আন্তররাজতিক ডেস্ক:
ম্যানচেস্টারের হামলার পর নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছেযুক্তরাজ্যের ম্যানচেস্টারের পপ কনসার্টে আত্মঘাতী হামলায় জড়িত সন্দেহে এখন পর্যন্ত চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বুধবার (২৪ মে) গ্রেটার ম্যানচেস্টার পুলিশ এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। এদিকে, ম্যানচেস্টার হামলার প্রেক্ষিতে ‘সংকটাপন্ন পরিস্থিতি’ বিবেচনায় সন্ত্রাসী সতর্কতাকে সর্বোচ্চ পর্যায়ে নিয়ে গেছে ব্রিটিশ সরকার। এর মানে হলো আরেকটি হামলা আসন্ন মনে করা হচ্ছে। আর তা মাথায় রেখে এরইমধ্যে নিরাপত্তা জোরদার করেছে ব্রিটেন। রাস্তায় রাস্তায় সেনা মোতায়েন করা হয়েছে।
২২ মে সোমবার রাত ১০টা ৩৫ মিনিটে মার্কিন সঙ্গীতশিল্পী আরিয়ানা গ্র্যান্ডের কনসার্টে চালানো ওই হামলায় নিহত হয়েছেন ২২ জন। ওই ঘটনায় আহত মানুষের সংখ্যা ৬৪ জন। এরমধ্যে ২০ জনের অবস্থা আশঙ্কা।বুধবার গ্রেটার ম্যানচেস্টার পুলিশ জানায়, এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত গ্রেফতার হওয়া চারজনের একজনকে মঙ্গলবার গ্রেফতার করা হয়েছে। আর বাকি তিনজন গ্রেফতার হয় বুধবার।
গ্রেটার ম্যানচেস্টার পুলিশের বিবৃতিতে বলা হয়, ‘সোমবার রাতের ওই ভয়াবহ ঘটনার পরোয়ানাগুলো সাউথ ম্যানচেস্টারে জারির পর তিন সন্দেহভাজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।’
মঙ্গলবার যাকে গ্রেফতার করা হয়েছে তার নাম ইসমাইল আবেদি বলে মনে করা হচ্ছে। ম্যানচেস্টারের সন্দেহভাজন আত্মঘাতী হামলাকারী সালমান আবেদির ভাই সে।বুধবার সকালে হামলাকারী প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যাম্বার রুড এ ঘটনায় আরও কেউ জড়িত থাকার ধারণার কথা জানান। তিনি বলেন, ‘এটি খুব ধ্বংসাত্মক ঘটনা। আগে আমরা যেসকল হামলা দেখেছি তার চেয়ে এটি আরও অনেক বেশি জটিলতাপূর্ণ। ধরন দেখে মনে হচ্ছে, সম্ভবত হামলাকারী একা ছিল না।’
গোয়েন্দা কর্মকর্তারা সালমান আবেদীকে আগে থেকে চিনতেন উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘আশা করি পরবর্তী কয়েক দিন কিংবা কয়েক সপ্তাহের মধ্যে আমরা সালমানের ব্যাপারে আরও তথ্য জানব।’ম্যানচেস্টারে জন্মগ্রহণকারী আবেদি স্থানীয় একটি স্কুলে পড়াশোনা করতো। এরপর সালফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে বিজনেস ম্যানেজমেন্টে ভর্তি হয় সে। পড়ে কোর্স শেষ করার আগেই ঝরে পড়ে। বেশ কয়েকবার লিবিয়ায় আসা যাওয়া করেছে সে। লিবিয়া ভ্রমণের সময় সালমান উগ্রপন্থায় জড়িত হয়েছে কিনা তা মাথায় রেখে তদন্ত করা হবে বলে জানিয়েছেন ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
তিনি আরও জানান, ব্রিটেনে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। এরইমধ্যে গুরুত্বপূর্ণ জনসমাগমের এলাকাগুলোতে পুলিশকে সহায়তা দিতে ৩,৮০০ সেনা মোতায়েন করার কথাও নিশ্চিত করেন তিনি। এর মধ্যে রয়েছে, বাকিংহাম প্যালেস, ডাউনিং স্ট্রিট, বিভিন্ন দূতাবাস এবং প্যালেস অব ওয়েস্টমিনস্টার।
মঙ্গলবার রাতে ডাউনিং স্ট্রিটে কোবরা কমিটির বৈঠকের পর ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে জানান, সামনের সপ্তাহগুলোতে কনসার্ট ও ফুটবল ম্যাচ চলার সময় সশস্ত্র সেনাদের দেখা যাবে। পুলিশ কর্মকতৃাদের অধীনে এ সশস্ত্র সেনা সদস্যরা কাজ করবে বলেও জানান তিনি।
ম্যানচেস্টারে সোমবার রাতের হামলার পর ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে আরও বড় ধরনের হামলার আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। হুমকির আশঙ্কা ‘তীব্র’ থেকে ‘সংকটপূর্ণ’ অবস্থায় পৌঁছে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।
এদিকে হামলার প্রতিক্রিয়ায় ব্রিটেনে আসন্ন সাধারণ নির্বাচনের প্রচারণা স্থগিত ঘোষণা করেছে নির্বাচনে অংশ নিতে যাওয়া সব রাজনৈতিক দল। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত ব্রিটিশ পার্লোমেন্টের অধিবেশনও বন্ধ রাখা হয়েছে।