মুস্তাফিজ তোপে হোয়াইটওয়াশ জিম্বাবুয়ে

SHARE

বাংলাদেশের দেওয়া ২৭৭ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে বাঁহাতি পেসার মুস্তাফিজুর রহমানের বোলিং তোপে ২১৫ রানে গুটিয়ে গেছে জিম্বাবুয়ে। এরফলে বাংলাদেশের মাটিতে টানা দুই সিরিজে হোয়াইটওয়াশের লজ্জা পেতে হলো সফরকারীদের।

সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচে টাইগাররা জিম্বাবুয়েকে হারিয়েছে ৬১ রানের ব্যবধানে। মাত্র ৯ ম্যাচের ক্যারিয়ারেই তৃতীয়বারের মতো পাঁচ উইকেট শিকার করেন বোলিং বিস্ময় মুস্তাফিজ।

সফরকারীদের ইনিংসের শুরুতেই আঘাত হানেন এই বাঁহাতি সিমার। প্রথম ওভারের দ্বিতীয় বলেই চামু চিবাবার স্ট্যাম্প উপরে ফেলেন

bd team winner

তিনি। এরপর ক্রিজে থিতু হওয়ার চেষ্টা করেন ক্রেইগ এরভিন ও রেগিস চাকাভা। কিন্তু ৭ম ওভারে আবারও আঘাত হানেন মুস্তাফিজ। এবার তার বলে নাসিরের হাতে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন চাকাভা।

শুরুর বিপর্যয় কাটিয়ে উঠতে শন উইলিয়ামসকে নিয়ে লড়া‌ই করার চেষ্টা চালিয়ে যান এরভিন। তবে তাকেও ফিরে যেতে হয় নাসির হোসেনের বলে এলবিডব্লিউর ফাঁদে পড়ে। ইনিংসের ৯ম ওভারে বোলিংয়ে পরিবর্তন আনেন মাশরাফি। মুস্তাফিজুরকে সরিয়ে নাসিরের হাতে বল তুলে দেন তিনি। নিজের প্রথম ওভারের চতুর্থ বলেই ২১ রান করা ক্রেইগ এরফিভনেক ফিরিয়ে দেন নাসির।

৪৭ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে বিপাকে পড়া সফরকারীরা ঘুরে দাঁড়ায় উইলিয়ামস ও চিগুম্বুরা জুটিতে। ক্রিজে সেট হয়ে বাংলাদেশি বোলারদের ওপর যখন ছড়ি ঘুরাচ্ছেন উইলিয়ামস-চিগুম্বুরা তখনই বোলিংয়ে পরিবর্তন আনেন মাশরাফি। বলে তুলে দেন অনিয়মিত বোলার সাব্বিরের হাতে। নিজের প্রথম ওভারের শেষ বলে জিম্বাবুয়ের অধিনায়ক এল্টন চিগুম্বুরাকে বোল্ড আউট করে ৮০ রানে জুটি ভাঙেন সাব্বির। আউট হওয়ার আগে চিগুম্বুরা সংগ্রহ করেন ৪৫ রান।

এরপর জিম্বাবুয়ের ইনিংসের হাল ধরেন শন উইলিয়ামস। ম্যালকম ওয়ালারকে সঙ্গে নিয়ে ৫৯ রানের কার্যকরী জুটি গড়ে তোলেন তিনি। তবে আবারও মাশরাফির বোলিং পরিবর্তন ব্রেক-থ্রু এনে দেয় বাংলাদেশকে। এবার আল আমিনের হাতে বল তুলে দেন মাশরাফি। ইনিংসের ৩৬তম ওভারের চতুর্থ বলে আল আমিন ফিরিয়ে দেন ৩২ রান করা ওয়ালারকে।

ক্রিজের একপ্রান্ত আগলে রেখে লড়াই করে যাওয়া শন উইলিয়ামকে নিজেই সাজঘরে ফেরান অধিনায়ক মাশরাফি। জিম্বাবুয়ের পক্ষে

সর্বোচ্চ ৬৪ রান সংগ্রহ করা উইলিয়ামসকে সাব্বির রহাম‍ানের তালুবন্দি করেন তার অষ্টম ওভারে।
৬ উইকেট হারিয়ে ধুঁকতে থাকা জিম্বাবুয়েকে ৪১তম ওভারে এসে ধ্বসিয়ে দেন মুস্তাফিজ। ৪১তম ওভারে পরপর দুই বলে সিকান্দার রাজা ও জঙ্গেকে ফিরিয়ে দেন তিনি। মুস্তাফিজের বলে অনেক দূর দৌড়ে গিয়ে ডাইভ দিয়ে অসাধারণ এক ক্যাচ ধরে লুক জঙ্গেকে সাজঘরে ফেরান সাব্বির।

ইনিংসের ৪৩ এবং নিজের অষ্টম ওভারে তিনাশি পানিয়াঙ্গারে ফিরিয়ে ক্যারিয়ারে তৃতীয়বারের মতো পাঁচ উইকেট শিকার করেন মুস্তাফিজ। এরপর জিম্বাবুয়ের শেষ উইকেটটি তুলে নেন আরাফাত সানি।
এর আগে বুধবার (১১ নভেম্বর) দুপুরে টসে জিতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন টাইগার অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা।

বাংলাদেশের দুই বাঁহাতি উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান ইমরুল কায়েস ও তামিম ইকবাল দলকে এনে দেন দুর্দান্ত সূচনা। উদ্বোধনী জুটিতে এই দুজন করেন ১৪৭ রান। ৭৩ রান করে ইমরুল আউট হওয়ার পর সমানসংখ্যক রান করে সাজঘরে ফেরেন তামিম।
দুই উইকেটে ১৭৩ রান সংগ্রহ করা বাংলাদেশ যেন হঠাৎ করেই খেই হারিয়ে ফেলে। মাত্র ৫৩ রান যোগ টাইগারদের ৪ ব্যাটসম্যান সাজঘরে ফেরেন। মুশফিক ২৮, লিটন ১৭ রান করলেও সাব্বির ও নাসির ফেরেন যথাক্রমে এক ও শূন্য রানে।

২২৬ রানে ৬ উইকেট হারানো বাংলাদেশ মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের ব্যাটে ভর করে বড় পুঁজির স্বপ্ন দেখে। রিয়াদকে উপযুক্ত সঙ্গ দেন অধিনায়ক মাশরাফি। ১১ বলে ১৬ রান করে মাশরাফি আউট হলেও মাহমুদুল্লাহ তুলে নেন তার ক্যারিয়ারের ১৪তম অর্ধশতক।