হজের খুতবায় ফিলিস্তিনিদের জন্য সাহায্য প্রার্থনা

SHARE

আজ পবিত্র আরাফাতের দিন। সারা বিশ্বের ১৫ লাখে বেশি হাজি হজের মূল কার্যক্রম পালন করতে আরাফাতের ময়দানে উপস্থিত হয়েছেন। লাখ লাখ হাজির উদ্দেশে মসজিদে নামিরা থেকে হজের খুতবা দেন মক্কার পবিত্র মসজিদুল হারামের ইমাম ও খতিব শায়খ ড. সালেহ বিন হুমাইদ।

হজের খুতবায় গণহত্যা ও নিপীড়নের শিকার ফিলিস্তিনিদের জন্য সাহায্য এবং শত্রুর ওপর তাদের বিজয়ের জন্য দোয়া করেছেন তিনি।
এ সময় মুসলিম ঐক্য, শাসকদের শক্তি বৃদ্ধি ও ভালো কাজের সামর্থ্যের জন্য প্রার্থনা করা হয়।

স্থানীয় সময় আজ বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টায় ও বাংলাদেশ সময় বিকেল ৩টার পর হজের খুতবা শুরু হয়।

হজের খুতবায় ড. সালেহ বলেছেন, ‘হে আল্লাহ, আপনি আমাদের ফিলিস্তিনি ভাইদের জন্য সহযোগী হোন। হে আল্লাহ, আপনি তাদের দায়িত্ব গ্রহণ করুন।
হে আল্লাহ, আপনি তাদের ক্ষুধার্তদের আহারের ব্যবস্থা করুন, বস্ত্রহীনদের বস্ত্র দান করুন। আপনি তাদের বিতাড়িতদের সাহায্য করুন। আপনি ভীতসন্ত্রস্তদের নিরাপত্তা দিন। তাদেরকে শত্রুদের ক্ষতি থেকে রক্ষা করুন।
হে আল্লাহ, আপনি আপনার শক্তিমত্তা দিয়ে শত্রুর বিরুদ্ধে তাদের সাহায্য করুন। হে শক্তিশালী ও মহাপরিক্রম সত্ত্বা।’

মুসলিম শাসকদের জন্য দোয়া করে তিনি বলেন, ‘হে আল্লাহ, আপনি মুসলিমদের শাসকদের ভালো কাজ করার শক্তি দিন। তাদের আপনি হেদায়েত ও তাকওয়া অবলম্বনের মাধ্যম হিসেবে কবুল করুন। হে আল্লাহ, আপনি হারামাইন শরিফাইনের খাদেম বাদশাহ সালমান ও যুবরাজ মুহাম্মদ বিন সালামকে শক্তি-সামর্থ্য দিন এবং ইসলাম ও মুসলিমদের সেবার জন্য তাদের উত্তম বিনিময় দিন।
হে আমাদের রব, আপনি আমাদের দুনিয়ায় উত্তম বিনিময় দিন, আখিরাতে কল্যাণ দিন এবং আমাদের জাহান্নামের শাস্তি থেকে পরিত্রাণ দিন।’

হজের খুতবায় মুসলিম উম্মাহকে ঐকবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে মসজিদুল হারামের ইমাম বলেন, ‘শয়তান মুসলমানদের প্রকাশ্য শত্রু। মুসলমানদের উচিত পরস্পরের মধ্যে ঐক্য ও সংহতি বজায় রাখা। আল্লাহ তায়ালা ইসলামকে মানবজাতির জন্য দ্বিন হিসেবে পছন্দ করেছেন। তাই ঈমানদারদের উচিত আল্লাহকে ভয় করা এবং তাকওয়া অবলম্বন করা। তাকওয়া ঈমানদারের বৈশিষ্ট্য।’

খুতবার শুরুতে মহান আল্লাহর প্রশংসা ও শেষ নবী মুহাম্মদ (সা.)-এর দরুদ ও সালাম পাঠ করে সমবেত হাজিদের মহানবী (সা.)-এর নির্দেশনা অনুসরণ ও নিষেধাজ্ঞা থেকে বিরত থাকার উপদেশ দেন তিনি। তিনি বলেন, ‘আপনারা সবাই জীবনের সবক্ষেত্রে তাকওয়া তথা আল্লাহভীতি অবলম্বনের করুন। মহান আল্লাহ ইরশাদ করেছেন, ‘যারা তাকওয়া অবলম্বন করে, তাদের জন্য তাদের রবের কাছে আছে এমন জান্নাত, যার তলদেশে নদ-নদী প্রবাহিত, যেখানে তারা সবসময় থাকবেন এবং (তাদের জন্য আছে) পবিত্র স্ত্রী ও আল্লাহর পক্ষ হতে সন্তুষ্টি। আল্লাহ সব বান্দাকে ভালোভাবে দেখছেন।’ (সুরা আলে ইমরান, আয়াত : ১৫)

মহান আল্লাহ হাজিদের উদ্দেশ্যে পবিত্র কোরআনে বলেছেন, ‘(হজের সময়) তাকওয়া অবলম্বন করো। মূলত তাকওয়াই উৎকৃষ্ট অবলম্বন।’ (সুরা বাকারা, আয়াত : ১৯৭)

প্রতিবছরের মতো এবারও পবিত্র হজের খুতবা অনুবাদ সম্প্রচার করা হচ্ছে। সৌদি আরবের পবিত্র মসজিদুল হারাম ও মসজিদে নববীর তত্ত্বাবধানকারী বিভাগের অধীনে এবার বাংলাসহ ৩৫টি ভাষায় খুতবার অনুবাদ শোনা যাবে।

এ বছর ষষ্ঠবারের মতো বাংলা ভাষায় হজের খুতবা অনুবাদ করা হয়। খুতবার বাংলা অনুবাদ উপস্থাপন করেন ড. মুহাম্মদ খলীলুর রহমান। তিনি ছাড়াও অনুবাদ কার্যক্রমে আরো রয়েছেন আ ফ ম ওয়াহিদুর রহমান, মুবিনুর রহমান ও নাজমুস সাকিব।

বাংলা ভাষায় হজের খুতবার অনুবাদ শোনা যায়। এজন্য যেকোনো ডিভাইস থেকে মানারাতুল হারামাইন (manaratalharamain) ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে বাংলা ভাষা নির্বাচন করতে হবে। আর ইউটিউব চ্যানেল (tubesermon) থেকেও লাইভ বাংলা অনুবাদ শোনা যাবে।