ইরান তিন মাসের ব্যবধানে উচ্চমাত্রায় সমৃদ্ধ ইউরেনিয়ামের মজুত ৫০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়িয়েছে বলে দাবি করেছে আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থা। দেশটির কাছে ৪০৮ কেজি ইউরেনিয়াম আছে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি। তবে ইরান বিষয়টি অস্বীকার করে বলেছে, এই প্রতিবেদন রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও ভিত্তিহীন।
পারমাণবিক ইস্যুতে সমঝোতায় আসতে একের পর এক বৈঠক করছে যুক্তরাষ্ট্র ও ইরান। যুক্তরাষ্ট্রের দাবি, ইরানের কাছে কোনোভাবেই পারমাণবিক অস্ত্র থাকতে পারবে না।
অন্যদিকে, ইরানের দাবি, তারা কোনোভাবেই ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের প্রক্রিয়া বন্ধ করবে না। এমন পাল্টাপাল্টি দাবির মধ্যেই, এ ইস্যুতে এক বিস্ফোরক তথ্য উপস্থাপন করেছে আন্তর্জাতিক আণবিক সংস্থা বা আইএইএ।
সংস্থাটির এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, গেল তিন মাসে উচ্চমাত্রায় সমৃদ্ধ ইউরেনিয়ামের মজুত ৫০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়িয়েছে তেহরান। ফেব্রুয়ারির তুলনায় এখন ইরানের কাছে এই ধরনের ইউরেনিয়ামের পরিমাণ প্রায় ৪০৮ কেজি। এ মজুতকে নজীরবিহীন হিসেবে আখ্যা দিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে আইএইএ।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ইরান এখনও এমন তিনটি কেন্দ্রে পরিদর্শনের অনুমতি দিচ্ছে না, যেখানে অতীতে গোপনে পারমাণবিক উপাদান ব্যবহারের অভিযোগ আছে। সংস্থাটি বলছে, বিষয়টি শঙ্কার।
তবে এই প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করেছে ইরান। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, আইএইএ ইসরাইলের জাল নথির ভিত্তিতে প্রতিবেদন তৈরি করেছে। তেহরান দাবি করেছে, তারা সংস্থাকে সম্পূর্ণ সহযোগিতা করেছে এবং অভিযোগগুলো ভিত্তিহীন ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
এদিকে, ইরানি পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি জানান, যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবনা নিয়ে ওমানের মধ্যস্থতায় আলোচনা চলছে এবং ইরান নিজেদের জাতীয় স্বার্থ ও অধিকার অনুযায়ী তা মূল্যায়ন করছে।
এই অবস্থায় ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এই প্রতিবেদনকে গুরুতর অভিহিত করে বিশ্ব সম্প্রদায়কে তৎপর হবার আহ্বান জানিয়েছেন।
বিশ্লেষকদের মতে, এটি মূলত আলোচনায় প্রভাব বিস্তারের একটি দ্বিমুখী কৌশল। ইরান যেমন পরমাণু সমৃদ্ধকরণ বাড়িয়ে চাপ তৈরি করছে, তেমনি যুক্তরাষ্ট্রও নিষেধাজ্ঞা বা জাতিসংঘে বিষয়টি তোলার মতো পদক্ষেপ নিতে পারে।