রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও জনগণের জীবনমান উন্নয়নের জন্য অপরিহার্য বলে মন্তব্য করেছেন ইউরোপীয় পার্লামেন্টের মানবাধিকারবিষয়ক উপকমিটির চেয়ারম্যান মৌনির সাতৌরি।
বাংলাদেশ সফর শেষ করার আগে গণমাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ মন্তব্য করেন।
এক প্রশ্নের জবাবে সাতৌরি বলেন, ‘অবশ্যই আগামী ফেব্রুয়ারিতে আসন্ন নির্বাচন সুষ্ঠু ও স্বচ্ছভাবে হতে হবে এবং নির্বাচনের ফলাফলের প্রতি সবার শ্রদ্ধাশীল থাকা উচিত। বাংলাদেশে নির্বাচনের পর স্থিতিশীলতার জন্য এই শর্ত অপরিহার্য।
’
তিনি বলেন, ‘রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য নির্বাচন কেবল একটি ধাপ মাত্র। সব রাজনৈতিক অংশীদাররা যেন ঐকমত্য তৈরি হওয়া সংস্কারগুলোকে সমর্থন করে। সেইসঙ্গে সেগুলোর কার্যকর প্রয়োগ নিশ্চিত হওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’
সাতৌরি বলেন, ‘বাংলাদেশের সঙ্গে ইউরোপীয় ইউনিয়নের পার্টনারশিপ কোঅপারেশন এগ্রিমেন্ট (পিসিএ)-এ মানবাধিকার অঙ্গীকারের মান নিয়মিতভাবে পর্যালোচনা করা হবে।
’
তিনি আরো বলেন, ‘বাংলাদেশের অগ্রগতি এবং গণতান্ত্রিক উত্তরণে ইইউর সমর্থন অব্যাহত থাকবে, তবে মানবাধিকার প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়নই হবে সহযোগিতা গভীর করার প্রধান মাপকাঠি।’
২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারির নির্বাচন ও বাংলাদেশ-ইইউ সম্পর্ক জোরদারের প্রেক্ষাপটে ইউরোপীয় পার্লামেন্টের একটি প্রতিনিধি দল বাংলাদেশ সফর করেছে।
সফরের মূল উদ্দেশ্য ছিল অন্তর্বর্তী সরকারের সুশাসন, মানবাধিকার উন্নয়ন, আন্তর্জাতিক শ্রম মান বাস্তবায়নের কার্যক্রম সম্পর্কে ধারণা নেওয়া এবং এসব বিষয়ে ইইউ-বাংলাদেশ অংশীদাররি নিয়ে আলোচনা করা।
মৌনির সাতৌরি বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি, অতীতের দিকে ফিরে তাকানো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
তবে, অতীতে ক্ষমতার বিভাজনকে সম্মান করা হয়নি, বিচার ব্যবস্থা স্বাধীন ছিল না, নাগরিক সমাজ বা মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ছিল না, সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতাও ছিল না। অথচ এসব বিষয় একটি সুস্থ গণতন্ত্র ও রাষ্ট্রের স্থিতিশীলতার অপরিহার্য নিশ্চয়তা।’
তিনি আশা প্রকাশ করেন, নির্বাচনের পর নতুনভাবে নির্বাচিত সংসদ সদস্যদের সঙ্গে কাজ করার সুযোগ হবে। বলেন, ‘নির্বাচনের ফলাফল যাই হোক না কেন, ক্ষমতাসীনদের মনে রাখতে হবে, স্থিতিশীল শাসন ব্যবস্থার জন্য ক্ষমতার বিভাজন অপরিহার্য।’