জয়া আহসানের বক্তব্য উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, বললেন নির্মাতা লাজুক

SHARE

শেরপুরের নালিতাবাড়ীর ভারতীয় সীমান্তবর্তী এলাকার গারো পাহাড়ে ও বিভিন্ন লোকেশনে চলছে নতুন সিনেমাটির দৃশ্যধারণ। যেখানে বন্য হাতির অনেক আনাগোনা রয়েছে। এমনকি শুটিংস্পটে হাতির আক্রমণের ঘটনাও ঘটেছে। অভিনেতা সজল বলেন, ‘গত ৯ দিন ধরে এখানে শুটিং করছি।
এখানে প্রায় সময়ই বন্য হাতি আক্রমণ করে। গতকাল আমাদের সেটে প্রায় ৮-৯টা বন্য হাতি আক্রমণ করেছিল। সবাই ভীষণ ভয় পেয়ে গিয়েছিল। পরে কোনোভাবে তাদের সেখানে থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
সেভাবে কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি আমাদের।’

এদিকে বনের ভেতরে এই শুটিং মোটেও ভালোভাবে নিচ্ছেন না দুই বাংলার জনপ্রিয় অভিনেত্রী জয়া আহসান। তিনি মনে করছেন, এই শুটিংয়ের ফলে বনের পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। ফলে সজল-বুবলির এই সিনেমার শুটিং বন্ধে বন বিভাগের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

এ বিষয়ে বৃহস্পতিবার (২৯ মে) সকালে একটি সংবাদের ফটোকার্ড শেয়ার করে জয়া লিখেছেন, ‘এই আরেক উপদ্রব বনের ভেতর। বন বিভাগের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। মন চাইলেই লাইট ক্যামেরা অ্যাকশন শুরু করা যায়?’

ক্ষুব্ধ জয়া প্রশ্ন তুলে আরো লেখেন, ‘মাইকের শব্দ, শুটিং টিমের বর্জ্য, গান-বাজনা এগুলো কি অ্যালাউ করা ঠিক হবে এ রকম একটা সেন্সিটিভ জায়গায়?’ জয়ার এই প্রশ্নের সঙ্গে অনেকেই একমত পোষণ করেছেন। তারা বলছেন, বনের পরিবেশে শুটিং ইউনিটের নানা আয়োজন পশু-পাখিদের আতঙ্কিত করে তোলে।

জয়ার ওই পোস্টে নেটিজেনদের অনেকে সহমত পোষণ করেন।
কেউ মন্তব্যের ঘরে ‘শাপলা শালুক’ ছবির শুটিং টিমের বিরুদ্ধে কড়া আইনি নোটিশ পাঠানো হোক— দাবি করেন।

এদিকে জয়ার এই পোস্টকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে মনে করছেন এর পরিচালক রাশেদা আক্তার লাজুক। লাজুক বলেন, ‘এটা দুঃখজনক। অবাক হয়েছি। কেননা শুটিংয়ে হাতির আক্রমণ হয়েছে শুনে তিনি (জয়া আহসান) ফোন করে আমাদের একটা খবর নিতে পারতেন। এখানে বুবলি আছেন, আব্দুন নূর সজল আছেন। সজলের সঙ্গে তার অনেক কাজ হয়েছে। ওই জায়গা থেকেও খোঁজ নিতে পারতেন আমরা ঠিক আছি কি না। তা না করে উল্টো আমাদের শুটিং বন্ধের আহ্বান জানালেন! ওনার কাছে এ রকম আচরণ আশা করিনি।’

লাজুক জানান, তারা বনে শুটিং করছেন না। পার্শ্ববর্তী গ্রামে পেতেছেন ‘শাপলা শালুক’-এর সেট। ভুল তথ্যে দিশাহারা না হয়ে খোঁজ নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে লেখা উচিত ছিল বলে মনে করেন তিনি। তার ভাষ্য, ‘উনি (জয়া আহসান) লিখেছেন, আমরা বনের ভেতর শুটিং করেছি। এটা একেবারেই ভুল। আমরা গ্রামে শুটিং করছি। সিনেমাটির মাধ্যমে বাংলাদেশের সৌন্দর্যকে বিশ্বের কাছে তুলে ধরতে চাইছি। সে জন্যই সুন্দর একটি গ্রাম বেছে নিয়েছি। আমরা বনে হাতির কাছে যাইনি। বরং হাতি আমাদের এখানে এসেছে। কেননা বনে খাদ্যসংকট দেখা দিলে হাতি গ্রামে আক্রমণ করে, সে রকমই হয়েছে। আর উনি না জেনে লিখে দিলেন, বনের ভেতর শুটিং করেছি। ওনার এই কথায় আমি, শবনম বুবলি, সজলসহ সবাই অবাক হয়েছি। এটা নিয়েই বলাবলি করছিলাম। আর একটা কথা, জয়া আহসান একাই শুধু অ্যানিমেল লাভার নন, পশু-পাখির প্রতি আমাদেরও ভালোবাসা আছে।’

পরিচালক মনে করছেন, জয়া দেশের চলচ্চিত্রাঙ্গনকে অসম্মান করেছেন। তিনি বলেন, ‘আমরা শুটিংয়ে কোনো বর্জ্য ফেলি না। শুধু আমরা না, আমাদের চলচ্চিত্রাঙ্গনের কেউ শুটিংয়ে বর্জ্য ফেলেন না। তার মানে কি উনি শুটিংয়ে বর্জ্য ফেলেন? বর্জ্য ফেলার কথা বলে উনি শুধু আমাদের অপমান করেননি, দেশের সংস্কৃতি চলচ্চিত্রাঙ্গনের সবাইকে অসম্মান ও প্রশ্নবিদ্ধ করেছেন।’

লাজুক মনে করছেন, জয়া উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছেন। তার কথায়, ‘ওই পোস্টে তিনি বন বিভাগের কাছে ছবির শুটিং বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন। আমি মনে করি, তার এই পোস্ট অবশ্যই উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। কেননা শুরু থেকেই ছবিটি আটকে দিতে নানা ষড়যন্ত্র চলছে। দুই বছর প্রজেক্টটি আটকে ছিল। সব চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে আমি ছবিটা করছি।’

এ ছবিতে সজল-বুবলি ছাড়াও অভিনয় করছেন সুমন আনোয়ার, আয়মান শিমলা, দিলরুবা দোয়েল, রফিকুল রুবেল, বাপ্পী প্রমুখ।