কাল পিছিয়ে ছিলেন। আজ এক লাফে টপকে গেলেন প্রতিপক্ষকে!
দু’টি প্রথম সারির মার্কিন সংবাদমাধ্যমের করা সাম্প্রতিকতম যৌথ-সমীক্ষাটি বলছে, তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী, ডেমোক্র্যাট প্রার্থী হিলারি ক্লিন্টনের থেকে এক শতাংশ ভোটে এগিয়ে রয়েছেন রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প। এই প্রথম। এই অভাবনীয় ‘উত্থানে’ চমকে উঠেছে আমেরিকা। নড়েচড়ে বসেছে তামাম দুনিয়া। গত কয়েক দিন ধরে করা এই সমীক্ষাই বলছে, অক্টোবরের শেষ কয়েক দিনে ভেল্কি দেখিয়েছেন মার্কিন ধনকুবের।
কেমন সেই ভেল্কি?
২৩ অক্টোবরের সমীক্ষায় দেখা গিয়েছিল, প্রাক্তন ফার্স্ট লেডির থেকে ১২ শতাংশ ভোটে পিছিয়ে রয়েছেন ট্রাম্প। তখন বলা হয়েছিল, তাঁর পক্ষে এই ব্যবধান টপকানো আদপেই সম্ভব নয়। কিন্তু সেই ‘না’-কেই ‘হ্যাঁ’ করে দেখিয়েছেন ট্রাম্পের সমর্থকেরা। হিলারির সঙ্গে তাঁর ফারাকটা দ্রুত কমেছে। গতকাল প্রকাশিত হওয়া ২৯ অক্টোবরের সমীক্ষায় দেখা গিয়েছিল, হিলারির ঘাড়ের কাছে নিশ্বাস ফেলছেন তিনি। ব্যবধান কমে দাঁড়িয়েছে মাত্র এক শতাংশে। আর তার এক দিন পরেই উল্টে গেল সমীকরণটা। হেভিওয়েট হিলারিকে পেছনে ফেলে দিলেন ‘কালো ঘোড়া’ ডোনাল্ড।
হিলারি শিবিরের অবশ্য দাবি, এই ট্রাম্প-জোয়ারের খবরটা ভুয়ো। এর পিছনে দেশের কিছু সংবাদমাধ্যমের রাজনৈতিক অভিসন্ধি রয়েছে। তা ছাড়া, তাদের অভিযোগের তির এফবিআই ডিরেক্টর জেমস কোমির দিকেও। এই কোমিই হিলারির ই-মেল নিয়ে নতুন করে তদন্তে নেমে ডেমোক্র্যাট প্রার্থীর ভোটব্যাঙ্কে ধস ধরিয়েছেন বলে মত হিলারি-সমর্থকদের। কিন্তু শুধু ই-মেল তদন্তের জন্য কি হিলারির জনপ্রিয়তায় এ রকম ভাটা পড়েছে?
একটি মার্কিন দৈনিক বলছে, ভোটের মাত্র আট দিন আগে এখন টক্করটা আসলে দুই ‘অপছন্দের’ প্রার্থীর মধ্যে। হিলারি বা ট্রাম্প— কেউই মার্কিন ভোটদাতাদের পছন্দের প্রার্থী নন। দুই প্রার্থীই দেশকে নতুন দিশা দেখানোর থেকে কুৎসা ও ব্যক্তিগত আক্রমণে বেশি ব্যস্ত। শ্লীলতাহানির অসংখ্য অভিযোগ এবং লাগাতার নারী ও মুসলিম-বিদ্বেষী কথা বলে তো অনেক দিন আগেই দেশের একটা বিশাল সংখ্যক মানুষের মধ্যে জনপ্রিয়তা হারিয়েছিলেন মার্কিন ধনকুবের। এমনকী, তাঁর দলের তাবড় তাবড় নেতাও ট্রাম্পের বিরুদ্ধে বহু বার স্বর চড়িয়েছেন। আর হিলারিও কোনও কালে বিশেষ জনপ্রিয় ছিলেন না। আট বছর আগে দলীয় স্তরে মনোনয়নের যুদ্ধে বারাক ওবামার কাছে হেরে যাওয়াই তার প্রমাণ, বলছেন কূটনীতিকরা। সমীক্ষা বলছে, এ বারও নিজের দলের এক তৃতীয়াংশ মানুষ হিলারিকে হোয়াইট হাউসের প্রধান দাবিদার হিসেবে দেখতে নারাজ। ফলে দেশের প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ প্রেসিডেন্ট ওবামা যেমন সমর্থনের জনজোয়ারে ভেসেছিলেন, তার ধারে-কাছেও এ বার পৌঁছতে পারেননি হিলারি। ট্রাম্প তো নয়ই