‘ইসলামী ব্যাংক মৌলবাদী ব্যাংকিং করছে এবং অবৈধ কার্যকলাপে অর্থায়ন করছে’ বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ড. আবুল বারকাতের এমন বক্তব্যের সপক্ষে প্রমাণ চাইলেন পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। সোমবার দুপুরে পরিকল্পনা কমিশনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি ওই বক্তব্যের প্রমাণ চান। মূলত আবুল বারকাতের দেয়া বক্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানাতেই এই সংবাদ সম্মেলন করেন মুস্তফা কামাল।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, আবুল বারকাতের উচিত তার দেয়া বক্তব্যের সপক্ষে প্রমাণ বাংলাদেশে ব্যাংকের কাছে উপস্থাপন করা বা তিনি চাইলে আমার কাছেও দিতে পারেন। তবে আমার জানা মতে, ইসলামী ব্যাংক কোনো অবৈধ কার্যকলাপে জড়িত নয়।
কামাল বলেন, ইসলামী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিনিধি আছে। তারা সব সময় ব্যাংকটির কার্যকলাপ তদারকি করছেন। এ যাবতকালে ব্যাংকটির অবৈধ কার্যকলাপের কোনো প্রমাণ মেলেনি। আমার কাছে এ ধরনের কোনো তথ্য নেই। তাই আমি বিশ্বকাপ ক্রিকেট আয়োজনে ব্যাংকটির কাছ থেকে ১০ কোটি টাকা নিয়েছি। এটাকে আবুল বারকাত প্রশ্নবিদ্ধ করেছেন। আমার ইমেজ নষ্ট করার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু এটা অসত্য, উদ্দেশ্যমূলক।
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, বিশ্বকাপ ক্রিকেট আয়োজনের ৪ বছর পর বারকাতের এই প্রশ্ন কেন? এটার পেছনে উদ্দেশ্য আছে।
কামাল আরো বলেন, ইসলামী ব্যাংক অবৈধ কার্যকলাপ করছে, এমন তথ্য জনগণের মাঝে প্রচলিত। এটি দেখার দায়িত্ব বাংলাদেশ ব্যাংকের। যদি প্রমাণ হয়, তবে বাংলাদেশ ব্যাংক লাইসেন্স বাতিল করতে পারে। কিন্তু ইতোপূর্বে কোনদিন লাইসেন্স বাতিল বা স্থগিত করা হয়নি। তাই বিশ্বকাপ ক্রিকেট আয়োজনে অর্থ নিয়ে কোনো অন্যায় করিনি। আমি সব ব্যাংকের কাছে গিয়েছিলাম। কিন্তু কেউ অর্থ দেয়নি। ইসলামী ব্যাংক দিয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে কামাল বলেন, ইসলামী ব্যাংক সরকারকে আয়কর দিচ্ছে, সরকারের বিভিন্ন তহবিলে অর্থ দিচ্ছে। তাই বড় একটি আয়োজনে অর্থ নিয়ে আমি একা কোনো অন্যায় করিনি। মনে রাখতে হবে, ইসলামী ব্যাংক সরকারের বৈধ লাইসেন্স নিয়ে ব্যবসা করে যাচ্ছে।
ইসলামী ব্যাংক সন্ত্রাসে অর্থায়ন করে, এমন অভিযোগ আপনি মানেন কি না প্রশ্নে কামাল বলেন, আমার কাছে এ ধরনের কোনো তথ্য নেই। সরকারের কাছে আছে কি না জানি না।
উল্লেখ্য, গত শনিবার ২০১১ সালের ক্রিকেট বিশ্বকাপের প্রচারণায় ইসলামী ব্যাংকের টাকা নেওয়ার জন্য পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালকে দায়ী করে বক্তব্য দেন অর্থনীতিবিদ আবুল বারকাত। তিনি বলেন, বিশ্বকাপ ক্রিকেটে ইসলামী ব্যাংকের টাকা নিয়ে সরকার ভুল করেছে। এর মাধ্যমে ইসলামী ব্যাংককে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। জনতা ব্যাংকের চেয়ারম্যান হিসেবে আমি এটা ঠেকাতে সরকারকে চিঠি দিয়েছিলাম। কিন্তু বর্তমান পরিকল্পনামন্ত্রী লোটাস কামালের কারণে সেটা সম্ভব হয়নি।