ইউক্রেনে পশ্চিমা সেনারা রাশিয়ার জন্য বৈধ লক্ষ্যবস্তু : পুতিন

SHARE

ইউক্রেনে মোতায়েন করা যে কোনো পশ্চিমা বাহিনী মস্কোর সেনাবাহিনীর জন্য ‘বৈধ’ লক্ষ্যবস্তু হবে বলে শুক্রবার সতর্ক করেছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তার একদিন আগে কিয়েভের মিত্ররা জানিয়েছিল, তারা শান্তি চুক্তির ক্ষেত্রে সৈন্য উপস্থিতির প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

ফ্রান্স ও ব্রিটেনের নেতৃত্বে দুই ডজন দেশ বৃহস্পতিবার স্থল, সমুদ্র ও আকাশপথে একটি ‘আশ্বাস বাহিনী’ হিসেবে যোগ দেবে বলে প্রতিশ্রুতি দেয়, যা ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়ার শুরু করা যুদ্ধের অবসান ঘটাতে যেকোনো চুক্তি বাস্তবায়ন পর্যবেক্ষণ করবে।

তিন বছর ছয় মাস ধরে চলা এই লড়াইয়ে হাজারো মানুষের প্রাণ গেছে, লাখো মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে এবং ইউক্রেনের পূর্ব ও দক্ষিণাঞ্চলে বহু এলাকা ধ্বংস হয়েছে—যা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপের সবচেয়ে রক্তক্ষয়ী সংঘাত।

কিয়েভ বলছে, ভবিষ্যতে রাশিয়া যাতে আবার হামলা না চালাতে পারে, সেজন্য পশ্চিমা সেনাদের সমর্থনে নিরাপত্তা নিশ্চয়তা যেকোনো চুক্তির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

দূরপ্রাচ্যের ভ্লাদিভস্তক শহরে এক অর্থনৈতিক ফোরামে পুতিন বলেন, ‘যদি সেখানে কিছু সেনা হাজির হয়, বিশেষ করে এখন যুদ্ধ চলাকালীন সময়ে, আমরা ধরে নেব তারা বৈধ লক্ষ্যবস্তু।’

তিনি আরো বলেন, এমন কোনো বাহিনী মোতায়েন দীর্ঘমেয়াদি শান্তির অনুকূল নয় এবং ইউক্রেনের পশ্চিমাদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সামরিক সম্পর্ককেই তিনি সংঘাতের ‘মূল কারণগুলোর একটি’ হিসেবে অভিহিত করেন।

ইউক্রেনের মিত্ররা এখনো পরিকল্পনার বিস্তারিত প্রকাশ করেনি—কত সেনা এতে থাকবে বা কোন দেশ কতটুকু অবদান রাখবে, তা অজানা।

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির পাশে দাঁড়িয়ে ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাঁখো বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের বলেন, ‘আজ আমাদের ২৬টি দেশ আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়েছে—যে তারা ইউক্রেনে ‘আশ্বাস বাহিনী’ হিসেবে সেনা পাঠাবে বা স্থল, সমুদ্র কিংবা আকাশপথে উপস্থিত থাকবে।’

জেলেনস্কি এ পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, ‘আজ আমি মনে করি, দীর্ঘ সময় পর এটাই প্রথম গুরুতর ও বাস্তব পদক্ষেপ।’

তবে ফরাসি প্রেসিডেন্ট জানিয়েছেন, এই সেনারা ‘সম্মুখ সারিতে’ মোতায়েন হবে না, বরং উদ্দেশ্য হবে ‘নতুন কোনো বড় ধরনের আগ্রাসন প্রতিরোধ করা।’

ইউক্রেনকে আরো বেশি ভূখণ্ড ছেড়ে দেওয়ার ও পশ্চিমা সমর্থন সম্পূর্ণরূপে ত্যাগ করার কট্টরপন্থী দাবিতে অটল মস্কো।
তবে কিয়েভ সেগুলোকে ‘পুরাতন আলটিমেটাম’ বলে উড়িয়ে দিয়েছে।

পুতিন শুক্রবার বলেছেন, যদি কোনো চুক্তি করা সম্ভব হয়, তবে সৈন্যদের কোনো প্রয়োজন নেই। তিনি বলেন, ‘যদি এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যা শান্তির দিকে, দীর্ঘমেয়াদি শান্তির দিকে পরিচালিত করবে, তবে আমি কেবল ইউক্রেনের ভূখণ্ডে তাদের উপস্থিতির অর্থ দেখতে পাচ্ছি না। কারণ যদি চুক্তি হয়, তবে কেউ যেন সন্দেহ না করে যে রাশিয়া তা সম্পূর্ণরূপে মেনে চলবে।’