১৬ বছরে ১৪ লাখ মাদক কারবারি গ্রেফতার : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

SHARE

সারাদেশে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণে ২০০৯ সাল থেকে ২০২৪ সালের এপ্রিল পর্যন্ত ১৬ বছরে ১১ লাখ ১৩ হাজার ৪৭০ মামলার বিপরীতে ১৪ লাখ ১৪ হাজার ৫২৪ জন মাদক কারবারিকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে সংসদে জানিয়েছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান।

বুধবার (১২ জুন) জাতীয় সংসদের বাজেট অধিবেশনে ভোলা-৩ আসনের সংসদ সদস্য নূরুন্নবী চৌধুরী লিখিত প্রশ্নের উত্তরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এই তথ্য জানান। সংসদে সভাপতিত্ব করেন স্পিকার শিরীন শারমিন।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান সংসদে বলেন, বিশ্বের অন্যান্য দেশের মত বাংলাদেশেও উদ্বেগজনক হারে তরুণ সমাজে মাদকাসক্তি বৃদ্ধি পাচ্ছে। বাংলাদেশ মাদক উৎপাদনকারী দেশ না হয়েও মাদক সমস্যার কবলে পড়েছে মূলত ভৌগলিক কারণে। আমাদের দেশে অবৈধ মাদক প্রবেশ করে পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে। বর্তমান সময়ের আলোচিত মাদক ইয়াবার অনুপ্রবেশ ঘটে মায়ানমার থেকে। ভারত থেকে আমাদের দেশে গাঁজা, ফেন্সিডিল, হেরোইন ও ইনজেক্টিং ড্রাগ অনুপ্রবেশ করে।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মাদকের বিরুদ্ধে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর “জিরো টলারেন্স” বাস্তবায়নে সকল সংস্থা বদ্ধপরিকর। দেশের তরুণ সমাজ ও তারুণ্যের শক্তিকে মাদক ও নেশার হাত হতে রক্ষার জন্য মাদক নির্মূলে সরকার গত ১৫ বছরে বহুমুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। সেইজন্য মাদকাসক্ত সনাক্তকরণের লক্ষ্যে ‘ডোপ টেন্ড প্রবর্তন করা হয়েছে। সরকারি চাকরিতে প্রবেশ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির ক্ষেত্রে মাদকাসক সনাক্তকরণের লক্ষ্যে ‘ডোপ টেস্ট’ করা হচ্ছে। এই ‘ডোপ টেস্ট’ চালুর ফলে তরুণ সমাজ মাদক গ্রহণে নিরুৎসাহিত হবে।

মাদকদ্রব্য গ্রহণে জনসচেতনতা তৈরি করা হচ্ছে জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, গত ১৬ বছরে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর কর্তৃক ৮৩ হাজার ৪১৭টি মাদকবিরোধী সভা/সেমিনার/ওয়ার্কসপ এবং ১৩৭টি স্থানে মাদকবিরোধী শর্ট ফিল্ম প্রদর্শন করা হয়েছে। একইসাথে দেশের বিভিন্ন কারাগারে কারাবন্দিদের মাঝে মাদকবিরোধী আলোচনা সভা আয়োজন হয়েছে ৯৭১টি এবং ৫৫ হাজার ৮৯৮টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মাদকবিরোধী সভা আয়োজন করা হয়েছে।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, মাদকগ্রহণ বন্ধে ৫ হাজার ৮৩ জন শিক্ষককে মেন্টর হিসেবে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মাদকবিরোধী ৩১ হাজার ৮০টি কমিটি গঠন করা হয়েছে। বিভিন্ন স্থানে ৪৬৫টি কিয়স্ক স্থাপন করা হয়েছে। মাদকবিরোধী ১০৪টি টকশো প্রচার করা হয়েছে। প্রিন্ট মিডিয়ায় ৫৪৩টি এবং ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় ৫১০টি মাদকবিরোধী বিজ্ঞাপন/টিভি স্ক্রল প্রচার করা হয়েছে।

মানবদেহে মাদকের ক্ষতিকর প্রভাব সংবলিত স্টিকার বিতরণ ৩ লাখ ৮০ হাজার ৯৮২টি, ৬৪ লাখ ১৭ হাজার ১৭টি মাদকবিরোধী লিফলেট; ১২ হাজার ৫৭৫টি এক্রেলিক পিভিসি বোর্ড, ১ লাখ টি মাস্ক, ৩৫ হাজার ৮১৬টি খাতা, ৬৪ হাজার ১৫১টি কলম, ২০ হাজার ৭০টি টি-শার্ট, ২০ হাজার ৭৫টি ক্যাপ, ৩ লাখ ১৭ হাজার ৫৩টি জ্যামিতি বক্স, ৭ লাখ ২৮ হাজার স্কেল বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ ইউনিয়ন পর্যায় পর্যন্ত সরকারি জনগুরুত্বপূর্ণ অফিসসমূহে বিতরণ করা হয়েছে।