ইউক্রেনে সেনা পাঠাতে প্রস্তুত ২৬ দেশ: ম্যাক্রোঁ

SHARE

বিশ্বের ২৬টি দেশ ইউক্রেনে সেনা পাঠাতে প্রস্তুত বলে মন্তব্য করেছেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। তিনি বলেছেন, ইউক্রেনে অস্ত্রবিরতির পরদিনই দেশটিতে স্থল, নৌ বা আকাশপথে সেনা পাঠাতে ২৬টি পশ্চিমা মিত্রদেশ আনুষ্ঠানিক প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) রাতে এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

সংবাদমাধ্যমটি বলছে, বৃহস্পতিবার ৩৫ দেশের অংশগ্রহণে আয়োজিত এক বৈঠক শেষে প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ এ ঘোষণা দেন। এ বৈঠককে বলা হচ্ছে ‘কোয়ালিশন অব দ্য উইলিং’। ম্যাক্রোঁ জানান, এ উদ্যোগে যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনও কয়েক দিনের মধ্যে চূড়ান্ত হবে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প অবশ্য ইঙ্গিত দিয়েছেন, ওয়াশিংটনের সহায়তা সম্ভবত আকাশ প্রতিরক্ষার আকারে আসতে পারে। এ নিয়ে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিও তার সঙ্গে কথা বলেছেন এবং “ইউক্রেনের আকাশসীমার সর্বোচ্চ সুরক্ষা” চেয়েছেন।

তবে গত মাসে আলাস্কায় ট্রাম্প ও রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বৈঠকের পর থেকে যুদ্ধ শেষ করার কোনও সম্ভাব্য চুক্তির আশা অনেকটাই ম্লান হয়ে গেছে।

ট্রাম্প আরও বলেছেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নকে (ইইউ) যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে মিলে রাশিয়ার তেল-গ্যাস আমদানি বন্ধ করতে হবে, যাতে অর্থনৈতিকভাবে মস্কোর যুদ্ধযন্ত্র থামানো যায়। ফিনল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার স্টাবের বরাত দিয়ে এ তথ্য জানায় হোয়াইট হাউস।

ইইউ ইতোমধ্যেই ঘোষণা দিয়েছে, ২০২৭ সালের মধ্যে রাশিয়া থেকে সব ধরনের তেল ও গ্যাস আমদানি বন্ধ করবে। হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, গত এক বছরে ইউরোপ রাশিয়ার কাছ থেকে অন্তত ১.১ বিলিয়ন ইউরো মূল্যের জ্বালানি কিনেছে।

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার বলেছেন, পশ্চিমা মিত্ররা এখন ইউক্রেনের প্রতি “অটলভাবে অঙ্গীকারবদ্ধ” এবং যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনে রাশিয়াকে যুদ্ধ থামাতে চাপ দিতে হবে।

যদিও ইউক্রেনে সেনা পাঠানোর প্রতিশ্রুতি প্রকাশ্যে খুব কম দেশই দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র স্পষ্ট জানিয়েছে, তারা স্থল সেনা পাঠাবে না। ইউরোপীয় কূটনীতিকদের মতে, এখনই এ ঘোষণা দিলে সেটি পুতিনের পশ্চিমবিরোধী প্রচারণাকে আরও জোরদার করবে।

মস্কো বলেছে, ইউক্রেনে পশ্চিমা সেনা মোতায়েন করা যাবে না। বরং রাশিয়াকেই অস্ত্রবিরতির গ্যারান্টারদের মধ্যে থাকতে হবে। আর এটি কিয়েভ ও তার মিত্ররা প্রত্যাখ্যান করেছে।

এদিকে অস্ত্রবিরতি নিয়ে আলোচনা চললেও রাশিয়া নতুন করে সেনা পাঠাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন ম্যাক্রোঁ। বৃহস্পতিবার উত্তর ইউক্রেনে রুশ হামলায় মাইন অপসারণে নিয়োজিত দুইজন নিহত হয়েছেন।

ইউক্রেন ও তার মিত্রদের মতে, প্রথমে অস্ত্রবিরতি হওয়া জরুরি, তারপর বৃহত্তর শান্তিচুক্তি। তবে রাশিয়া এতে রাজি নয়।

জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রিডরিখ মের্জ জানিয়েছেন, জেলেনস্কির অংশগ্রহণে একটি শীর্ষ বৈঠকে প্রথম অগ্রাধিকার হবে অস্ত্রবিরতি নিশ্চিত করা এবং পরে শক্তিশালী নিরাপত্তা নিশ্চয়তা দেওয়া।