২৪আওয়ার রিপোর্ট : বিচারপতিদের অপসারণসংক্রান্ত সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেয়া রায় আপিল বিভাগ বহাল রাখায় হতাশা ব্যক্ত করেছে রাষ্ট্রপক্ষ। রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেছেন, এই রায় হতাশাজনক। সরকারের সঙ্গে আলোচনা করে রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ করার সিদ্ধান্ত নেবেন তারা।
বিচারপতি অপসারণ ক্ষমতা সংসদের হাতে নেয়া সংক্রান্ত সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণা করে সোমবার হাইকোর্টের দেয়া রায় বহাল রাখেন আপিল বিভাগ। এর প্রতিক্রিয়ায় অ্যাটর্নি জেনারেল সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।
মাহবুবে আলম বলেন, সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনীর মাধ্যমে বিচারপতিদের অপসারণ ক্ষমতা সংসদের হাতে ফিরছিল। কিন্তু এই রায়ের মধ্য দিয়ে তা বাতিল হলো।
তিনি বলেন, রায়ে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলও পুনর্বহাল হয়নি, এখন শূন্যতা বিরাজ করছে। আপিলের এ রায়ে আমরা হতাশ। সরকারের সঙ্গে আলোচনা করে রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউর সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
প্রসঙ্গত, দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর ২০১৪ সালে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের বিধানটি তুলে দিয়ে সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী পাস হয়। এতে ৯৬ অনুচ্ছেদে পরিবর্তন এনে বিচারকের অপসারণের ক্ষমতা সংসদের হাতে পুনরায় ফিরিয়ে দেয়া হয়, যা ১৯৭২ সালের সংবিধানেও ছিল।
সংবিধানে এই সংশোধনী হওয়ায় মৌল কাঠামোতে পরিবর্তন ও বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ক্ষুণ্ন করবে- এমন যুক্তিতে সংশোধনীর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ২০১৪ সালের ৫ নভেম্বর হাইকোর্টে একটি রিট দায়ের করা হয়।
রিটের ওপর প্রাথমিক শুনানি শেষে হাইকোর্ট ২০১৪ সালের ৯ নভেম্বর রুল জারি করেন। গত বছরের ৫ মে বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী, বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক ও বিচারপতি আশরাফুল কামালের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের বিশেষ বেঞ্চ সংখ্যাগরিষ্ঠ মতের ভিত্তিতে ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ বলে রায় ঘোষণা করেন।
একই বছরের ১১ আগস্ট সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণা করে দেয়া রায় সুপ্রিমকোর্টের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়। পরে এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ।
রাষ্ট্রপক্ষের করা আপিলের শুনানি শেষে সর্বোচ্চ আদালত আজ তা খারিজ করে দিয়ে হাইকোর্টের দেয়া রায় বহাল রাখলেন।
এর আগে গত ৩০ মে দশম দিনের আপিল শুনানিতে অ্যামিকাস কিউরিদের মতামত প্রদান শেষ হয়। মোট ১০ জন অ্যামিকাস কিউরি আদালতে মতামত দিয়েছেন। যার মধ্যে ৯ জনই ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের পক্ষে মতামত দেন।