বিশ্বজুড়ে খাদ্যপণ্যের দাম ব্যাপক কমলো, ২ বছরে সর্বনিম্ন

SHARE

আবার গোটা বিশ্বে খাদ্যপণ্যের দাম ব্যাপক কমেছে। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) সূচকে দেখা গেছে, বিদায়ী আগস্টে বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন খাবারের গড় দর অনেক হ্রাস পেয়েছে। ফের গত ২ বছরের মধ্যে তা সর্বনিম্নে নেমে গেছে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানা গেছে। এতে বলা হয়, বিশ্বজুড়ে খাদ্যশস্যের মূল্য পর্যবেক্ষণ করে এফএও সূচক। আলোচ্য আগস্টে যা ছিল প্রায় ১২১ দশমিক ৪ পয়েন্ট। আগের মাসে (এপ্রিল) তা ছিল ১২৪।

এর আগে জুনে সারা বিশ্বে খাদ্যশস্যের ব্যাপক দরপতন ঘটে। গত ২ বছরের মধ্যে যা ছিল সবচেয়ে কম। ওই মাসে সূচক ছিল ১২৩ দশমিক ৯ পয়েন্ট। তবে জুলাইয়ে তা ঘুরে দাঁড়ায়। আবার বিশ্বব্যাপী খাদ্যপণ্যের দাম ২ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চে ওঠে।
আগস্টে এফএও সূচক ফের কমে গেছে। ২০২১ সালের মার্চের পর গত মাসে বিশ্বে খাদ্যের মূল্য সবচেয়ে কম হয়েছে। অর্থাৎ বিগত ২ বছরের মধ্যে এত সস্তা ছিল না।
২০২২ সালের ফেব্রুয়ারির শেষদিকে ইউক্রেনে সামরিক অভিযান চালায় রাশিয়া। পরের মাস মার্চে বিশ্বব্যাপী খাদ্যপণ্যের দাম সর্বকালের সর্বোচ্চে ওঠে। সেই থেকে এখন পর্যন্ত দরপতন ঘটেছে ২৪ শতাংশ।
এক বিবৃতিতে এফএও জানিয়েছে, সদ্য সমাপ্ত আগস্টে বিশ্বজুড়ে দুগ্ধপণ্য, সিরিয়েল, ভোজ্যতেল, মাংসের দাম বেশ কমেছে। কৃষ্ণসাগর বন্দর দিয়ে রাশিয়া-ইউক্রেন খাদ্যশস্য রপ্তানি চুক্তি পুনর্নবায়নের সম্ভাবনা জেগেছে। এটি বাস্তব হলে বিশ্ববাজারে সরবরাহ বাড়তে পারে। ফলে এই নিম্নমুখিতা তৈরি হয়েছে।
তবে বিশ্বজুড়ে চালের দর বৃদ্ধি অব্যাহত আছে। ইতোমধ্যে বিশ্ববাজারে তা গত ১৫ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ স্তরে উঠেছে। বিশ্বের শীর্ষ রপ্তানিকারক ভারত খাদ্যপণ্যটি রপ্তানি নিষিদ্ধ করেছে।

এছাড়া বৈরি আবহাওয়ায় চীন, থাইল্যান্ডসহ শীর্ষ উৎপাদক দেশগুলোতে ভোগ্যপণ্যটির উৎপাদন হ্রাস পেয়েছে। এতে আন্তর্জাতিক বাজারে সরবরাহ কমেছে। ফলে এই ঊর্ধ্বমুখিতা সৃষ্টি হয়েছে।
ফাও সূচকে দেখা গেছে, গত জুলাইয়ের তুলনায় আগস্টে বিশ্বজুড়ে সিরিয়েলের দাম কমেছে শূন্য দশমিক ৭ শতাংশ। গমের দর নিম্নমুখী হয়েছে। চলমান মৌসুমে উত্তর গোলার্ধের দেশগুলোতে উৎপাদন বেড়েছে। ফলে এই নিম্নগামিতা তৈরি হয়েছে।
ভুট্টারও দরপতন ঘটেছে। গত ৩ বছরের মধ্যে তা সর্বনিম্ন। বিশ্বের বৃহৎ উৎপাদনকারী ব্রাজিলে রেকর্ড উৎপন্ন হয়েছে। অন্যতম বৃহত্তম সরবরাহকারী যুক্তরাষ্ট্রে ফলন ভালো হয়েছে। ফলে এই নিম্নগামিতা সৃষ্টি হয়েছে।
বিশ্বজুড়ে ভোজ্যতেলের দাম কমেছে ৩ দশমিক ১ শতাংশ। দুগ্ধ পণ্যের বৈশ্বিক মূল্য হ্রাস পেয়েছে ৪ শতাংশ। ওশেনিয়া অঞ্চলে উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে। পাশাপাশি চীনে আমদানি কমেছে। ফলে এই অবনমন ঘটেছে। এছাড়া মাংসের দাম কমেছে।
আলোচিত আগস্টে চিনির মূল্য ঊর্ধ্বগামী হয়েছে ১ দশমিক ৩ শতাংশ। চলতি বছরের শুরুর পর যা ৩৪ শতাংশ বেশি। প্রতিকূল আবহাওয়ায় বিশ্বের বৃহৎ উৎপাদনকারী দেশগুলোতে উৎপাদন ব্যাহত হতে পারে। ফলে সরবরাহ সংকটের আশঙ্কায় এ ভোগ্যপণ্যটির দাম চড়া রয়েছে।