ভারতে ধর্ষিত তিন নাবালিকা গর্ভবতী, চাঞ্চল্য

SHARE

ভারতের বিহার রাজ্যের কাটিহার জেলায় অন্তত তিনজন নাবালিকা স্কুলছাত্রী দিনের পর দিন যৌন নির্যাতিত হয়ে  গর্ভবতী হয়ে পড়েছে। ওই সব নাবালিকার পরিবার দু-আড়াই মাস আগে এই ঘটনাগুলোর এফআইআর করা সত্ত্বেও অভিযুক্তদের মধ্যে মাত্র একজনকে পুলিশ এ পর্যন্ত গ্রেফতার করতে পেরেছে।image_109051_0

এই ঘটনা সামনে আসার পর বিহারের মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, অভিযুক্তদের শাস্তি দিতে তিনি চাইবেন ধর্ষিতাদের সঙ্গেই তাদের বিয়ে দেয়া হোক।

ভারতে উন্নয়ন আর নারীদের নিরাপত্তায় সবচেয়ে পিছিয়ে থাকা রাজ্যগুলোর একটি হলো বিহার। কাটিহার জেলার তিনটি পরিবার পুলিশের কাছে অভিযোগ করেছে, তাদের মেয়েরা যখন স্কুলে যেত তখন পথে বা এমনকি স্কুল চত্বরের ভেতরেই দিনের পর দিন তাদের ধর্ষণ করেছে একদল প্রভাবশালী লোক।

তিনটি মেয়েই গর্ভবতী হয়ে পড়েছে, তাদের স্কুলে যাওয়াও বন্ধ হয়ে গেছে। তবে অভিযুক্তদের মধ্যে একজন ছাড়া পুলিশ কাউকেই গ্রেফতার করতে পারেনি।

বিহার পুলিশের অতিরিক্ত মহাপরিচালক গুপ্তেশ্বর পান্ডে জানিয়েছেন, ধর্ষিতারা প্রত্যেকেই নাবালিকা, তবে ধর্ষণকারীরা প্রাপ্তবয়স্ক।

গুপ্তেশ্বর পান্ডে  বলেন, “প্রতিটি ঘটনায় আলাদা মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু হয়েছে। অভিযুক্তদের একজন গ্রেফতার হলেও দুজন এখনো ফেরার। কাটিহারের পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে, দুই সপ্তাহের মধ্যে তদন্ত শেষ করে দোষীদের গ্রেফতার ও দ্রুত বিচার নিশ্চিত করতে হবে।”

পুলিশ এখন নড়েচড়ে বসলেও গত দু-আড়াই মাস ধরে তারা একেবারেই হাত গুটিয়ে বসে ছিল বলে অভিযোগ করেছে নির্যাতিতাদের পরিবার।

তিনটি ধর্ষিতা মেয়ের একজনের চাচা শেখ লালকার বিবিসিকে বলেন, “আমার ভাতিজা পাহাড়পুরে যে সেকেন্ডারি স্কুলে পড়ত, তার প্রধান শিক্ষক ওয়াসিম রাজার ভাই-ই স্কুল ছুটির পর ক্যাম্পাসের ভেতর তাকে দিনের পর দিন ভয় দেখিয়ে ধর্ষণ করেছে।”

‘সেপ্টেম্বর মাসে ও গর্ভবতী হয়ে পড়লে আমরা সব জানতে পারি। যখন আমরা স্কুলে অভিযোগ জানাতে চাই, তখন প্রধান শিক্ষক পাল্টা হুমকি দিয়ে আমাদের বের করে দেন এবং স্কুল থেকে ওর নাম কেটে দেন।’

স্থানীয় একটি টেলিভিশন চ্যানেলে এই নাবালিকাদের দুরবস্থার কথা সামনে আসার পরই বিহারের রাজ্য সরকার এখন বিষয়টির দ্রুত প্রতিকারে সচেষ্ট হয়েছে।

ধর্ষিতাদের সঙ্গে ধর্ষণকারীদের বিয়ের উদ্যোগ
তবে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী জিতনরাম মানঝি এই চরম নির্যাতনের যে সমাধান বাতলেছেন, তা অবশ্য অনেককেই হতবাক করে দিয়েছে। মানঝি বলেন, ‘আমরা ওই মেয়েগুলোর সঙ্গে ও যারা তাদের সঙ্গে এই ঘটনা ঘটিয়েছে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে চেষ্টা করব তাদের আপসে বসিয়ে বিয়ে দিয়ে দেয়া যায় কি না।’

মুখ্যমন্ত্রী আরো বলেন, “যদি সেটা সম্ভব না হয়, তখন আইন মোতাবেক দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। আমরা ফাস্ট ট্র্যাক কোর্ট বসাব এবং ওই বাচ্চা মেয়েগুলোকে যেভাবে সম্ভব সাহায্য করব “

তবে সামাজিক ও রাজনৈতিক নানা মহল থেকে মুখ্যমন্ত্রীর এই প্রস্তাবের নিন্দা করা হয়।