ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে ‘যুদ্ধাপরাধী’ হিসেবে আখ্যায়িত করে তার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক বিচার শুরু করার আহ্বান জানিয়েছেন। ২৫ জুন নেদারল্যান্ডসের হেগ শহরে আয়োজিত ন্যাটো শীর্ষ সম্মেলনে যোগদানের সময় তিনি ‘কাউন্সিল অফ ইউরোপ’-এর মহাসচিব অ্যালাইন বেরসেটের সঙ্গে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেন, যার মাধ্যমে ইউক্রেন আক্রমণের জন্য একটি বিশেষ আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনাল গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হবে। জেলেনস্কি বলেন, আগ্রাসন করলে শাস্তি পেতে হয় এবং যুদ্ধাপরাধীদের বিচার নিশ্চিত করতে ইউরোপকে একযোগে কাজ করতে হবে। ইতোমধ্যে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত পুতিনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে।
অন্যদিকে, ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যে পাল্টাপাল্টি হামলা অব্যাহত রয়েছে। দোনেৎস্ক ও দিনিপ্রোতে রুশ ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ১৯ জন নিহত ও তিন শতাধিক আহত হয়েছেন। শিশু হাসপাতাল, দোকানপাট ও সরকারি ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পাশাপাশি রাশিয়ার দাবি, ইউক্রেন সীমান্তবর্তী ভোরোনেজ ও রোস্তভ এলাকায় ড্রোন হামলা চালিয়েছে, যার বেশিরভাগ ভূপাতিত হয়েছে। রাশিয়ার পক্ষ থেকে প্রাণহানির কোনো খবর পাওয়া যায়নি।
এই পরিস্থিতিতে যুক্তরাজ্য ইউক্রেনকে ৭০ মিলিয়ন পাউন্ড মূল্যের ৩৫০টি উন্নত আকাশ প্রতিরক্ষা ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহের ঘোষণা দিয়েছে। রাশিয়ার জব্দকৃত সম্পদের সুদ থেকে এ অর্থ সরবরাহ করা হবে। নেদারল্যান্ডসও ইউক্রেনকে ২০৩ মিলিয়ন ডলারের নতুন সহায়তা দিচ্ছে, যার মধ্যে রয়েছে উন্নত ড্রোন শনাক্তকরণ রাডার। হেগে অনুষ্ঠিত ন্যাটো সম্মেলনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে জেলেনস্কির বৈঠক হয়, যেখানে যুদ্ধবিরতি ও ইউক্রেনের নিরাপত্তা নিয়ে আলোচনা হয়। জেলেনস্কি বৈঠককে ‘দীর্ঘ ও তাৎপর্যপূর্ণ’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। একই সময়ে, যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানান, তিনি পুতিনের সঙ্গে যুদ্ধ বন্ধের বিষয়ে কথা বলবেন।
হেগে বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠনের প্রস্তাব ও সামরিক সহায়তার ঘোষণা যুদ্ধকে নতুন মাত্রা দিয়েছে। ইউক্রেনীয় নেতৃত্ব পশ্চিমা জোটের সহযোগিতা নিয়ে কূটনৈতিক ও সামরিক দুই পর্যায়ে চাপ বাড়িয়ে চলেছে, আর রাশিয়া পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় যুদ্ধকে দীর্ঘায়িত করছে। জেলেনস্কির এই আহ্বান পশ্চিমা বিশ্বকে আরও সক্রিয় ভূমিকা নেওয়ার বার্তা বহন করছে