আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি) সোমবার এক জমকালো অনুষ্ঠানে ক্রিকেটের ইতিহাস গড়া সাতজন কিংবদন্তিকে আইসিসি হল অব ফেমে অন্তর্ভুক্তির ঘোষণা দিয়েছে। এই বছর তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হওয়া খেলোয়াড়রা হলেন—ম্যাথু হেইডেন, হাশিম আমলা, মহেন্দ্র সিং ধোনি, গ্রায়েম স্মিথ, ড্যানিয়েল ভেট্টোরি, সানা মীর এবং সারাহ টেলর।
লন্ডনের ঐতিহাসিক অ্যাবে রোড স্টুডিওতে আয়োজিত এ আয়োজনে আইসিসি চেয়ারম্যান জয় শাহ এই নবনির্বাচিতদের হাতে সম্মাননা তুলে দেন।
জয় শাহ বলেন, ‘আইসিসি হল অব ফেমের মাধ্যমে আমরা ক্রিকেটের ইতিহাস গড়া সেরা খেলোয়াড়দের শ্রদ্ধা জানাই, যারা তাদের অসাধারণ ক্যারিয়ারের মাধ্যমে খেলার ঐতিহ্য গড়েছেন এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করেছেন।
’
এক নজরে দেখে নেয়া যাক এই ৭ কিংবদন্তির অর্জন
ম্যাথু হেইডেন (অস্ট্রেলিয়া)
টেস্ট: ১০৩ | রান: ৮৬২৫ | গড়: ৫০.৭৩
ওডিআই: ১৬১ | রান: ৬১৩৩ | গড়: ৪৩.৮০
টি-২০আই: ৯ | রান: ৩০৮ | গড়: ৫১.৩৩
অস্ট্রেলিয়ার বিধ্বংসী ওপেনার হেইডেন তার শক্তিশালী ব্যাটিংয়ের কারণে বিশ্বের সেরা বোলারদের আতঙ্কে পরিণত হয়েছিলেন। ২০০৭ বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক ছিলেন তিনি। অস্ট্রেলিয়ার হয়ে ২০০৩ ও ২০০৭ বিশ্বকাপ জয়ের পাশাপাশি টেস্টে অজিদের রাজত্বে বড় অবদান ছিল এই কিংবদন্তি ক্রিকেটারের। হল অব ফেইমে জায়গা পেয়ে হেইডেন বলেন, ‘আমার অনেক আদর্শের নাম আছে এই তালিকায়, তাদের পাশে নিজের নাম দেখতে পাওয়া অভাবনীয়।
’
হাশিম আমলা (দক্ষিণ আফ্রিকা)
টেস্ট: ১২৪ | রান: ৯২৮২ | গড়: ৪৬.৬৪
ওডিআই: ১৮১ | রান: ৮১১৩ | গড়: ৪৯.৪৬
টি-২০আই: ৪৪ | রান: ১২৭৭ | গড়: ৩৩.৬০
দক্ষিণ আফ্রিকার এই ব্যাটসম্যান ছিলেন দলের ভরসার জায়গা। তিনিই দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে প্রথম ট্রিপল সেঞ্চুরি করেছিলেন (৩১১*)। আমলা বলেন, ‘এই স্বীকৃতি পাওয়া অত্যন্ত সম্মানের, বিশেষ করে আমার প্রিয় বন্ধু গ্রায়েম স্মিথের সঙ্গে একই বছর অন্তর্ভুক্তি – এটি বিশেষ অনুভূতি।’
মহেন্দ্র সিং ধোনি (ভারত)
টেস্ট: ৯০ | রান: ৪৮৭৬ | ডিসমিসাল: ২৯৪
ওডিআই: ৩৫০ | রান: ১০৭৭৩ | ডিসমিসাল: ৪৪৪
টি-২০আই: ৯৮ | রান: ১৬১৭ | ডিসমিসাল: ৯১
ভারতের সফলতম অধিনায়ক ধোনি তিনটি আইসিসি শিরোপা (টি২০ বিশ্বকাপ ২০০৭, ওডিআই বিশ্বকাপ ২০১১, চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি ২০১৩) জিতে ইতিহাস গড়েছেন।
ধোনি বলেন, ‘এই স্বীকৃতি আমার জীবনের অন্যতম গর্বের মুহূর্ত, যা আমি চিরকাল লালন করব।’
গ্রায়েম স্মিথ (দক্ষিণ আফ্রিকা)
টেস্ট: ১১৭ | রান: ৯২৬৫ | গড়: ৪৮.২৫
ওডিআই: ১৯৭ | রান: ৬৯৮৯ | গড়: ৩৭.৯৮
টি-২০আই: ৩৩ | রান: ৯৮২ | গড়: ৩১.৬৭
মাত্র ২২ বছর বয়সে দক্ষিণ আফ্রিকার নেতৃত্ব পান স্মিথ এবং এক নতুন যুগের সূচনা করেন। তিনি বলেন, ‘এই সম্মান শুধুমাত্র আমার নয়, এটি দক্ষিণ আফ্রিকার ক্রিকেটেরও জয়।’
ড্যানিয়েল ভেট্টোরি (নিউজিল্যান্ড)
টেস্ট: ১১৩ | রান: ৪৫৩১ | উইকেট: ৩৬২
ওডিআই: ২৯৫ | রান: ২২৫৩ | উইকেট: ৩০৫
টি-২০আই: ৩৪ | রান: ২০৫ | উইকেট: ৩৮
বিশ্বমানের বাঁহাতি স্পিনার ভেট্টোরি ছিলেন নিউজিল্যান্ডের জন্য অমূল্য সম্পদ। টেস্টে চার হাজারের বেশি রান এবং ৩০০’র বেশি উইকেট পাওয়াদের মধ্যে হাতে গোনা কয়েকজনের একজন তিনি।
হল অব ফেইমে জায়গা পেয়ে তিনি বলেন, ‘এই তালিকায় জায়গা পেয়ে আমি গর্বিত, আবেগাপ্লুত।’
সানা মীর (পাকিস্তান)
ওডিআই: ১২০ | রান: ১৬৩০ | উইকেট: ১৫১
টি-২০আই: ১০৬ | রান: ৮০২ | উইকেট: ৮৯
পাকিস্তানের নারী ক্রিকেটের পথিকৃৎ সানা মীর হলেন প্রথম পাকিস্তানি নারী যিনি এই স্বীকৃতি পেলেন। তিনি বলেন, ‘একসময় স্বপ্ন দেখতাম যেন আমাদের দেশে নারীদের একটি ক্রিকেট দল হয়, সে স্বপ্ন সত্যি হয়েছে।’
সারাহ টেলর (ইংল্যান্ড)
টেস্ট: ১০ | রান: ৩০০ | ডিসমিসাল: ২০
ওডিআই: ১২৬ | রান: ৪০৫৬ | ডিসমিসাল: ১৩৮
টি২০আই: ৯০ | রান: ২১৭৭ | ডিসমিসাল: ৭৪
বিশ্বের অন্যতম সেরা উইকেটকিপার ব্যাটার সারাহ ছিলেন ইংল্যান্ডের জয়ের গুরুত্বপূর্ণ কুশলী। তিনি বলেন, ‘এই স্বীকৃতি পাওয়া আমার জীবনের অন্যতম বড় গর্বের মুহূর্ত।’