দেশকে আর কখনো পরাজিত শক্তির হাতে তুলে দেবেনা জনগণ : উপমন্ত্রী

SHARE

আগামী ৩ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। সারাদেশে আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন দলের প্রার্থীরা চালিয়েছেন প্রচার প্রচারণা। প্রার্থীরা ছুটে গেছেন জনগণের দারে দারে, চেয়েছেন ভোট। সারাদেশের মতো জাতীয় সংসদের ৯৭ বাগেরহাট-৩ (রামপাল-মোংলা) সংসদীয় আসনেও এর ব্যতিক্রম নয়। এই আসনে আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন দলের পাঁচজন ও একজন স্বতন্ত্র প্রার্থী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী ও খুলনা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা তালুকদার আব্দুল খালেকের পতœী বেগম হাবিবুন নাহার।
নির্বাচনী জনসভায় উপমন্ত্রী বেগম হাবিবুন নাহার বলেছেন, জননেত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরে পৃথিবীর মানচিত্রে ক্ষুদ্র বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের রোল মডেল। যারা এ দেখে জ্বালাও-পোড়াও অগ্নিসংযোগ করে, রেললাইনের ফিসপ্লেট তুলে এরা পরাজিত শক্তির দালাল, পরাজিত শক্তির দোসর। এদের বাংলাদেশর রাজনীতি করারই কোন অধিকার নেই। খুনি, সন্ত্রাসী, জঙ্গি, দুর্নীতিবাজ এদের বাংলাদেশে কোন স্থান সাধারণ জনগণ দিবেনা।
তিনি আরও বলেন যে, বাংলাদেশ স্বাধীন দেশ, বাংলাদেশের মানুষ তাদের অধিকার, ভোটের অধিকার প্রয়োগ করবে। জনগণ শান্তিতে বাস করবে। উন্নত জীবন পাবে এটাই আওয়ামী লীগের মূল লক্ষ্য।
তিনি আরও বলেন যে, আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকলে মানুষ সেবা পায়। এখন মানুষের অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা ও চিকিৎসা প্রতিটি মৌলিক অধিকার শেখ হাসিনা জনগণকে নিশ্চিত করেছে। আজ সারাবিশ্বে বাংলাদেশ উন্নয়নের রোল মডেল। এই সম্মানটা দিতে পারে না আমাদের দেশের কিছু কুলাঙ্গার। ১৯৭১ সালের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় যেমন ওই হানাদার বাহিনীর দোসর দোসর যারা ছিল, এরাই তাদের পেতাত্মা হয়ে সাধারণ মানুষের বিরুদ্ধে চক্রান্ত করে মানুষ হত্যা করে যাচ্ছে এবং হত্যার পরিকল্পনায় লিপ্ত আছে।
তিনি আরও বলেন যে, শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকার নারী বান্ধব সরকার। শেখ হাসিনা দেশের নারীদের যত সুযোগ সুবিধা দিয়েছেন তা সারাবিশ্বে বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন হয়েছে। শেখ হাসিনা নারীদের মাতৃত্বের অধিকার প্রতিষ্ঠা করেছে। নারীদের অনাগত সন্তানের দায়িত্ব শেখ হাসিনা নিয়েছে।
আমাদের দক্ষিণাঞ্চলের উন্নয়নের কথা বলতে গেলে বলে শেষ করা সম্ভব নয়। বিএনপি জামায়াত জোট সরকারের আমলে এই অঞ্চলে মাত্র একটি ইটের রাস্তা ছিল। আমাদের বাগেরহাট-৩ আসনের প্রধান আয়ের উৎস মৎস্য ঘের। বিএনপি জামায়াতের ক্যাডার বাহিনী সাধারণ মানুষের মৎস্য ঘের দখল করে নিতো। সাধারণ মানুষ ঘেরের হারীর টাকা চাইতে গেলে তাদের হামলার শিকার হতে হত, অনেককে তারা খুনও করেছে। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এসে সন্ত্রাসের জনপদকে শান্তির জনপদে রূপান্তরিত করেছে। দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সমুদ্র বন্দর মোংলা, বিএনপি ক্ষমতায় এসে মোংলা বন্দরের সকল কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়। শেখ হাসিনা ক্ষমতায় এসে কোটি কোটি টাকা ব্যয় করে মৃতপ্রায় মোংলা বন্দর পুনরায় সচল করেছে। মোংলা বন্দরের পাশে ছিল কাঁশবন, শেখ হাসিনা সেই কাঁশবনকে ইপিজেডে রূপান্তরিত করেছে। আমাদের অঞ্চলের আট হাজারেরও বেশি নারী পুরুষ সেখানে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে।
দেশের মানুষ এখন সচেতন, মানুষ স্মার্ট বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখে। তাই দেশকে আর কখনো পরাজিত শক্তির হাতে তুলে দেবেনা জনগণ। আগামী ৭ই জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সারাদেশে শেখ হাসিনার মনোনীত নৌকার প্রার্থীদের ব্যাপক ভোটার উপস্থিতির মাধ্যমে নৌকায় ভোট দিয়ে টানা পঞ্চমবারের মতো শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় আনবে।
বৃহস্পতিবার (৪ জানুয়ারি) বিকেলে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে রামপাল উপজেলার রামপাল সদর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ কর্তৃক আয়োজিত ঐতিহ্যবাহী ঝনঝনিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন উপমন্ত্রী বেগম হাবিবুন নাহার।
ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আরাফাত হোসেন কচির সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক শেখ জালাল উদ্দীন দুলালের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি এ্যাড. ড. এ কে আজাদ ফিরোজ টিপু, বঙ্গবন্ধু শিক্ষা ও গবেষণা পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এ্যাড. সাইফুল ইসলাম, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি অধ্যক্ষ (অব.) মোতাহার রহমান, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা চেয়ারম্যান সেখ মোয়াজ্জেম হোসেন, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান শেখ জামিল হাসান জামু, ভাইস চেয়ারম্যান মো. নুরুল হক লিপন, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মোসা. হোসনেয়ারা মিলি, ইউপি চেয়ারম্যান মো. আব্দুল্লাহ ফকির, তপন কুমার গোলদার, যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সেখ আব্দুস সবুর, জেলা পরিষদ সদস্য শেখ মনির আহমেদ প্রিন্স, আওয়ামী লীগ নেতা শেখ শরিফুল ইসলাম, উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. হাফিজুর রহমান প্রমুখ।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মোল্লা আ. রউফ, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি অধ্যক্ষ খালিদ আহমেদ, বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ আব্দুল মান্নান, ইউপি চেয়ারম্যান সুলতানা পারভীন ময়না, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান গাজী গিয়াস উদ্দিন, শেখ মোহাম্মদ আলী, গাজী আক্তারুজ্জামান, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. ইমরান শেখসহ আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
নির্বাচনী জনসভা শুরুর আগে ইউনিয়নের বিভিন্ন ওয়ার্ড ও পাশ্ববর্তী ইউনিয়ন থেকে জয় বাংলা, জিতবে আবার নৌকা স্লোগান নিয়ে হাজার হাজার মানুষ মাঠে প্রবেশ করে। এসময় নির্বাচনী জনসভার মাঠ সাধারণ মানুষে কানায় কানায় পূর্ণ হয়। নৌকা প্রার্থীর জনসভায় ৭ থেকে ৮ হাজার নৌকার সমর্থক উপস্থিত হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।