একটি সাপ্লিমেন্ট ব্র্যান্ডের প্রমোশন করে তোপের মুখে পড়েছেন দক্ষিণের জনপ্রিয় অভিনেত্রী সামান্থা রুথ প্রভু। সম্প্রতি ইনস্টাগ্রামে একটি সাপ্লিমেন্ট ব্র্যান্ড-এর পন্যের প্রচার করেছেন তিনি। সামান্থা দাবি করেন, এই পণ্যে এনএমএন (নিকোটিনামাইড মনোনিউক্লিওটাইড) আছে যা এনএডি (নিকোটিনামাইড এডেনাইন ডিনিউক্রিওটাইড)-এর মাত্রা বাড়াতে সহায়তা করে। তবে সামান্থার এই দাবির সমালোচনা করেছেন ড. সাইরিয়াক অ্যাবি ফিলিপস, যিনি অভিনেত্রীকে “বিজ্ঞানে অজ্ঞ এক চলচ্চিত্র তারকা” এবং সেই কম্পানিটিকে ‘প্রতারণামূলক’ কম্পানি বলেছেন।
ইনস্টাগ্রামে সামান্থা তার পোস্টে লেখেন, “বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শরীরে ‘এনএডি’ হ্রাস পায়, যার ফলে এনার্জি কমে। শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে এবং মনোযোগ হ্রাস পায়।’ তিনি দাবি করে লেখেন, ‘এনএমএন’ এই অবস্থার সহায়তায় কাজ করতে পারে এবং তিনি যে সাপ্লিমেন্টটি প্রচার করছেন তাতে রয়েছে ৯৯ শতাংশেরও বেশি বিশুদ্ধ ‘এনএমএন’ রয়েছে।
এদিকে, ‘দ্য লিভার ডক’ হিসেবে পরিচিত ড. ফিলিপস ইনস্টাগ্রামে সামান্থার এই প্রচারণার তীব্র সমালোচনা করেছেন।
অভিনেত্রীর পোস্টের স্ক্রিনশট শেয়ার করে তিনি লেখেন, ‘বিজ্ঞানের কোনো জ্ঞান নেই এমন চলচ্চিত্র তারকারা তাদের কোটি অনুসারীদের এমন সাপ্লিমেন্ট বিক্রি করে প্রতারিত করছেন, যেগুলো আদৌ কাজ করে না।’
তিনি আরও লেখেন, ‘সাপের তেল বিক্রেতাদের থেকে সাবধান থাকুন। তারা নানা রূপে আসে। সচেতন ভোক্তা হন।
প্রমাণ ও বিজ্ঞানের ভিত্তিতে এগিয়ে চলুন। প্রকৃত চিকিৎসকদের কথা শুনুন।’
চিকিৎসা বিজ্ঞানের তথ্য অনুসারে, ‘এনএমএন’ হল এক ধরনের কোএনজাইম, যা বিপাকক্রিয়ার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ‘এনএমএন’ এমন এক উপাদান যা দাবি করা হয় ‘এনএডি’ পুনরুদ্ধার করতে সাহায্য করে। কিন্তু ড. ফিলিপস বলেন, এই দাবিগুলোর পেছনে বাস্তব কোনও বৈজ্ঞানিক প্রমাণ নেই।
তিনি আরও ব্যাখ্যা করেন ‘এনএমএন’ শরীরে সঠিকভাবে শোষিত হয় না এবং যেসব অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে পৌঁছানোর কথা বলা হয় সেখানে কার্যকর মাত্রায় পৌঁছায় না। বাস্তবে, মুখে খাওয়া ‘এনএমএন’ শরীরে প্রবেশ করার আগে সাধারণ নিকোটিনামাইডে রূপান্তরিত হয় এবং তারপর যা হয় তা খুব অল্প ও অস্থায়ী। ড. ফিলিপস বেশ কিছু গবেষণাপত্র ও পরিসংখ্যান শেয়ার করেছেন তার বক্তব্যের সমর্থনে। তিনি দাবি করেন, ‘এনএমএন’ নিয়ে এখন পর্যন্ত মানুষের ওপর পরীক্ষাগুলো হয়েছে ছোট পরিসরে, স্বল্প সময়ের জন্য এবং অনেকটাই অপ্রাসঙ্গিক মাপকাঠিতে, যেগুলো গুরুত্বপূর্ণ ক্লিনিক্যাল ফলাফল দিতে পারে না।