বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্ব শুক্রবার শুরু

SHARE

1766বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্ব শুক্রবার থেকে টঙ্গীর তুরাগ নদীর তীরে শুরু হচ্ছে। ইতোমধ্যে দ্বিতীয় পর্বের ইজতেমায় যোগ দিতে বুধবার থেকে ঢাকাসহ ১৬টি জেলার মুসল্লিরা ইজতেমাস্থলে আসা শুরু করেছেন। এবার ইজতেমায় পুরো ময়দানকে ২৯টি খিত্তায় ভাগ করা হয়েছে। আগামী ১৮ জানুয়ারি দ্বিতীয় পর্বের আখেরি মোনাজাতের মাধ্যমে শেষ হবে ৫১তম বিশ্ব ইজতেমা।

ইজতেমা ময়দান ঘুরে দেখা গেছে, দ্বিতীয় পর্বের ইজতেমায় যোগ দিতে ইতোমধ্যে কয়েক হাজার মুসল্লি ইজতেমা মাঠে সমবেত হয়েছেন। প্রথম পর্বে অংশ নেয়া বেশ কিছু বিদেশি মুসল্লি দ্বিতীয় পর্বে অংশ নেয়ার জন্য তারা ময়দানের বিদেশি নিবাসে রয়ে গেছেন।

ইজতেমা আয়োজক কমিটির অন্যতম সদস্য প্রকৌশলী মো. গিয়াস উদ্দিন বলেন, গত ১০ জানুয়ারি প্রথম পর্বের আখেরি মোনাজাতের পর দ্বিতীয় পর্বের ইজতেমার ময়দান প্রস্তুতের জন্য ইজতেমায় আগত তাবলিগ জামাতের কর্মীরা কাজ করে যাচ্ছেন। তারা ইজতেমার প্রথম পর্বে মুসল্লিদের ফেলে রাখা ময়লা-আবর্জনা সরিয়ে পুরো ময়দানকে উপযোগী করে তুলছেন। এজন্য ময়দানে তাবলিগের কর্মীরা ১০-১২টি দলে বিভক্ত হয়ে এ পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম চালাচ্ছেন। এছাড়া গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকেও ময়দান পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করার কাজ সম্পন্ন করা হচ্ছে।

দ্বিতীয় পর্বে ১৬টি জেলার মুসল্লিগণ অংশ নেবেন :

দ্বিতীয় পর্বের ইজতেমায় মুসুল্লিদের অংশ নেয়ার জন্য জেলাওয়ারি পুরো প্যান্ডেলকে ২৯টি খিত্তায় ভাগ করা হয়েছে। এতে ১৬টি জেলার মুসল্লিগণ অংশ নেবেন। খিত্তা অনুযায়ী এসব জেলা হলো- ১নং থেকে ৭ নং খিত্তায় ঢাকা জেলার বাকি এলাকা, ৮নং খিত্তায় ঝিনাইদহ, ৯ ও ১১ নং খিত্তায় জামালপুর, ১০ নং খিত্তায় ফরিদপুর, ১২ ও ১৩ নং খিত্তায় নেত্রকানা, ১৪ ও ১৫ নং খিত্তায় নরসিংদী, ১৬ ও ১৮ নং খিত্তায় কুমিল্লা, ১৭ নং খিত্তায় কুড়িগ্রাম, ১৯ ও ২০ নং খিত্তায় রাজশাহী, ২১ নং খিত্তায় ফেনী, ২২ নং খিত্তায় ঠাকুরগাঁও, ২৩ নং খিত্তায় সুনামগঞ্জ, ২৪ ও ২৫ নং খিত্তায় বগুড়া, ২৬ ও ২৭ নং খিত্তায় খুলনা, ২৮ নং খিত্তায় চুয়াডাঙা এবং ২৯ নং খিত্তায় পিরোজপুর জেলা।

এদিকে ইজতেমায় আগত মুসল্লিদের বিনা মূল্যে স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের লক্ষ্যে জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়, টঙ্গী সরকারি হাসপাতালসহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি সংস্থা ও প্রতিষ্ঠান ইজতেমা ময়দানের উত্তর পার্শ্বে নিউ মন্নু কটন মিলের অভ্যন্তরে ফ্রি মেডিক্যাল ক্যাম্পের চিকিৎসা কার্যক্রম পরিচালনা করবে।

গাজীপুরের পুলিশ সুপার মুহাম্মদ হারুন অর রশীদ পিপিএম জানান, পুলিশের প্রায় ১২ হাজার সদস্য ইজতেমার নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকছে। বৃহস্পতিবার থেকেই আবার পূর্ণদ্যোমে র্যাব ও পুলিশ সদস্যরা স্বস্ব দায়িত্ব পালন শুরু করেছে।

তিনি আরও জানান, বিশ্ব ইজতেমার দুই পর্বে মুসল্লিদের নিরাপত্তায় রাখা হয়েছে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা। পুলিশ ও র্যাবের কন্ট্রোল রুম থেকে তা পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে এবং ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরাও ব্যবহার করা হচ্ছে। প্রথম পর্বের মতো দ্বিতীয় পর্বের জন্যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা প্রস্তুত রয়েছে। ৫ স্তরের এ নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্যে ইজতেমা ঢেকে রাখা হবে। কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা ও অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা যেন ঘটতে না পারে সে বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থা সাজানো হয়েছে।

দ্বিতীয় পর্বে নিরাপদ যাতায়াত ও সুষ্ঠুভাবে যানবাহন চলাচলের সুবিধার্থে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। এ ব্যবস্থার দায়িত্বে থাকছে ঢাকা মহানগর পুলিশ, ঢাকা ও গাজীপুর জেলা পুলিশ।

জানা গেছে, পুলিশ ও র্যাব সদস্যরা ৫টি করে স্তরে বিভক্ত হয়ে সাদা পোশাকেও দায়িত্ব পালন করছেন। এছাড়া বাইনোকুলার, মেটাল ডিটেক্টর, নৌ-টহল, চেকপোস্ট ও র্যাবের হেলিকপ্টার টহল দিবে বলে জানা গেছে।

এদিকে ইজতেমার দ্বিতীয় পর্বেও বাংলাদেশ রেলওয়ে ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন সংস্থা (বিআরটিসি) বিশেষ ট্রেন সার্ভিস ও বাস চলাচলের ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।