তবুও নৈরাজ্য এসএসসির প্রথম দিনেই

SHARE

গতকাল শনিবার শুরু হওয়া এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগ না থাকলেও কিছু কেন্দ্রে অব্যবস্থাপনার মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে পরীক্ষা। বিশেষ করে বেশ কিছু কেন্দ্রে পুরনো সিলেবাসে নেওয়া হয়েছে পরীক্ষা। খোদ রাজধানীতেই ঘটেছে এমন ঘটনা। আবার পরীক্ষার কক্ষে পরীক্ষার্থীরা বসে থাকলেও সময়মতো পৌঁছেনি প্রশ্নপত্র। অন্যদিকে পরীক্ষা শুরুর দেড় ঘণ্টার মধ্যে প্রশ্নপত্র ফেসবুকের একটি গ্রুপের কাছে চলে আসার অভিযোগও পাওয়া গেছে। সব মিলিয়ে কিছু কেন্দ্রে শিক্ষার্থী-অভিভাবকদের ক্ষোভের পাশাপাশি জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বাসভবন ঘেরাওয়ের ঘটনাও ঘটেছে।

তবে গতকাল সকালে রাজধানীর বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে কেন্দ্র পরিদর্শন শেষে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘সারা দেশে সুষ্ঠুভাবে পরীক্ষা আয়োজনে তীক্ষ্ম গোয়েন্দা নজরদারি বসানো হয়েছে। তাই কোনোভাবে প্রশ্ন ফাঁস সম্ভব নয়। পরীক্ষা শুরুর ২৫ মিনিট আগে প্রশ্নের প্যাকেট খোলা হয়েছে। আগের চেয়ে এবার আমরা আরো কঠোর অবস্থানে রয়েছি। তাই প্রশ্ন ফাঁস বা গুজব ছড়ালে তারা আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে ধরা পড়বে। কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।’

জানতে চাইলে গত রাতে আন্ত শিক্ষা বোর্ড সমন্বয় সাবকমিটির সভাপতি ও ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর মু. জিয়াউল হক কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘বাংলা প্রথম পত্রের তিনটি সিলেবাস রয়েছে। তিন ধরনের পরীক্ষার্থীরা এবার অংশ নিচ্ছে। তবে সাড়ে তিন হাজার কেন্দ্রের মধ্যে পাঁচ-সাতটা কেন্দ্রের কয়েকটি কক্ষে পুরনো সিলেবাসে পরীক্ষা গ্রহণের খবর আমরা পেয়েছি। পরীক্ষা গ্রহণের দায়িত্ব স্থানীয় প্রশাসনের। তারা প্রাথমিকভাবে বিষয়টির তদন্ত করবে। তাদের প্রতিবেদনের পর আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করব। শিক্ষার্থীরা যাতে কোনো রকম ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সে বিষয়টা আমরা দেখব।’

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, এবারের এসএসসি পরীক্ষা শিক্ষামন্ত্রী ও উপমন্ত্রীর জন্যও পরীক্ষা বলে জানিয়েছিলেন তাঁরা। কারণ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ও উপমন্ত্রী দুজনই নতুন। তাঁরা প্রায় এক মাস ধরে দায়িত্ব পালন করলেও শিক্ষা প্রশাসনের অন্য কোনো পদে তাঁরা এখন পর্যন্ত কোনো পরিবর্তন আনেননি।

জানা যায়, রাজধানীর শহীদ পুলিশ স্মৃতি কলেজেই নেওয়া হয় পুরনো সিলেবাসে পরীক্ষা। তবে পরীক্ষার্থীরা এই প্রশ্ন পেয়ে ক্ষোভ জানালেও ওই প্রশ্নেই পরীক্ষা দিতে বলেন শিক্ষকরা। কিছুক্ষণ পরে অবশ্য পুরনো সিলেবাসের প্রশ্ন বদলে দিয়ে নতুন সিলেবাসে পরীক্ষা নেওয়া হয়।

গতকালের পরীক্ষা চলাকালেই বহুনির্বাচনী (এমসিকিউ) প্রশ্ন এবং সৃজনশীল অংশের প্রশ্ন ফেসবুকে পাওয়ার অভিযোগ উঠেছে। ফেসবুকের

‘ssc all board question out 2019-v100%’ নামের একটি পেজে গতকাল সকাল ১০টা ৩৮ মিনিটে বহুনির্বাচনী প্রশ্ন পোস্ট করা হয়। এই পোস্টগুলো ছিল বেশ ঝাপসা। অন্যদিকে সকাল ১১টা ৩০ মিনিটে পরীক্ষাটির সৃজনশীল প্রশ্নের ৩ নম্বর সেটের প্রশ্ন পোস্ট করা হয়। বহুনির্বাচনী প্রশ্নের সঙ্গে আসল প্রশ্নের মিল পাওয়া না গেলেও সৃজনশীল প্রশ্নের হুবহু মিল পাওয়া যায়।

এ ব্যাপারে ঢাকা বোর্ডের চেয়ারম্যান বলেন, ‘নিয়ম আছে, কোনো পরীক্ষার্থী অংশ নেওয়ার এক ঘণ্টা পরে চাইলে বের হয়ে যেতে পারে। এরপর কেউ প্রশ্নের ছবি তুলে দিয়ে থাকতে পারে। তবে আমরা একটা নির্দেশনা দেব, কেউ এক ঘণ্টা পরীক্ষায় অংশ নিয়ে যদি বের হয়ে যেতে চায় তাহলে তাকে প্রশ্ন কেন্দ্রে জমা রেখে আসতে হবে।’

চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের ৯টি কেন্দ্রে ভুল প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এসব কেন্দ্রে ২০১৮ সালের সিলেবাস অনুসারে প্রণীত প্রশ্নে ২০১৯ সালের পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষা গ্রহণ করা হয়েছে। ‘কেন্দ্রসচিবদের ভুলে’ এই ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছে চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ড। এ ঘটনায় তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানিয়েছে বোর্ড কর্তৃপক্ষ।

প্রথম দিনের পরীক্ষায় যে সাতটি কেন্দ্রে এই ভুলের ঘটনা ঘটেছে সেগুলো হলো চট্টগ্রাম নগরীর মিউনিসিপ্যাল মডেল হাই স্কুল, পতেঙ্গা বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়, হালিশহরের খাজা গরীবে নেওয়াজ উচ্চ বিদ্যালয় ও ডা. খাস্তগীর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় এবং কক্সবাজারে পেকুয়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, উখিয়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, পালং আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়, পটিয়ার আবদুর রহমান সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও খলিলুর রহমান বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়।

চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মাহবুব হাসান বলেন, একেকটি কেন্দ্রে ১০-১২ জন করে পরীক্ষার্থী এই ভুলের শিকার হয়েছে। আর এ ঘটনায় ওই কেন্দ্রের কেন্দ্রসচিবদের শোকজ করা হয়েছে। শোকজের জবাব পেলে তাঁদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

মুন্সীগঞ্জ সদরের এভিজেএম সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে পুরনো সিলেবাসে পরীক্ষা নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এই কেন্দ্রে কেকে গভ. ইনস্টিটিউশন, মুন্সীগঞ্জ উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় ও রামপাল এনবিএম উচ্চ বিদ্যালয়ের ৭৯ জন পরীক্ষার্থী পুরনো সিলেবাসের প্রশ্নপত্র দিয়ে পরীক্ষা দিয়েছে। পরীক্ষা শেষে ক্ষুব্ধ হয়ে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা জেলা প্রশাসকের বাসভবন ঘেরাও করে। পরে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) এইচ এম রকীব হায়দার ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করেন।

কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ায় পাকুন্দিয়া সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় পরীক্ষা কেন্দ্রে পুরনো সিলেবাসের প্রশ্নে পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে। এই কেন্দ্রে ১২০ জন পরীক্ষার্থী অংশ নেয়। সকাল ১০টার দিকে যথারীতি নৈর্ব্যক্তিক পরীক্ষার প্রশ্নপত্র বিতরণ করে পরীক্ষা নেয় কর্তৃপক্ষ। এতে তেমন কোনো প্রশ্নই কমন পড়েনি পরীক্ষার্থীদের। পরে তারা দেখতে পায়, ২০১৮ সালের সিলেবাস অনুযায়ী প্রণীত নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্নপত্র দিয়ে পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে। পরীক্ষা শেষে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা ইউএনওর বাসার সামনে অবস্থান নেয়।

কিশোরগঞ্জের বাজিতপুর হাফেজ আব্দুর রাজ্জাক পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয় পরীক্ষা কেন্দ্রে পুরনো সিলেবাসে পরীক্ষা গ্রহণের ঘটনা ঘটেছে। তবে আধাঘণ্টা পর তাদের ২০১৯ সালের প্রশ্ন দেওয়া হয়। দায়িত্বে গাফিলতি ও ভয়াবহ অনিয়মের অভিযোগে কেন্দ্রসচিব ও হাফেজ আব্দুর রাজ্জাক পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শরীফুল ইসলামকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

শেরপুরের শ্রীবরদীতে এমএনবিপি সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের পরীক্ষা কেন্দ্রে পুরনো সিলেবাসে পরীক্ষা নেওয়া হয়। পরীক্ষা শুরুর প্রায় এক ঘণ্টা পর তারা দেখতে পায়, তাদের প্রশ্নপত্র ২০১৮ সালের সিলেবাস অনুযায়ী। এতে বিপাকে পড়ে পরীক্ষার্থীরা। পরে কর্তৃপক্ষ ২০১৮ সালের প্রশ্নপত্র ও খাতা ফেরত নিয়ে ২০১৯ সালের প্রশ্নপত্র ফটোকপি করে প্রায় এক ঘণ্টা পর পরীক্ষার্থীদের হাতে দেয়। এ জন্য পরীক্ষার্থীদের সময় বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। একই পরিস্থিতির শিকার হয় উপজেলার টেংগড়পাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের পরীক্ষা কেন্দ্রে।

পঞ্চগড়ের দুই উপজেলার দুটি কেন্দ্রে শুরুতে পুরনো সিলেবাসের প্রশ্ন সরবরাহ করার অভিযোগ উঠেছে। প্রশ্ন দেওয়ার প্রায় ১৫ মিনিট পর তাদের সঠিক প্রশ্নপত্র সরবরাহ করা হয়। এতে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। এ ঘটনায় প্রশাসন তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।

কুমিল্লার দেবীদ্বারে দুয়ারিয়া এজি মডেল একাডেমি স্কুল অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্রে পরীক্ষা শুরু হওয়ার ৪৫ মিনিট পর প্রশ্নপত্র হাতে পেয়েছে একটি কেন্দ্রের শিক্ষার্থীরা। ঘটনাটি ঘটে কুমিল্লার দেবীদ্বার উপজেলায়। ওই ঘটনায় দায়িত্বে অবহেলার কারণে কেন্দ্রসচিবকে তাত্ক্ষণিক প্রত্যাহার করা হয়েছে।

ওই কেন্দ্রে ৪ নম্বর প্রশ্নপত্রের প্যাকেট খুঁজে পাননি শিক্ষকরা। অথচ ওই প্যাকেটের প্রশ্নেই পরীক্ষা নেওয়ার জন্য এসএমএস আসে। পরে জেলা থেকে আসা পরিদর্শন টিমের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শামিম আরাকে সঙ্গে নিয়ে উপজেলার ৯টি পরীক্ষাকেন্দ্রের সাতটি কেন্দ্র থেকে অতিরিক্ত প্রশ্নপত্র এনে ৪৫ মিনিট পর শিক্ষার্থীদের হাতে ৪ নম্বর সেটের প্রশ্নপত্র সরবরাহ করেন।

গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলার ফকিরহাট উচ্চ বিদ্যালয় পরীক্ষা কেন্দ্রে ২০১৮ সালের পুরনো সিলেবাসের প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা গ্রহণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ১১০ জন পরীক্ষার্থী পুরনো প্রশ্নপত্র অনুসরণে পরীক্ষা দিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছে।

সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের পরীক্ষাকেন্দ্রের একটি হলরুমে দায়িত্বরত শিক্ষক পরীক্ষার্থীদের নির্ধারিত সময়ের চেয়ে ২৫ থেকে ৩০ মিনিট দেরিতে প্রশ্নপত্র দিয়েছেন। বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে পরীক্ষা শেষে মৌখিকভাবে জানিয়েছে শিক্ষার্থীরা।

প্রশ্নপত্রের প্যাকেট খোলার এসএমএস দেরিতে আসায় রাজবাড়ীতে বিভিন্ন কেন্দ্রের পরীক্ষা দেরিতে শুরু হয়েছে। রাজবাড়ী জেলা শহরের ইয়াছিন উচ্চ বিদ্যালয়ে এসএমএস দেরিতে আসা এবং সৃজনশীল ২৬টি প্রশ্নপত্র কম পড়ায় নির্ধারিত সমেয়ের চেয়ে ৩৫ মিনিট পরে পরীক্ষা শুরু করা হয়। এ ছাড়া রাজবাড়ী সরকারি উচ্চ ও বালিকা বিদ্যালয়ে পাঁচ থেকে আট মিনিট পরে পরীক্ষা শুরু হয়।

হবিগঞ্জের বানিয়াচং উপজেলার বালিকা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে পরীক্ষার্থীদের মাঝে প্রশ্নপত্র বিতরণে বিলম্ব হয়েছে। এতে উত্তেজনা দেখা দিলে কেন্দ্রসচিব ও দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়। সকাল ১০টায় তাদের পরীক্ষা শুরুর প্রথমেই বহুনির্বাচনী প্রশ্ন বিলি করা হয়। এতে সময় নির্ধারিত ছিল ৩০ মিনিট। ৩০ মিনিটের মধ্যে পরীক্ষার্থীরা উত্তরপত্র জমা দেয়। কিন্তু পরবর্তী সময়ে সৃজনশীল প্রশ্নপত্র সাড়ে ১০টায় দেওয়ার কথা থাকলেও তা দেওয়া হয় ১০টা ৪৫ মিনিটে।

এসএসসি পরীক্ষার প্রথম দিনে গতকাল বাংলা (আবশ্যিক) প্রথম পত্র পরীক্ষায় জামালপুরের দুটি কেন্দ্রে পুরনো ও নতুন সিলেবাসের প্রশ্নপত্র বিতরণ করে পরীক্ষা নিয়ে তালগোল পাকানোর ঘটনা ঘটেছে। এতে পরীক্ষা খারাপ হওয়ায় পরীক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করে উত্তরপত্র সঠিকভাবে মূল্যায়নের দাবি জানিয়েছে। ওই তিনটি কেন্দ্রের ৪০২ জন পরীক্ষার্থীর পাস করা নিয়ে শঙ্কার সৃষ্টি হয়েছে। এ ছাড়া একটি কেন্দ্রে কম পরা প্রশ্নপত্র অন্য কেন্দ্র থেকে সংগ্রহ করে পরীক্ষা নেওয়ার ঘটনাও ঘটেছে।

জামালপুর সদর উপজেলার বাংলাদেশ উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে পুরনো সিলেবাসের নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্নপত্র বিতরণ করা হয়। উত্তরপত্রের ওএমআর শিটে বৃত্ত ভরাট করার সময় বিষয়টি কয়েকজন পরীক্ষার্থীর নজরে আসে। ততক্ষণে কক্ষগুলোতে পুরনো সিলেবাসের সৃজনশীল প্রশ্নপত্রও বিতরণ করা হয়। কেউ কেউ বেশ কয়েকটি করে উত্তর লেখা শেষও করে। এ সময় কেউ কেউ নতুন সিলেবাসের প্রশ্নপত্র চাইলে তখন সবার কাছ থেকে পুরনো সিলেবাসের প্রশ্নপত্র জমা নিয়ে নতুন সিলেবাসের প্রশ্নপত্র বিতরণ করা হয়। এ নিয়ে কক্ষগুলোতে তালগোল পাকিয়ে যায়। সকাল ১টায় পরীক্ষা শেষে হয়রানির শিকার পরীক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ে মাঠে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। তাদের সঙ্গে যোগ দেন অভিভাবকরাও। তারা কেন্দ্রসচিবের কক্ষ ঘেরাও করে তাদের এই পরীক্ষায় যাতে কেউ ফেল না করে সেই ব্যবস্থার দাবি জানায়।

জামালপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফরিদা ইয়াসমিন এ প্রসঙ্গে কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘বাংলাদেশ উচ্চ বিদ্যালয় ও তুলসীপুর উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে পুরনো সিলেবাসের প্রশ্ন দিয়ে পরীক্ষা গ্রহণ করে কেন্দ্রসচিব তাঁদের দায়িত্বে অবহেলার পরিচয় দিয়েছেন। তাঁদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বিষয়টি বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রককে অবহিত করা হয়েছে। ওই দুই কেন্দ্রের ২০২ জন পরীক্ষার্থীর রোল নম্বরসহ কেন্দ্রসচিবের কাছে তালিকা চাওয়া হয়েছে বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের কাছে পাঠানোর জন্য। বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ওই পরীক্ষার্থীদের উত্তরপত্র মূল্যায়নের বিশেষ পদক্ষেপ নেবেন বলে আমাকে জানিয়েছেন।’