মন্ত্রিসভা থেকে জাতীয় পার্টির পদত্যাগের ইঙ্গিত রওশনের

SHARE

আলোচনার ভিত্তিতে জাতীয় পার্টির সদস্যরা মন্ত্রিসভা থেকে আগামীতে পদত্যাগ করবেন বলে জানিয়েছেন বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ।

দলের চেয়ারম্যান এরশাদের সঙ্গে কোনো মতোবিরোধ নেই উল্লেখ করে রওশন  বলেন, আলাপ-আলোচনা ও সম্মতিক্রমেই তারা পরস্পরবিরোধী অবস্থান নেন।
image_97696_0
বেসরকারি টেলিভিশন ইনডিপেনডেন্টকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এসব কথা রওশন এরশাদ।

রওশন জানান, জাতীয় পার্টি সরকারের অংশ থাকায় অনেকে যেহেতু সমালোচনা করেন এজন্য তারা মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছেন।

সরকার ও বিরোধী দলে একই সঙ্গে থাকার পেছনে তিনি যুক্তি দেন, এটা অনেক দেশেই আছে। সরকারের সঙ্গে মিলেমিশে কাজ করতে গেলে অনেক কিছু করতে হয়। আমরা দেখিয়ে দিয়েছি, সরকারে থাকার পরও বিরোধী দলের ভূমিকা পালন করে যাচ্ছি।

মন্ত্রিত্বের সংখ্যা বাড়ানোর জন্যই কি এই জাতীয় পার্টি এই সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে? এমন প্রশ্নের জবাবে বিরোধী দলীয় নেতা বলেন, না, আমাদের সিদ্ধান্তের পেছনে এমন কোনো উদ্দেশ্য নেই।

আপনি বরাবরই বিএনপিপন্থি হিসেবে পরিচিত, এবার কিভাবে আওয়ামীপন্থি হলেন-এমন প্রশ্নের জবাবে রওশন এরশাদ বলেন, খালেদা জিয়া ছিলেন আর্মি চিফের ওয়াইফ, পরবর্তী সময়ে প্রেসিডেন্টের ওয়াইফ। আর আমার স্বামীও আর্মিতে ছিলেন। সে হিসেবে তার সঙ্গে আমার পরিচয়। এর বাইরে কিছু নয়।

রওশন বলেন, “আমি বিএনপি বা আওয়ামী লীগপন্থি নই, আমি জাতীয় পার্টিপন্থি।”

এরশাদের বিরোধিতা সত্ত্বেও ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে যাওয়ার পেছনে যক্তি দেখিয়ে রওশন বলেন, “এ ব্যাপারে আমি অনেক ভেবেছি। আমরা নির্বাচনে না গেলে আবার ওয়ান ইলেভেন আসতো। এটা কারো জন্যই ভালো হতো না। তাই সাহস করে নির্বাচনে গিয়েছি। আমাকে সেই সাহস দিয়েছেন আল্লাহ।” জনগণের কথা চিন্তা করে নির্বাচনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলেও দাবি করেন তিনি।

রওশন জানান, এরশাদের নীরব সম্মতি ছিল নির্বাচনে যাওয়ার ব্যাপারে। তার সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করেই জাতীয় পার্টি নির্বাচনে যায়।

এরশাদ-রওশন বিরোধ মিডিয়ার বানানো দাবি করে রওশন বলেন, “আমাদের মধ্যে কোনো বিরোধ নেই। পত্রপত্রিকা এটা বেশি প্রচার করে। আমাদের সম্পর্ক স্বাভাবিক। এসব মিডিয়া মনগড়া পরিস্থিতি সৃষ্টি করে।”

জাতীয় পার্টি গৃহপালিত বিরোধী দল এমন অভিযোগের জবাবে রওশন বলেন, যারা কাজ করে তাদের বিরুদ্ধে সমালোচনা হবেই।

রওশন মনে করেন, আগামী নির্বাচন কিভাবে হবে তা আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে হবে। এ ক্ষেত্রে বিএনপির সঙ্গেও আলোচনা হতে পারে বলে মনে করেন তিনি।

গত সাত মাসে বিরোধী দলীয় নেতা হিসেবে কী ভূমিকা পালন করেছেন এমন প্রশ্নের জবাবে রওশন এরশাদ বলেন, সাত মাস কম সময়। তবে এই সময়ের মধ্যে জনগণের অনেক কথাই বলেছি, ভবিষ্যতে আরো বলবো। তিনি জানান, নদী কমিশন গঠন, লঞ্চ দুর্ঘটনা প্রতিরোধে ব্যবস্থা এবং ফরমালিনবিরোধী অভিযানে সরকার তার পরামর্শ গ্রহণ করেছে।

জাপা চেয়ারম্যান সম্পর্কে মূল্যায়ন কী? এমন প্রশ্নের জবাবে রওশন বলেন, একজন মানুষের অনেকগুলো দিক থাকে। সব দিক থেকেই এরশাদ সাহেব ভালো। তিনি স্বামী হিসেবেও ভালো।