নিরাপত্তাজনিত ঝুঁকি, ইরাকে দূতাবাস আংশিক খালি করবে যুক্তরাষ্ট্র

SHARE

নিরাপত্তাজনিত ঝুঁকি বৃদ্ধির কারণে ইরাকের বাগদাদে নিযুক্ত মার্কিন দূতাবাসের কিছু কর্মী ও তাদের পরিবারের সদস্যদের সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্র সরকারের কর্মকর্তারা। তবে ঠিক কী কারণে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, তা স্পষ্টভাবে জানানো হয়নি। তবে সাম্প্রতিক দিনগুলোতে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে চলমান আলোচনা স্থগিত হওয়ার ইঙ্গিত পাওয়া গেছে।

একজন মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের কর্মকর্তা বিবিসিকে জানিয়েছেন, ‘আমরা নিয়মিত আমাদের দূতাবাসগুলোর জনবল পরিস্থিতি মূল্যায়ন করে থাকি।
সর্বশেষ বিশ্লেষণের ভিত্তিতে, ইরাকে আমাদের মিশনের পরিধি কমানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’

এই সিদ্ধান্ত এমন এক সময়ে এসেছে, যখন ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে দীর্ঘ কয়েক সপ্তাহ ধরে আলোচনা চলছিল। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানকে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির পথ থেকে বিরত রাখতে একটি চুক্তির আশায় ছিলেন।

বুধবার ট্রাম্প বলেন, তিনি এখন ইরানের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ থামানোর ব্যাপারে আগের চেয়ে কম আত্মবিশ্বাসী।
সপ্তাহের শুরুতে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে তার ৪০ মিনিটের একটি টেলিফোন আলাপ হয়েছিল, যা ‘উত্তেজনাপূর্ণ’ ছিল বলে জানানো হয়েছে। নেতানিয়াহু বরাবরই কূটনৈতিক নয়, বরং সামরিক পথেই ইরানকে মোকাবেলার পক্ষে।

বুধবার সন্ধ্যায় মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে মার্কিন কর্মী ও পরিবার সরিয়ে নেওয়ার বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেন, ‘ওদের সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে, কারণ এলাকাটি বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে। আমরা দেখব কী হয়।
’ তিনি আরো বলেন, ‘তাদের নোটিশ দেওয়া হয়েছে সরে যাওয়ার জন্য, আর আমরা দেখছি কী ঘটে।’

পারমাণবিক আলোচনা একটি সংকটময় পর্যায়ে থাকায় এই সরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত প্রকৃত উদ্বেগের ফল কি না, নাকি কৌশলগত সংকেত দেওয়ার অংশ, তা এখনো স্পষ্ট নয়। ইরানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী আজিজ নাসির জাদে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, যদি আলোচনা ভেস্তে যায় এবং যুক্তরাষ্ট্র সামরিক হামলা চালায়, তাহলে ইরান মার্কিন ঘাঁটিগুলোর ওপর পাল্টা হামলা চালাবে।

রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য দেশ যেমন— কুয়েত ও বাহরাইন থেকেও মার্কিন সামরিক কর্মীদের পরিবারের সদস্যদের স্বেচ্ছায় সরিয়ে নেওয়ার অনুমোদন দিয়েছেন।

বুধবার পেন্টাগনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ‘অনেকগুলো ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে যে ইরান এমন কিছু তৈরি করার দিকে এগোচ্ছে, যা দেখতে একটি পারমাণবিক অস্ত্রের মতো।
’ তবে ইরান বলছে, তাদের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ শুধু বেসামরিক বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য এবং পারমাণবিক বোমা তৈরির উদ্দেশ্যে নয়।

এ ছাড়া ব্রিটিশ রয়্যাল নেভির অধীনস্থ ইউকের মেরিটাইম ট্রেড অপারেশনস সংস্থা এক সতর্কবার্তায় বলেছে, মধ্যপ্রাচ্যে সামরিক উত্তেজনা বৃদ্ধির ফলে সামুদ্রিক বাণিজ্য বিঘ্নিত হতে পারে।

মার্কিন কর্মী প্রত্যাহারের খবর প্রকাশের পর তেলের দাম তাৎক্ষণিকভাবে ৪ শতাংশেরও বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে, কারণ এতে সরবরাহ ঝুঁকির আশঙ্কা বেড়েছে। মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তরের মতে, বর্তমানে ইরাকে প্রায় ২ হাজার ৫০০ মার্কিন সেনা অবস্থান করছে।

সূত্র : বিবিসি