চলচ্চিত্রেও অভিনয় করেছিলেন আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল

SHARE

আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল ঢাকাই চলচ্চিত্রে অজস্র শ্রুতিমধুর গান উপহার দিয়েছেন। কিন্তু অভিনয়? হ্যাঁ উনি একটি চলচ্চিত্রেও অভিনয় করেছেন। জীবদ্দশায় হাজার হাজার গান তৈরি করলেও ‘মাত্র একবার’ অভিনয় করেছেন আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল। চলচ্চিত্রের নাম ছিল ‘গুরু ভাই’। যেখানে নায়ক ছিলেন নিরব।

এই ছবিতে বুলবুলকে দেখা গিয়েছিলো খল চরিত্রে অর্থাৎ একজন শান্তশিষ্ঠ মুখোশধারী সন্ত্রাসী চরিত্রে যিনি কিনা সবসময় একটা ভায়োলিন বাজাতেন আর কথা বলতেন খুব কম।

গুণী এই মানুষ সম্পর্কে চিত্রনায়ক নিরব বলেন, তিনি ছিলেন অসম্ভব ভালো মনের একজন মানুষ। আমরা যখন একসাথে সিনেমায় কাজ করেছিলাম তখন তার মত এতবড় গুণী মানুষের সঙ্গে কথা বলার সাহস ছিলো না। কিন্তু যখন কথা বলতে গেলাম তখন আমি মুগ্ধ হয়ে গেলাম। এত বড়মাপের একটা মানুষ কিভাবে এতটা মিশুক হয়, কখনও দাম্ভিকতা ছিলো না ওনার মাঝে।

নিরব বলেন, বুলবুল ভাই নরম সুরে কথা বলতেন। আমি সেদিন প্রায় ৪০ মিনিট কথা বলেছিলাম ওনার সঙ্গে। কবিরা যখন কবিতা আবৃত্তি করে তখন তারা ছন্দ মাত্রা বজায় রেখে সেটা করে কিন্তু এই গুণী মানুষটার কথা মানেই যেন ছন্দ। বিশটা শব্দে যদি একটা লাইন লিখা হয়, আর সেটা যদি কবির কবিতা হয় তবে সেটাতে ছন্দ থাকে কিন্তু বুলবুল ভাইয়ের কথা মানেই যেন ছন্দ। আমরা কবিতা যেভাবে আবৃত্তি করি, উনি সেভাবেই কথা বলেন। তার কথার মধ্যেই ছন্দ থাকে। তার কথা বলার ধরনে আমি বিস্মিত হয়েছিলাম।

‘গুরু ভাই’ ছবিতে তিনি অভিনেতা হিসেবে কেমন ছিলেন, এ নিয়ে নিরব বলেন, আমার অভিনীত দ্বিতীয় সিনেমা ‘গুরু ভাই’ যেটা ২০০৯ সালে মুক্তি পেয়েছিলো। এই ছবিতে উনি খুব ভালো অভিনয় করেছিলেন। তার চরিত্র ছিল মূলত নাটের গুরু। সারাক্ষণ ভায়োলিন বাজান, আর কলকাঠি নাড়েন। খুব বেশি সংলাপ না থাকলেও চরিত্রটা ছিল খুব রাশভারী।

এই ছবির সবগুলো গান করেছিলেন বুলবুল ভাই। ছবি প্রযোজক সোহেল রানা ভাই (কুয়েত প্রবাসী) ও নির্মাতা এ কিউ খোকন চেয়েছিলেন বুলবুল ভাই অন্তত একবার অভিনয়ে আসুক। সেই জায়গা থেকে তিনি আমার এই সিনেমায় অভিনয় করেছিলেন। গাজীপুরের একটি শুটিং হাউজে আমাদের কাজ শুরু হয়েছিল।

এছাড়াও আমার ক্যারিয়ারে এখনও যে দুটো ছবির গানের কথা আমি সবাইকে বলতে পারি ‘ওগো চাঁদ’, ‘ঘুমাও ঘুমাও’ এই দুটো গানের পরিচালক এই বুলবুল ভাই। এ গানের কথা সুরগুলো এতো সহজ ছিল মনে হতো আমি যদি আমার কাছের মানুষকে ইমপ্রেস করার জন্য গান করতাম তাহলেই এই সুরই দিতাম। বুলবুল ভাইয়ের সাথে আমার ‘গুরু ভাই’ ছবির পর ভালো সখ্য গড়ে উঠেছিল। উনি মারা গেছেন শুনে সকালে আচমকা বুকের মধ্যে মোচড় দিয়ে উঠেছিল।