SHARE

a28f91d53f5fa5abf9886bb427292e96-During-practice-session-Musfiq___1.jpgt
কাল (আজ) তো শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচ। লাসিথ মালিঙ্গাকে নিয়ে কী পরিকল্পনা?
মিরপুরের ইনডোর থেকে বের হতেই প্রশ্নটার সামনে মিঠুন। মুখে স্বভাবসুলভ একচিলতে হাসি ছড়িয়ে বললেন, ‘তেমন কোনো পরিকল্পনা নেই।’
বিস্ময়কর! শ্রীলঙ্কার সঙ্গে খেলা, অথচ মালিঙ্গাকে নিয়ে পরিকল্পনা নেই? চোট থেকে ফিরেই সংযুক্ত আরব আমিরাতের ব্যাটসম্যানদের মনে ভয়ের কাঁপন ছড়িয়ে ৪ উইকেট নিয়েছেন। এটা বাদ দিলেও মালিঙ্গার মুখোমুখি হওয়া মানেই তো নিজেকে তলোয়ারের সামনে সঁপে দেওয়া। সেই মালিঙ্গাকে খেলার জন্য বিশেষ কোনো পরিকল্পনার কথা আলোচিত হয়নি?
মোটেও তা নয়। মালিঙ্গার জন্য বাংলাদেশ শিবিরের প্রস্তুতি ভালোই। কিন্তু সাংবাদিকেরা জিজ্ঞেস করলেই যদি সব বলে দিতে হয়, তাহলে আর প্রস্তুতি নিয়ে কী লাভ! মিঠুন তারপরও খুব মৌলিক কিছু পরিকল্পনার কথা জানালেন, ‘ও তো বেশি ইয়র্কারই করার চেষ্টা করবে। নয়তো সামনে বল ফেলবে। মালিঙ্গাকে সোজা ব্যাটেই খেলার চিন্তা…।’
—তার মানে মালিঙ্গাকে আক্রমণ করবেন না আপনারা?
মিঠুন: করব না কেন? বাজে বল পেলে তো মারবই।
মিঠুনের এই কথাতেই লুকিয়ে শ্রীলঙ্কান অধিনায়ককে নিয়ে বাংলাদেশ দলের ব্যাটসম্যানদের পরিকল্পনা। আজ সকালের টিম মিটিংয়ে হয়তো কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহেই মালিঙ্গা সামলানোর চূড়ান্ত প্রেসক্রিপশন দেবেন। তবে জানা গেল, নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে বিধ্বংসী এই পেসারকে খেলার একটা ‘টেকনিক’ও নাকি ব্যাটসম্যানরা এর মধ্যেই ঠিক করে নিয়েছেন। সেটা হলো, মালিঙ্গাকে ‘ভালো বল’ করতেই দেওয়া হবে না।
মালিঙ্গার বিষাক্ততম অস্ত্রটি হচ্ছে ইয়র্কার। বাংলাদেশ দলের ব্যাটসম্যানদের চেষ্টা থাকবে, এই ইয়র্কারগুলো যেন পুরোপুরি ইয়র্কার না হতে পারে। পদ্ধতিটা খুব সহজ। সামনে এগিয়ে এসে ও রকম বলগুলোকে বানিয়ে নিতে হবে হাফভলি বা ফুলটস। এভাবে চড়াও হয়ে এক-দুবার সফল হওয়া গেলে মালিঙ্গাও হয়তো ইয়র্কারের বদলে অন্য কিছু করার চিন্তা করবেন।
মিঠুনের জন্য সবচেয়ে ভালো হয়, ওই সময় যদি দু-একটা শর্ট বল করেন মালিঙ্গা। এ ধরনের বলে খেলাই বেশি অনুশীলন করেছেন। তাই হুক-পুল মারাটা বেশ উপভোগ করতে শুরু করেছেন এই ওপেনার, ‘শর্ট পিচ বল পেলে ভালো। ব্যাটে-বলে ঠিকমতো লাগাতে পারলে খুব মজা পাই।’
অনুশীলনের আরও একটা জিনিসও এশিয়া কাপে ভালোই কাজে লাগছে মিঠুনের। সেটা হলো সবুজ উইকেটে খেলার অভিজ্ঞতা। বাংলাদেশ-ভারত প্রথম ম্যাচ থেকেই এশিয়া কাপের উইকেট পেস বোলিংবান্ধব। এই উইকেটে ১৩০-১৪০ রানকেই বলা হচ্ছে জেতার মতো স্কোর। তবে মিঠুন সম্ভবত ব্যতিক্রম, ‘অনুশীলনে আমরা সবুজ উইকেটে ব্যাটিং করেছি। সে জন্যই হয়তো আমার কাছে এখানে খেলাটা খুব কঠিন মনে হচ্ছে না।’
নতুন বলে মালিঙ্গার সঙ্গী নুয়ান কুলাসেকারাকে নিয়েও বেশ সতর্ক বাংলাদেশ দল। বল সুইং করাতে পারেন ইচ্ছামতো, ব্যাটসম্যানদের জন্য যা সব সময়ই বাড়তি চ্যালেঞ্জ। টিম ম্যানেজমেন্টের বিশ্বাস, নতুন বলের দুই শ্রীলঙ্কানকে সামলানোটাই চাবিকাঠি, অন্য বোলাররা তেমন কোনো হুমকি নয়। কাল বিকেলের অনুশীলন শেষে দলের প্রতিনিধি হয়ে কথা বলা সাব্বির রহমান অবশ্য দাবি করলেন, নির্দিষ্ট কোনো বোলারকে নিয়ে ভাবছে না বাংলাদেশ। দলের তিন নম্বর ব্যাটসম্যান বললেন, ‘কোনো বোলারকে নিয়েই আমাদের আলাদা পরিকল্পনা নেই। প্রতিটি বলকেই আলাদা করে দেখতে হবে।’
ব্যাটিংয়ের মূল কথা তো এটাই—প্রতিটি বলকে আলাদা করে দেখা। তবে কিছু বল তো এমনিতেই আলাদা হয়ে যায়। যেমন মালিঙ্গার ইয়র্কার। ইনিংসের শুরুতে সেটি সামলাতে পারা না-পারাতেই বোধ হয় লুকিয়ে বাংলাদেশের বড় কিছু করার চাবিকাঠি।