দেশে প্রথম বিদেশির কিডনি প্রতিস্থাপন

SHARE

‘অ্যানুয়াল গ্লোবাল রিটায়ারমেন্ট ইনডেক্সের তালিকায় স্বাস্থ্যসেবায় ২০১৭ সাল পর্যন্ত পর পর তিনবার বিশ্বের শীর্ষস্থানটি ছিল মালয়েশিয়ার। চলতি বছরও দেশটি পঞ্চমে রয়েছে। সেই মালয়েশিয়ার এক কিডনি রোগী নিজ দেশ ছেড়ে কিডনি প্রতিস্থাপন করতে স্বামীর সঙ্গে আসেন বাংলাদেশে। অবশেষে সফল প্রতিস্থাপন শেষে আবার তিনি হাসিমুখে পাড়ি জমিয়েছেন নিজ দেশে। তাঁর কিডনি প্রতিস্থাপিত হয় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে।

বাংলাদেশ থেকে যাওয়ার আগে গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে ওই রোগী রোজ লায়লা বিনতে মোহাম্মদ কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘এখানকার চিকিৎসায় আমি খুবই খুশি। দ্রুত সময়ে নিরাপদে আমি নতুন জীবন ফিরে পেলাম। এ জন্য বাংলাদেশের চিকিৎসকদের ধন্যবাদ।’

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) কিডনি ট্রান্সপ্লান্ট ইউনিটের অধ্যাপক ডা. হাবিবুর রহমান কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘বাংলাদেশে বিদেশি নাগরিকের কিডনি প্রতিস্থাপনের ঘটনা এটাই প্রথম। রোগীর অবস্থা খুবই খারাপ ছিল। সেখান থেকে দ্রুত সময়ের মধ্যে আমরা পুরো প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে সফলভাবে কিডনি প্রতিস্থাপনের পর রোগী তাঁর নিজ দেশে ফিরে যাচ্ছেন—এটা আমাদের জন্য খুবই বড় একটা বিষয়।’

বিএসএমএমইউয়ের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আব্দুল্লাহ আল হারুন কালের কণ্ঠকে বলেন, সব রকম বিধি-বিধান অনুসরণ করে মালয়েশিয়ার নগরিক রোজ লায়লার কিডনি প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। রোজের স্বামী বাংলাদেশের নাগরিক সালাউদ্দিন আহম্মেদ। তিনি বলেন, ‘১২ বছর ধরে মালয়েশিয়ায় বসবাস করছি। সেখানে সে দেশের সহকর্মী রোজকে বিয়ে করি। বিয়ের কিছুদিন পরেই জানা যায় তাঁর দুটি কিডনিই বিকল। এর পরই কিডনি প্রতিস্থাপনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। মালয়েশিয়ায় সে দেশের নাগরিকদের জন্য সরকারি হাসপাতালে কিডনি প্রতিস্থাপন সম্পূর্ণ নিখরচায় হলেও সিরিয়াল হয় অনেক লম্বা। এমনকি দু-তিন বছরেও সুযোগ পাওয়া যায় না।’

চাঁদপুরের স্থায়ী বাসিন্দা সালাউদ্দিন আরো বলেন, ‘স্ত্রীসহ আমরা সিদ্ধান্ত নিই বাংলাদেশে এসে কিডনি প্রতিস্থাপনের। অন্যদিকে স্ত্রীর বড় বোন রোহানি বিনতে মোহাম্মদ তাঁর একটি কিডনি ছোট বোনকে দেওয়ার আগ্রহ দেখান। পরে আমরা বাংলাদেশে এসে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে কিডনি প্রতিস্থাপন প্রক্রিয়া শুরু করি। এ হাসপাতালের নেফ্রোলজি ও ইউরোলজি বিভাগের সমন্বয়ে এসব প্রক্রিয়া ও চিকিৎসার মাধ্যমে গত ৫ জানুয়ারি লায়লার শরীরে তার বোন রোহানির দেওয়া একটি কিডনি প্রতিস্থাপন সম্পন্ন হয়। আজ (গতকাল) এই হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র নিয়ে রওনা হচ্ছি মালয়েশিয়া।’