ইরানের প্রতিক্রিয়া আত্মরক্ষামূলক : পররাষ্ট্রমন্ত্রী

SHARE

ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি তেহরানে নিযুক্ত বিদেশি রাষ্ট্রদূতদের সঙ্গে এক বৈঠকে ইরানে দখলদার ইসরায়েলের সাম্প্রতিক হামলাকে ‘সুস্পষ্ট আগ্রাসন’ ও ‘আন্তর্জাতিক আইনের সরাসরি লঙ্ঘন’ বলে অভিহিত করেছেন। ঢাকায় অবস্থিত ইরানের দূতাবাস মঙ্গলবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।

আরাঘচি জানান, এই হামলাগুলো শুক্রবার সকালে কোনো পূর্ব সতর্কতা ছাড়াই শুরু হয়, যখন ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে পরমাণু আলোচনা চলছিল এবং যার ষষ্ঠ দফা ওমানের রাজধানী মাসকাটে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল।

তিনি জোর দিয়ে বলেন, নাতাঞ্জের পরমাণু স্থাপনায় ও তেহরানের আবাসিক এলাকায় হামলা, বেসামরিক নাগরিক, পরমাণু বিজ্ঞানী ও শীর্ষস্থানীয় সামরিক কর্মকর্তাদের নিজ বাড়িতে হত্যা আন্তর্জাতিক আইনের মৌলিক নীতিমালার পরিপন্থী ও বেআইনি।
পাশাপাশি তিনি কিছু দেশের পক্ষ থেকে ইরানের প্রতি সমর্থনের কথা উল্লেখ করে ইউরোপীয় দেশগুলোর দুর্বল প্রতিক্রিয়ার সমালোচনা করে বলেন, কেউ কেউ ইসরায়েলকে দোষারোপ করার পরিবর্তে বরং ইরানকেই লক্ষ্যবস্তু বানিয়েছে।

ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী স্পষ্ট করে জানান, ইরানের পাল্টাহামলা আন্তর্জাতিক আইনে স্বীকৃত ও “বৈধ আত্মরক্ষা” নীতির আওতায়, যা শুধু “অধিকৃত ভূখণ্ডে” অবস্থিত সামরিক ও অর্থনৈতিক লক্ষ্যবস্তুতে সীমাবদ্ধ।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরো বলেন, ইরানের তেল শোধনাগার ও অর্থনৈতিক অঞ্চল লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হওয়ার পর ইসরায়েলের অর্থনৈতিক স্থাপনায় পাল্টা জবাব দেওয়া হয়েছে। তিনি এই আগ্রাসনের বিশ্বব্যাপী নিন্দা জানানোর আহ্বান জানান এবং সতর্ক করে দেন, এ ধরনের বিপজ্জনক কর্মকাণ্ডের প্রতি উদাসীনতা ভয়াবহ পরিণতি ডেকে আনতে পারে।

এ ছাড়া ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইসমাইল বাক্বাঈ, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে লিখেছেন, ‘আগ্রাসী ইসরায়েলি শাসকগোষ্ঠী তাদের
প্রচারে এমনভাবে উপস্থাপন করছে যেন তারা অত্যন্ত নিখুঁতভাবে হামলা চালায় এবং আবাসিক এলাকাগুলোকে লক্ষ্যবস্তু করছে না। কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন। মাত্র তিনটি হামলায় ৭০ জনের বেশি নারী ও শিশু নিহত হয়েছে। চামরান শহরতলির যে ভবনে হামলা চালানো হয়েছিল, সেখানে ধ্বংসস্তূপের
নিচে চাপা পড়া ২০ শিশুর মধ্যে এখনো ১০ জনের মরদেহ উদ্ধার করা যায়নি।
আগ্রাসী শাসকগোষ্ঠী একদিক থেকে ঠিকই বলেছে তারা সত্যিই নির্ভুলভাবে হামলা করে, কিন্তু সেই হামলার লক্ষ্য নারী ও শিশুরা। এই বর্বরতা তাদের স্বভাবসুলভ আচরণ।’

একই সঙ্গে তিনি জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারকে উদ্দেশ করে বলেন, ‘ইরানে ইসরায়েলের হামলা একটি প্রকাশ্য আগ্রাসন। বিশ্ব প্রত্যাশা করে, আপনি আপনার দায়িত্বশীল অবস্থান থেকে এই আগ্রাসনকে স্পষ্টভাবে, কোনো ধোঁয়াশা ও কোনো অজুহাত ছাড়া, বিকৃত ব্যাখ্যার আড়ালে লুকানো ছাড়াই নিন্দা জানাবেন।’