গত ২৮ অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত রাজধানীতে ৬৪টি বাসে আগুন, ভাঙচুর ও নাশকতা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) ড. খ. মহিদ উদ্দিন।
আজ শুক্রবার (১০ নভেম্বর) দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে ‘নাশকতার উদ্দেশ্যে বাসে আগুন দেওয়ার সময় ২ জন ও গোপন তথ্যের ভিত্তিতে ৩ জন গ্রেপ্তার এবং অগ্নি-সন্ত্রাসীদের ধরিয়ে দেওয়ায় পুরস্কার সংক্রান্ত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
ড. খ. মহিদ উদ্দিন বলেন, গত ২৮ অক্টোবর থেকে তিন দফা অবরোধ ও একদিন হরতাল পালিত হয়েছে। এ কর্মসূচিতে জনগণের স্বাভাবিক জনজীবনে বিঘ্নিত করা হয়েছে। ২৮ অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত ৬৪টি গাড়িতে অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর ও নাশকতা করা হয়েছে। যাত্রীবেশে গাড়িতে উঠে আগুন দিয়ে নেমে যায় নাশকতাকারীরা। এ ঘটনায় একজন বাসের হেলপার নিহত হয়েছেন ও অনেক মানুষ আহত হয়েছেন।
তিনি বলেন, হাতেনাতে এখন পর্যন্ত ১২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মানুষকে ভীতসন্ত্রস্ত করার জন্য তারা অবরোধের আগের দিন বা অবরোধের দিন আগুন দেওয়ার চেষ্টা করেছে।
ডিএমপির এই কর্মকর্তা আরও বলেন, একদিনের হরতাল ও তিন দফা অবরোধের কারণে মহানগরবাসীর জীবনযাত্রা ব্যহত হয়েছে। যেকোনো রাজনৈতিক কর্মসূচির বিষয়ে ডিএমপি ইতিবাচক ভূমিকা রাখে। এসব কর্মসূচির নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য আমরা বদ্ধপরিকর। সেই কাজটি আমরা আন্তরিকতার সঙ্গে চেষ্টা করছি। কিন্তু দুর্ভাগ্য যে আমরা দেখেছি রাজনৈতিক কর্মসূচির নামে কিছু অনাকাঙ্ক্ষিত, অপ্রকাশিত ও অগ্রহণযোগ্য ঘটনা ঘটেছে।
এ সময় দুষ্কৃতকারীরা ঢাকা মহানগর এলাকায় ৬৪টি বাসে আগুন দিয়েছে। দাহ্য পদার্থ ব্যহার করে দুষ্কৃতিকারীরা বাসে আগুন দিয়েছে। এতে করে দ্রুত বাসে আগুন ছড়িয়ে পড়েছে। গত ৩১ অক্টোবর রাতে একজন হেলপারকে নির্মমভাবে পুড়িয়ে মারা হয়েছে। রাজধানীর ১২টি স্থানে আগুন দেওয়ার সময় ১২ জন দুষ্কৃতকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মহিদ উদ্দিন বলেন, আমরা সবাইকে একটি অনুরোধ করতে চাই, রাজনৈতিক কর্মসূচি হলে ডিএমপি তার জায়গা থেকে যা যা করার তা করবে। কেউ যদি নাশকতা ও অগ্নিসংযোগ করে তাহলে ডিএমপি আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে। আমরা আশা করব সামনে রাজনৈতিক কর্মসূচি আসলে সেটা যেন ধ্বংসাত্মক না হয়। যারা ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড করে তারা যেন এসব না করে তাদের বলতে চাই।
তিনি বলেন, আমরা দেখেছি, এসব দুষ্কৃতিকারীদের বিভিন্ন জায়গা থেকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। তাদের দেওয়ার পর তারা নির্বিচারে এসব নাশকতার কাজ করে। আমরা এরই মধ্যে জেনেছি আগামী ১২ ও ১৩ নভেম্বর অবরোধ কর্মসূচি দেওয়া হয়েছে। আমরা সবাইকে ডিএমপির পক্ষ থেকে অনুরোধ জানাব, কেউ যেন রাজনৈতিক কর্মসূচির নামে গণধ্বংসাত্মক কার্যক্রম না করে।
গ্রেপ্তার ১২ জনের রাজনৈতিক পরিচয় কী জানতে চাইলে তিনি বলেন, যে ১২ জনকে আমরা গ্রেফপ্তার করেছি তারা প্রত্যেকেই অবরোধ কর্মসূচির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। এমন দেখা গেছে, একজন আরেকজনকে নিয়োগ করেছে আবার আরেকজন অন্যজনকে নিয়োগ করেছে। তারা বিভিন্নভাবে অবরোধ কর্মসূচির মধ্যে মানুষ জনকে ভীত করার জন্য এবং মানুষ যেন ভয়ে রাস্তায় না নামতে পারে সেই লক্ষ্যে তারা অবরোধের আগের দিন ও অবরোধের দিন নাশকতা করেছে।
সংবাদ সম্মেলনে ড. খ. মহিদ আরও বলেন, জনগণ এখন সচেতন। তারাও নাশকতা ঠেকাতে সোচ্চার। এরই মধ্যে নাশকতাকারীদের ধরিয়ে দেওয়ার জন্য একজনকে পুরস্কৃত করা হয়েছে। বাকি আরও কয়েকজন আছে। তাদের বিষয়ে যাচাই বাছাই করা হচ্ছে।