরকারের গৃহীত পদক্ষেপের কথা জানতে চান তিনি।

জবাবে মন্ত্রী বলেন, বক্তব্যটি পুরাপুরি সত্য না হলেও আংশিক সত্য। আমরা সবাই জানি ব্যাংক ঋণে অব্যবসা বান্ধব অতিরিক্ত সুদ হার ধার্য্য করা হলে দেশের অর্থনীতি সাবলিলভাবে এগিয়ে যেতে পারে না। ব্যবসা বাণিজ্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়, বাধাপ্রাপ্ত হয় আমাদের কর্মসংস্থান। সামষ্টিক অর্থনীতিতে নেতিবাচক অবস্থার সৃষ্টি হয়। বিষয়টি অনুধাবন করে দেশের ব্যবসায়ী সমাজ অবস্থাটি ব্যাখা করার জন্য ২০১৮ সালে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন। প্রধানমন্ত্রী বিষয়টির গুরুত্ব অনুধাবন করে সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে আলাপ করে ব্যাংক ঋণের সুদের হার এক অংকের ঘরে নামিয়ে আনার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক এবং অর্থ মন্ত্রণালয়কে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করেন। সেই নির্দেশনার ফলশ্রুতিতে এরইমধ্যে দেশের ২১টি ব্যাংক ঋণের ওপর সুদ হার এক অংকের ঘরে তথা শতকরা ৯ ভাগে নামিয়ে এনেছে। এবিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক অন্য সকল ব্যাংকগুলোর সঙ্গে আলাপ আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। আশা করা যাচ্ছে বাকি ব্যাংকগুলোও প্রদত্ত ঋণের সুদ হার এক অংকের ঘরে নামিয়ে আনতে সক্ষম হবে। বিষয়টি নিয়ে আামি নিজেও এরই মাঝে সংশ্লিষ্টদের অর্থাৎ সরকারি কর্মকর্তা সরকারি বেসরকারি ব্যাংকসমূহের মালিক এবং ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কয়েক দফা কথা বলে তাদের ইতিবাচক মনোভাবের কথা জেনেছি।

মন্ত্রী বলেন, ব্যাংক ঋণে উচ্চ হারে সুদ আমাদের অর্থনীদিতে দীর্ঘকাল ধরে একটি নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে আসছে। ব্যাংক ঋণের সুদের হার একটি গ্রহণযোগ্য এবং ব্যবসাবান্ধব পর্যায়ে নিয়ে আসার জন্য আমাদের সরকার বদ্ধপরিকর। সংশ্লিষ্ট সকলের কাছে উইন উইন ফ্যাক্টের হাত ধরে অল্প সময়ের মধ্যে আলোচন্য বিষয়ে সমধান পাব। তিনি আরো বলেন, আমরা ব্যবসা বান্ধব একটি সরকার। আমরা ব্যবসায়ীদের বিপক্ষে না। ব্যবসায়ীরা যদি ব্যবসা না করতে পারে, আমাদের কর্মসংস্থান কোথা থেকে আসবে? দারিদ্র বিমোচন কিভাবে হবে? সেই কাজগুলে করার জন্য তাদের (ব্যাংক মালিকদের) সঙ্গে বার বার বসছি। আমি আশস্ত করছি অতি শিগগিরিই এর ফলপ্রসু অবস্থা দেখতে পাবেন। ঋণ খেলাপির সংস্কৃতি থেকে আমরা বেরিয়ে আসতে পারবো।