যুক্তরাষ্ট্রের হুমকির মুখে বড় সামরিক মহড়া ভেনেজুয়েলার

SHARE

যুক্তরাষ্ট্রের ক্রমাগত হুমকির মুখে স্মরণকালের সবচেয়ে বড় সামরিক মহড়া শুরু করেছে ভেনেজুয়েলা। ১০ ফেব্রুয়ারি, রবিবার এর উদ্বোধন করে, ওয়াশিংটনের কবল থেকে দেশকে রক্ষা করতে সেনাবাহিনীকে প্রস্তুত থাকতে নির্দেশ দেন দেশটির প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো।

তবে দুর্নীতিবাজ স্বৈরশাসকদের কবল থেকে ভেনেজুয়েলাকে রক্ষা করতেই ওয়াশিংটন, কারাকাসের পাশে রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিরোধীনেতা হুয়ান গুয়াইদো। এরমধ্যেই জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে, ভেনেজুয়েলা ইস্যুতে পাল্টাপাল্টি খসড়া প্রস্তাব উপস্থাপন করেছে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া।

পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী রবিবার থেকে ভেনেজুয়েলার মিরিন্ডায় শুরু হয়েছে সামরিক মহড়া। দেশটির সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, এটিই দেশটির দুইশ’ বছরের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় মহড়া। এতে অংশ নিচ্ছে সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর কয়েক হাজার সদস্য। প্রদর্শন করা হচ্ছে অস্ত্রসহ নানা যুদ্ধ সরঞ্জাম। মহড়ায় যোগ দিয়ে ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো, দেশের স্বাধীনতা রক্ষায় করণীয় নিয়ে সেনা সদস্যদের বিভিন্ন নির্দেশনা দেন। অভিযোগ করেন, অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করতে নানা অজুহাত খুঁজছে যুক্তরাষ্ট্র।

ভেনেজুয়েলা প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো বলেন, আমরা শান্তিপ্রিয় জাতি। কিন্তু তাই বলে ডোনাল্ড ট্রাম্পের কোনো অগ্রাসন নীরবে সহ্য করবো না। তিনি হয়তো ভুলে গেছেন, স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব এবং সম্মান রক্ষায় আমাদের একটি শক্তিশালী সামরিক বাহিনী আছে। এই মহড়ার মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রকে সতর্ক করতে চাই, ভেনেজুয়েলা যেকোন হুমকি মোকাবিলায় পুরোপুরি প্রস্তুত।

তবে ভেনেজুয়েলা ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকাণ্ডের জোর সমর্থন করেছেন দেশটির বিরোধীনেতা হুয়ান গুয়াইদো। রাশিয়ার সম্প্রচারকারী সংস্থা আরটিকে দেওয়া এক সাক্ষাতকারে তিনি দাবি করেন, দুর্নীতিবাজ স্বৈরশাসকদের কবল থেকে ভেনেজুয়েলাকে রক্ষা করতেই ওয়াশিংটন কারাকাসকে নানা সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে। এর আগে রাজধানী কারাকাসে সমর্থকদের উদ্দেশ্যে দেওয়া বক্তব্যে গুয়াইদো বলেন, অভ্যন্তরীণ এবং আন্তর্জাতিক আহ্বান উপেক্ষা করে, প্রেসিডেন্টের পদ দখল করে আছেন মাদুরো।

ভেনেজুয়েলার বিরোধীনেতা হুয়ান গুয়াইদো বলেন, ফ্রান্স, জার্মানি, ডেনমার্ক, অষ্ট্রেলিয়াসহ অন্তত ৬০টি দেশ ইতোমধ্যে আমাকে সমর্থন জানিয়েছে। আশা করছি, বাকি দেশগুলোও ভেনেজুয়েলার সাধারণ মানুষদের প্রতি সমর্থন জানাবে। কিন্তু তারপরও মাদুরো ক্ষমতা আঁকড়ে রেখেছেন। সংবিধান, গণতন্ত্র, মানুষের মতামত- সবকিছুই অবজ্ঞা করছেন তিনি।

দুই নেতার এমন বাকযুদ্ধের মধ্যেই জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে, ভেনেজুয়েলা ইস্যুতে পাল্টাপাল্টি খসড়া প্রস্তাব উপস্থাপন করেছে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া। যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবে ভেনেজুয়েলায় আন্তর্জাতিক সহযোগিতা প্রবেশের আহ্বানের পাশাপাশি দেশটিতে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন আয়োজনের কথা বলা হয়। অন্যদিকে প্রেসিডেন্ট মাদুরোকে সমর্থনকারী দেশ রাশিয়া, ভেনেজুয়েলার অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপের চেষ্টার নিন্দা জানিয়ে দেশটির অখণ্ডতা ও রাজনৈতিক স্বাধীনতা নিয়ে উদ্বেগ জানায়।