
বেঙ্গল স্টুডিও
বেঙ্গল মোশন পিকচার্স স্টুডিও লিমিটেড নামে ১৯৬৯ সালে টিকাটুলি এলাকার কেএম দাস লেনের রোজ গার্ডেনে প্রতিষ্ঠিত হয়। ৮ বিঘা জমির ওপর পুরোনো জমিদার বাড়ি, বিশাল পুকুর ও বাগান শোভিত এ স্টুডিওর অন্যতম উদ্যোক্তা ও প্রতিষ্ঠাতা বজলুর রহমান ১৯৭২ সালে এককভাবে মালিকানা গ্রহণ করেন। এ স্টুডিওতে প্রধানত শুটিং, ডাবিং ও সীমিত পরিসরে সম্পাদনার কাজ করা হতো। এখানে শতাধিক ছবি নির্মিত হয়। তবে এই স্টুডিওটি নব্বই দশকের শুরুতে বন্ধ হয়ে যায়।
বারী স্টুডিও
‘বারী স্টুডিও’ ঢাকার দ্বিতীয় বেসরকারি স্টুডিও। কাওরান বাজার ও ফার্মগেট এলাকার পূর্ব তেজতুরী বাজারে এটির অবস্থান ছিল। এর প্রতিষ্ঠাতা চলচ্চিত্র ব্যবসায়ী এমএ বারী। তিনি মগবাজার এলাকায় ষাটের দশকের প্রারম্ভে ইস্টার্ন থিয়েটার নামে একটি স্টুডিও স্থাপন করেন। ১৯৬৮ সালের দিকে সরকারি নির্দেশে এ স্টুডিও বন্ধ হয়ে গেলে ১৯৭০ সালে বারী স্টুডিও স্থাপন করেন। ষাট থেকে আশির দশক পর্যন্ত প্রায় ২০০ ছবির নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয় এখানে। পরবর্তীতে চলচ্চিত্র নির্মাণে ভাটা ও ব্যবসা পরিবর্তনের কারণে ১৯৯০ সালে বারী স্টুডিও বন্ধ করে দেওয়া হয়।
পপুলার স্টুডিও
এটি দেশের তৃতীয় বেসরকারি চলচ্চিত্র স্টুডিও। ঢাকার পাশের জেলা নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার পাগলা এলাকায় স্থাপিত হয়। এই স্টুডিওটির প্রতিষ্ঠাতা দেশের ৩ জন বিশিষ্ট অগ্রগামী চলচ্চিত্রকর্মী। আবদুল জব্বার খান, এ আউয়াল ও মোশাররফ হোসেন চৌধুরী ১৯৬৫ সালে স্টুডিওটি প্রতিষ্ঠা করেন। ১৬ বিঘা জমির ওপর বিরাট পুকুর, বাড়ি, বাগান, গাছ-গাছালি নিয়ে এ স্টুডিও ছিল বেশ দৃষ্টিনন্দন। এতে তখনকার অনেক ছবির শুটিং, এডিটিং ও সাদাকালো ছবির প্রসেসিং করা হতো। আশির দশকের শেষদিকে এটি বন্ধ হয়ে যায়।
ঢাকা স্টুডিও
ঢাকা স্টুডিও প্রতিষ্ঠা করেন চলচ্চিত্র প্রযোজক মালিক মাজিদ। এই চলচ্চিত্র স্টুডিওটি ষাটের দশকে ঢাকার তত্কালীন জিন্নাহ অ্যাভিনিউতে (বর্তমানে বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউ) প্রতিষ্ঠিত হয়। এই স্টুডিওতে শুটিং, ডাবিং ও সীমিত পরিসরে সম্পাদনার কাজ করা হতো। স্টুডিওটি এককালে চলচ্চিত্র কলাকুশলীদের বেশ পছন্দের ছিল। এখানে প্রায় ১শ’র মতো ছবি নির্মিত হয়। আশির দশকের শেষদিকে এটি বন্ধ করে দেয় মালিক পক্ষ।
টেকনিশিয়ান স্টুডিও
সত্তর দশকে রাজধানীর জিগাতলায় গড়ে ওঠে টেকনিশিয়ান স্টুডিও। চলচ্চিত্র পরিচালক ও প্রযোজক জয়নুদ্দিন আহমেদের হাতে এই চলচ্চিত্র স্টুডিওর জন্ম। এখানেও অনেক ছবি নির্মিত হয়েছে। তবে বর্তমানে এখানে শুধু লাইট ভাড়া দেওয়া হয়।
ঢাকায় বর্তমানে প্রায় ৩০টির মতো প্রাইভেট স্টুডিও রয়েছে। এরমধ্যে কলাবাগানে একটি প্রায় স্বয়ংসম্পূর্ণ স্টুডিও থাকলেও অন্যগুলোর কোনোটিই পূর্ণাঙ্গ ফিল্ম স্টুডিও নয়।