সঙ্ঘের রাম মাধব এলেন সঙ্ঘের রাম মাধব এলেন বিজেপিতে

SHARE

ভারতে কট্টর হিন্দুবাদী সংগঠন আরএসএসের বিশিষ্ট নেতা রাম মাধব আজ নাটকীয় ভাবে বিজেপিতে যোগ দিলেন। আরএসএস ও বিজেপির মধ্যে সমন্বয় রক্ষাকারী সাংগঠনিক সম্পাদক রামলাল যেমন আছেন তেমনি থাকবেন। তার উপরে রাম মাধবের যোগদান বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। তা ছাড়া শুধু রাম মাধব নন, উত্তরপ্রদেশ থেকেও কমপক্ষে আরও দু’জন প্রচারক, যারা আরএসএসের মতাদর্শগত বিষয়ে যথেষ্ট সমঝদার বলে সঙ্ঘ পরিবারে বিশেষ ভাবে পরিচিত, তারাও বিজেপিতে যোগ দিলেন। ভবিষ্যতে দলে নরেন্দ্র মোদির একাধিপত্য নিয়ন্ত্রণে একে মোহন ভাগবতের কৌশল বলে মনে করছেন অনেকে। দলের বর্তমান সভাপতি রাজনাথ সিংহকে লোকসভার ডেপুটি লিডার মনোনীত করেছে মোদি সরকার। সঙ্ঘ নেতাদের বিজেপিতে আসা নিয়ে তিনি অবশ্য বলছেন, “এতে আরএসএস এবং বিজেপির মধ্যে সংঘাত নয়, সমন্বয় সাধনই বেশি করে হবে।”image_89582_0

অমিত শাহকে বিজেপির সভাপতি করতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বদ্ধপরিকর। মোদির সেনাপতি অরুণ জেটলির মতো নেতা অমিত শাহকে সভাপতি করার জন্য দলের মধ্যে যথেষ্ট সক্রিয়। সঙ্ঘ পরিবারের পক্ষ থেকে অমিত শাহকে এখনই সভাপতি করার প্রশ্নে আপত্তি ছিল। বিশেষ করে অমিত শাহের বিরুদ্ধে যেখানে হত্যার মামলা পর্যন্ত রয়েছে। সে অভিযোগের শুনানিও চলছে আদালতে। চলতি জুলাই মাসের মাঝামাঝি অমিত শাহের ওই মামলার চূড়ান্ত শুনানি। অবশ্য মোদি সরকার গঠনের আগেই আদালতকে সিবিআই জানিয়ে দিয়েছে, অমিত শাহের বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ প্রমাণ করা যাচ্ছে না।

এই অবস্থায় জুলাই মাসের মাঝামাঝি আদালত যদি অমিত শাহকে ক্লিনচিট দিয়ে দেয় তা হলে মোদি সঙ্গে সঙ্গে অমিতকেই সভাপতি করবেন বলে ঠিক করে ফেলেছেন। সে ক্ষেত্রে অমিত শাহের বিরুদ্ধে মামলার নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত জে পি নাড্ডার মতো কাউকে সভাপতি করার প্রস্তাবটি নিয়ে তখন আর ভাবতে হবে না মোদিকে।

এই পরিস্থিতিতে মহারাষ্ট্র, তামিলনাড়ু, পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা নির্বাচনের আগে দল সম্পূর্ণ মোদির নিয়ন্ত্রণে চলে যাবে বলে আশঙ্কা সঙ্ঘ পরিবারে রয়েছে। কার্যত মোদি একচ্ছত্র অধিপতি হয়ে উঠবেন বলেও আশঙ্কা রয়েছে। মোদির কর্তৃত্বকে চ্যালেঞ্জ করার মতো সঙ্ঘ পরিবারেও এখন কেউ নেই। সেটা জেনেই এখন মোহন ভাগবত আরএসএসের হয়ে আগাম ঘুঁটি সাজাচ্ছেন। অদূর ভবিষ্যতে স্বদেশি ও হিন্দুত্বের বিষয়গুলি নিয়ে মোদি সরকারের সঙ্গে যদি কোনো কারণে সংঘাত বাড়ে তা হলে সে ক্ষেত্রে যাতে আরএসএস বিজেপির মাধ্যমে মোদি সরকারের সঙ্গে মতাদর্শগত লড়াইটি চালাতে পারে, আসলে তার ব্যবস্থাই এখন থেকে করে রাখতে চাইছেন মোহন ভাগবত। বিশেষ করে চীনের সঙ্গে কতটা সংঘাতের আবহে যাওয়া হবে, তিব্বত নিয়ে অবস্থান কী হবে, ৩৭০ ধারা থেকে রাম মন্দির এবং অভিন্ন দেওয়ানি বিধি কার্যকর করার মতো বিষয়গুলি নিয়ে যেখানে বিজেপির উপরে মতাদর্শগত নিয়ন্ত্রণ রাখাটা খুব জরুরি বলে মনে করছেন আরএসএসের শীর্ষ নেতৃত্ব।

সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের আদলে প্রতিটি রাজ্য সংগঠনেও সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে সঙ্ঘের প্রতিনিধি থাকে। পশ্চিমবঙ্গে সত্যব্রত মুখোপাধ্যায় রাজ্য সভাপতি থাকার সময় ওই সাংগঠনিক সম্পাদকের পদটি তুলতে গিয়ে আরএসএসের কোপে পড়েছিলেন। এখন রাম মাধব ও অন্য সঙ্ঘ নেতাদের বিজেপিতে যোগ দেওয়ার মতো দলের বিভিন্ন রাজ্য শাখাতেও সঙ্ঘের নেতাদের উপস্থিতি বাড়বে বলে মনে করা হচ্ছে। যেমন রাম মাধবের সঙ্গেই সঙ্ঘের উত্তরপ্রদেশ শাখার প্রান্ত-প্রচারক শিবপ্রসাদ এ দিন বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন।- ওয়েবসাইট।