গণতান্ত্রিক কঙ্গো প্রজাতন্ত্রের পূর্বে অবস্থিত এম২৩ বিদ্রোহীরা পূর্বাঞ্চলের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর বুকাভুতে প্রবেশ করেছে।
এম২৩ বিদ্রোহীদের অন্তর্ভুক্ত কঙ্গো নদী জোটের নেতা কর্নেইল নাঙ্গা রয়টার্স সংবাদ সংস্থাকে জানিয়েছেন, বিদ্রোহীরা শুক্রবার সন্ধ্যায় দক্ষিণ কিভু প্রাদেশিক রাজধানীতে প্রবেশ করেছে এবং আজ শনিবারও তাদের অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখবে।
যুদ্ধবিরতি এবং শান্তি আলোচনা পুনরায় শুরু করার জন্য আন্তর্জাতিক আহ্বান সত্ত্বেও রুয়ান্ডা সমর্থিত সশস্ত্র যোদ্ধাদের অগ্রগতি ঘটেছে। বিদ্রোহীদের অগ্রযাত্রার ফলে সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে লাখ লাখ মানুষ তাদের বাড়িঘর ছেড়ে যেতে বাধ্য হয়েছে।
গত মাসে প্রতিবেশী রুয়ান্ডার সমর্থিত তুতসি নেতৃত্বাধীন এম২৩ খনিজসমৃদ্ধ পূর্বের প্রধান শহর গোমা দখল করে। কঙ্গো সরকার রুয়ান্ডার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে, তারা তাদের সম্পদ থেকে সুবিধা নেওয়ার জন্য এই অঞ্চলে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে। তবে রুয়ান্ডা তা অস্বীকার করেছে।
২০১২ সালে এম২৩ পূর্ববর্তী সংঘাতে গোমা সংক্ষিপ্তভাবে দখল করেছিল, কিন্তু দক্ষিণ কিভু প্রদেশের রাজধানী বুকাভু দখল এই অঞ্চলের সাম্প্রতিক ইতিহাসে একটি নতুন পর্ব।
রুয়ান্ডার সীমান্তবর্তী এই শহরটি কিভু হ্রদের দক্ষিণ প্রান্তে অবস্থিত এবং স্থানীয় খনিজ বাণিজ্যের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ট্রানজিট পয়েন্ট।
কিন্তু দক্ষিণ কিভুর ডেপুটি গভর্নর জিন এলেকানো বিবিসিকে জানিয়েছেন, বুকাভুর উপকণ্ঠে তীব্র সংঘর্ষ হয়েছে। স্থানীয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুসারে, আরো উত্তরে অবস্থিত মায়বা গ্রামে একটি গির্জায় ৭০টি মৃতদেহ পাওয়া গেছে।
উত্তর কিভুর স্থানীয় কমিউনিটি কো-অর্ডিনেটর ভিয়ান্নে ভিটসওয়াম্বা ডিআর কঙ্গো সংবাদ সংস্থাকে জানিয়েছেন, মৃতদেহগুলো বাঁধা অবস্থায় পাওয়া গেছে।
ইসলামিক স্টেটের সঙ্গে যুক্ত একটি গোষ্ঠী অ্যালাইড ডেমোক্রেটিক ফোর্সেস (এডিএফ) বিদ্রোহীদের দোষ দেওয়া হয়েছে, তবে বিবিসি এই প্রতিবেদনটি নিশ্চিত করতে পারেনি।
বিবিসি বুকাভুর বাসিন্দাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে জানিয়েছে, কর্তৃপক্ষ বাসিন্দাদের ঘরের ভেতরে থাকার পরামর্শ দিয়েছে।
মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনে বক্তব্য দেওয়ার সময় ডিআর কঙ্গোর প্রেসিডেন্ট ফেলিক্স শিসেকেদি রুয়ান্ডার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারীদের সহযোগিতায় বিদেশি স্বার্থের জন্য আমাদের কৌশলগত সম্পদ লুণ্ঠন করা হচ্ছে, তা আমরা আর সহ্য করব না।’ বিদ্রোহীদের সমর্থন করার অভিযোগ অস্বীকার করেছে রুয়ান্ডা।
তবে দেশটির পূর্ব ডিআর কঙ্গোতে নিজস্ব সেনা রয়েছে বলেও জানা গেছে। রুয়ান্ডার প্রেসিডেন্ট পল কাগামে বলেছেন, তার দেশের অগ্রাধিকার হলো নিরাপত্তা।
সূত্র : বিবিসি