ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট তাহমিদ রুম্মান স্কুল ও কলেজ জীবনের শিক্ষকদেরও খোঁজ-খবর রাখতেন। সোমবার বঙ্গোপসাগরে বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার তিন দিন আগেও নিজের ফেসবুক পেজে একটি হাদিস পোস্ট দেন। এছাড়া তার এক শিক্ষকের মৃত্যু নিয়েও লেখেন। তিন দিন আগে নিজের ফেসবুক পেজে তিনি লিখেন, ”আবু সাঈদ এবং আবু হুরাইরা বলেছেন, ‘আল্লাহর বার্তাবাহকরা বলেন, যখন জান্নাতবাসীরা জান্নাতে প্রবেশ করে, একজন ঘোষক ডাকবেন :তুমি এখানেই থাকবে এবং তুমি কখনোই মারা যাবে না; তুমি সেখানে স্বাস্থ্যবান থাকবে এবং তুমি কখনো রোগে ভুগবে না; তুমি সারাজীবন যুবক থাকবে এবং তুমি কখনো বৃদ্ধ হবে না; তুমি আশীর্বাদের ছায়াতলে থাকবে এবং তুমি কখনো কষ্ট পাবে না- (মুসলিম)।”
এর আগে ড. শাহজাহান তপন নামে পদার্থবিজ্ঞানের একজন শিক্ষকের মৃত্যু নিয়ে তাহমিদ নিজের ফেসবুক পেজে লেখেন, ‘ড. শাহজাহান তপন স্যার মারা গেছেন তিন দিন আগে। আর আজকে মাত্র জানলাম। আমরা আসলেই গুণীদের সম্মান দিতে জানি না। আমরা যারা উচ্চ মাধ্যমিকে বিজ্ঞানের ছাত্র ছিলাম, তাদের মাঝে এমন একজনও নেই যারা ড. শাহজাহান তপন আর সরোজ কান্তি হাজারীর নাম শুনি নাই। একজন পদার্থের, অপরজন রসায়নের। একদিন হয়তো পদার্থবিদ্যায় আমাদের দেশ থেকে কেউ একজন নোবেল পুরস্কার পাবেন, সেই ছেলেটিও হয়তো শাহজাহান তপনের সাজানো গোছানো পদার্থবিজ্ঞানের বই দুটি পড়ে এ প্লাস পেয়েছে। কোনো এক দেশ সেরা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পেয়েছে…।’
প্রত্যক্ষদর্শী বহির্নোঙ্গরে অবস্থানরত এমভি আলেকজান্ডার নামের একটি বড় জাহাজের ওয়াচম্যান বাবুল হাওলাদার বলেন, ‘আমি জাহাজের ওপরে কয়েকজন ভারতীয় নাগরিকের সঙ্গে কথা বলছিলাম। তারা বিমানবন্দর কোথায় জানতে চাইলে আমি সেদিকে দেখাচ্ছিলাম। তখনই বিমানটিকে উড়তে দেখি। এর কিছুক্ষণ পরই আমার চোখের সামনে বিমানটি সাগরে পড়ে যায়। বিমানটি পানিতে পড়ার দৃশ্য দেখেছি। পরে নৌবাহিনী ও কোস্টগার্ড এলে তাদের আমি জায়গাটি দেখিয়ে দিয়েছি।’
তাহমিদের ফুফাত ভাই সাজ্জাদ বলেন, তাহমিদ বরাবরই অ্যাডভেঞ্চারপ্রিয়। চ্যালেঞ্জ নিতে ভালোবাসতেন। পাইলট হওয়ার স্বপ্ন অঙ্কুরে বিনষ্ট হলো তার।