গণতন্ত্রকে যাতে আর কেউ কঠিন শৃঙ্খলে বন্দি করতে না পারে সে জন্য স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বে বিশ্বাসী গণতান্ত্রিক শক্তিকে সার্বক্ষণিক সজাগ থাকার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বাণীতে তিনি এ আহ্বান জানান।
একুশে ফেব্রুয়ারি আমাদের জাতীয় জীবনের অবিস্মরণীয় একটি অধ্যায় উল্লেখ করে তারেক রহমান বলেন, ‘আমি এই দিনে সব শহীদকে গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছি। একুশে ফেব্রুয়ারিতে মাতৃভাষার মর্যাদা রক্ষার জন্য বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিয়েছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা।
এই দিনেই সালাম, বরকত, রফিক, জব্বারসহ অনেকেই জীবন উৎসর্গ করেছিলেন। তাদের এই মহান আত্মত্যাগের বিনিময়ে রচিত হয়েছে আমাদের জাতীয় মুক্তি আন্দোলনের প্রথম সোপান। ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস এখন বিশ্বব্যাপী পালিত হয়। বায়ান্ন সালের ২১ ফেব্রুয়ারির রক্তাক্ত পথ ধরেই এ দেশের সব গণতান্ত্রিক এবং স্বাধিকারের সংগ্রাম তীব্র হয়ে এক রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মধ্য দিয়ে অর্জিত হয় আমাদের জাতীয় স্বাধীনতা।
জনগণ শৃঙ্খলমুক্ত হয়, ফিরে পায় একটি স্বাধীন ভূখণ্ড।’
তিনি বলেন, ‘দেশ স্বাধীন হলেও নতুন করে নানাভাবে আধিপত্যবাদী শক্তি আমাদের ভাষা, সংস্কৃতির ওপর আগ্রাসন চালানোর ষড়যন্ত্র করে আসছে মহলবিশেষের তাবেদারির জন্য, যাতে আমরা বিশ্বসমাজে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে না পারি। কিন্তু এ দেশের মানুষ সব সময় স্বৈরাচার এবং দেশি-বিদেশি কুচক্রীদের অদম্য সাহসে প্রতিহত করে এসেছে। এ দেশের মানুষকে যাতে আটকে রাখতে না পারে এ জন্য ন্যায়বিচার, মানবিক সাম্য তথা প্রকৃত গণতন্ত্রকে শক্তিশালী ও চিরস্থায়ী করতে আমাদের ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।
গণতন্ত্রকে যাতে আর কেউ কঠিন শৃঙ্খলে বন্দি করতে না পারে সে জন্য স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বে বিশ্বাসী গণতান্ত্রিক শক্তিকে সার্বক্ষণিক সজাগ থাকতে হবে। এ ক্ষেত্রে একুশের অম্লান চেতনা আমাদের উদ্বুদ্ধ করবে।’
তারেক রহমান বলেন, ‘বাংলাদেশি জাতির ইতিহাস ও ঐতিহ্যের শিকড় অনুসন্ধান তথা আত্ম অন্বেষায় ভাষাচেতনার স্ফূরণ ঘটে। বাংলাদেশের ভাষা আন্দোলন আমাদের জাতীয়তাবাদ ও ঐক্যের অনুভূতি জাগ্রত করে। আমাদের ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করায় গোটা বিশ্বে মাতৃভাষার মর্যাদা রক্ষার আন্দোলন হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে।
মহান একুশে ফেব্রুয়ারি উপলক্ষে আমি বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সংগঠন আয়োজিত কর্মসূচির সাফল্য কামনা করছি।’
বাণীতে বায়ান্নর ভাষাশহীদদের রুহের মাগফিরাত কামনা করেন ও তাদের শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনা জানান তারেক রহমান। ভাষাসৈনিকদের শ্রদ্ধা ও অভিনন্দন জানান এবং তাদের পরিবারের সুখ, শান্তি ও দীর্ঘায়ু কামনা করেন তিনি।