‘লাদেন নিহত হন নি, ২০০১ সালে তার স্বাভাবিক মৃত্যু হয়’

SHARE

laden11আল-কায়েদার সাবেক নেতা ওসামা বিন-লাদেন  ২০১১ সালে পাকিস্তানে নিহত হন নি বরং ২০০১ সালে তার স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে। তাকে একটি অজ্ঞাত কবরে ইসলামি অনুশাসন অনুযায়ী দাফন করা হয়েছে। প্রেস টিভিকে দেয়া সাক্ষাৎকারে এ দাবি করেছেন লেখক, সাংবাদিক এবং উইনকনসিনের মেডিসন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক জেমস হেনরি ফিটজার। রোববার লন্ডন রিভিউ অব বুকসে প্রকাশিত আমেরিকার খ্যাতনামা অনুসন্ধানী সাংবাদিক ও লেখক সেইমোর হার্শ’এর নিবন্ধ প্রসঙ্গে এ কথা বলেন তিনি।

ভেটার্নস ট্রুথ নেটওয়ার্কের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট জেমস ফিটজার আরো দাবি করেন, বিন-লাদেনের মৃত্যু সম্পর্কে ‘অর্ধ সত্য’ বলেছেন  হার্শ। এর কারণ তুলে ধরতে গিয়ে তিনি বলেন, সত্যিকার পরিস্থিতি গভীরভাবে গোলমেলে হওয়ায় এটা বিস্ময়কর যে, পুরো ঘটনাবলী বুঝতে পারা হার্শের পক্ষেও সম্ভব হয়ে ওঠে নি।

২০০১ সালে ১৫ ডিসেম্বর বিন-লাদেন আফগানিস্তানে মারা গেছেন এবং তাকে সেখানে একটি অজ্ঞাত কবরে দাফন করা হয়েছে বলে দাবি করেন জেমস হেনরি ফিটজার। ২০০১ সালের ২৬ ডিসেম্বর ফক্স নিউজ ওসামা বিন-লাদেনের মৃত্যু বিষয়ক একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, অন লাইনে এটি এখনো পাওয়া যায়।

হার্শ তার নিবন্ধে বলেছেন, সাবেক আল-কায়েদা নেতা ওসামা বিন-লাদেনকে হত্যার অভিযানের বিষয়ে ডাহা মিথ্যা বলেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। নিজের ভূমিকাকে বড় করে দেখানো এবং বিন লাদেন বিরোধী অভিযানের কৃতিত্ব নেয়ার জন্য এক্ষেত্রে পাকিস্তানের বিশেষ বাহিনীর ভূমিকার কথা ধামাচাপা দিয়েছেন তিনি।

প্রায় একই রকম মন্তব্য করেছেন ফিটজার। তিনি বলেন, ২০১১ সালে বিন-লাদেনের দ্বিতীয় দফা মৃত্যুর খবর প্রচার করেছে সংবাদ মাধ্যম। মার্কিন সরকার দেশটির জনগণের কাছে মিথ্যা ও বানোয়াট কাহিনী তুলে ধরেছে।

এদিকে, সেইমোর হার্শ লিখেছেন,  অ্যাবোটাবাদের বাড়িতে বহু বছর ধরেই বিন লাদেনকে আটকে রেখেছিল পাকিস্তানের সেনা গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই। ২০১০ সালে পাকিস্তানের একজন পদস্থ গোয়েন্দা কর্মকর্তার কাছ থেকে প্রথম বিন লাদেনের অবস্থান সম্পর্কে জানতে পারে মার্কিন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা। ওয়াশিংটন ওসামা বিন-লাদেনের মস্তকের মূল্য ঘোষণা করেছিল দুই কোটি ৫০ লাখ ডলার। এ অর্থের লোভেই ওসামার অবস্থান সম্পর্কিত তথ্য ফাঁস করে দেন ওই পাকিস্তানি কর্মকর্তা।

হার্শ আরো লিখেছেন, মার্কিন সেনা অভিযানের বহু আগে থেকে বিন লাদেনের সঙ্গে আল-কায়েদা চক্রের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছিল। দীর্ঘদিন ধরে এ যোগাযোগ বিছিন্ন করে দেয়া হয়েছিল বলেও জানান হার্শ।

এ ছাড়া, বিন-লাদেন বিরোধী অভিযান চালানোর সময় মার্কিন নৌ কমান্ডো সিল’এর সদস্যদের সঙ্গে কোনো গুলি বিনিময়ের ঘটনা ঘটেনি বলেও হার্শ জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, কেবলমাত্র ‘অসহায়, দুর্বল এবং নিরস্ত্র’ বিন-লাদেনকে হত্যার জন্যেই একতরফা গুলি চালানো হয়েছে। এ ছাড়া, বিন-লাদেনের লাশ সাগরে ফেলে দেয়া হয় নি বরং তাকে আফগানিস্তান কবর দেয়া হয়েছে। হার্শ বলেন, আমেরিকার কথিত সন্ত্রাস বিরোধী অভিযানে মিথ্যা তথ্য দেয়া একটা স্বাভাবিক বিষয়ে পরিণত হয়েছে।