ইরানে ফেলা বাংকার বাস্টারের ভিডিও দেখাল পেন্টাগন

SHARE

ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক বিমান হামলা ব্যবহার করা বাংকার বাস্টারের সক্ষমতা দেখাতে একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা দফতর পেন্টাগন। এতে দেখা গেছে, কীভাবে ৩০ হাজার পাউন্ডের বাংকার বাস্টার নামে পরিচিত শক্তিশালী বোমা ভূগর্ভস্থ স্থাপনাগুলোতে আঘাত করে ধ্বংস করে দেয়।

পেন্টাগনের প্রকাশিত ভিডিওতে দেখা যায়, একটি বিশালাকৃতির বোমা আকাশ থেকে লক্ষ্যবস্তুতে ছুটে এসে আঘাত করছে। সঙ্গে সঙ্গে ধূলিঝড় সৃষ্টি হয়, তারপর লক্ষ্যবস্তুর অভ্যন্তরে ভয়াবহ বিস্ফোরণ। মাটি কাঁপানো ওই বিস্ফোরণ মুহূর্তেই এক বিস্ময়কর দৃশ্য তৈরি করে।

ব্রিফিংয়ে পেন্টাগনের কর্মকর্তা জানান, ‘বাংকার-বাস্টার’ নামে পরিচিত ৩০ হাজার পাউন্ড ওজনের জিবিইউ-৫৭ ম্যাসিভ অর্ডন্যান্স পেনেট্রেটর, সাধারণ কোনো বোমা নয়। এর বিস্ফোরণের পরে মাটির ওপর তেমন ক্ষতচিহ্ন দেখা যায় না। কারণ এটি মাটির অনেক গভীরে ঢুকে তারপর বিস্ফোরিত হয়। ফোরদো ইউরেনিয়াম প্ল্যান্টের প্রতিটি ভেন্টে ছয়টি করে বোমা পাঠানো হয়েছিল এবং সবগুলোই নির্ভুলভাবে লক্ষ্যে আঘাত হেনেছে।

গত ২১ জুন ইরানের পারমাণবিক কেন্দ্রে চালানো হয় ইতিহাসের অন্যতম বড় অপারেশন। এতে অংশ নেয় ১২৫টির বেশি মার্কিন সামরিক বিমান। বি-টু স্টিলথ বোমার বহর এই অভিযানে ১৪টি বাংকার-বাস্টার বোমা নিক্ষেপ করে, যা ছিল দ্বিতীয় দীর্ঘমেয়াদি বি-টু মিশন।

পেন্টাগনের মতে, এই অভিযানে মূলত বিস্ফোরণের ধাক্কা ও অতিরিক্ত চাপে টানেল ও অভ্যন্তরীণ যন্ত্রপাতির বড় ধরনের ক্ষতি হয়েছে। ভিডিও ফুটেজে বিস্ফোরণের তীব্রতা, আগুনের কুণ্ডলী এবং ধ্বংসযজ্ঞের ভয়াবহ চিত্র ফুটে ওঠে। সামরিক প্রযুক্তির এই উন্নত রূপ ইঙ্গিত দেয়, ভবিষ্যতের যুদ্ধ আর আকাশেই সীমাবদ্ধ থাকবে না, নামবে মাটির গভীরেও।

এদিকে ইরানের ইস্পাহান পারমাণবিক কেন্দ্রে যুক্তরাষ্ট্র কেন ‘বাংকার বাস্টার’ বোমা ব্যবহার করেনি তা প্রথমবারের মতো জানিয়েছে পেন্টাগন। পরমাণু কেন্দ্রটি মাটির অত্যন্ত গভীরে হওয়ায় ওই বোমার কার্যকারিতে নিয়ে সন্দেহ থেকেই এ সিদ্ধান্ত বলে জানানো হয়।

মার্কিন গণমাধ্যম সিএনএনের প্রতিবেদনে বলা হয়, ইরানের মধ্যাঞ্চলে অবস্থিত ইস্পাহানে পারমাণবিক স্থাপনাটি এমনভাবে নির্মাণ করা হয়েছে যে সেখানে প্রচলিত ‘বাংকার বাস্টার’ বোমাও কাজ নাও করতে পারে, এমন সন্দেহ থেকেই হামলার কৌশল বদলায় যুক্তরাষ্ট্র।

মার্কিন সিনেটকে দেয়া গোপন ব্রিফিংয়ে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন জয়েন্ট চিফ অব স্টাফ চেয়ারম্যান জেনারেল ড্যান কেইন। বলেন, ওই কেন্দ্র এত গভীরে যে, এমওপি বা ম্যাসিভ অর্ডনেন্স পেনেট্রেটর এর মত বোমাও সেখানে পৌঁছাতে পারত না। একারণে, ইস্পাহান লক্ষ্য করে পাঠানো হয় সাবমেরিন থেকে ছোড়া টমাহক ক্রুজ মিসাইল।