পশ্চিমবঙ্গে বাধ্যতামূলক হচ্ছে পড়ানো বাংলা

SHARE

পশ্চিবঙ্গের স্কুলে বাংলা ভাষা পড়ানো বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে। নতুন নিয়ম অনুযায়ী, সেখানে প্রথম ভাষা হিসেবে বাংলা ও ইংরেজি নিতে হবে।
সোমবার পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষামন্ত্রী এ বিষয়ে অনুমোদন দিয়েছেন।
শিক্ষানীতিতে স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, বাংলা ও ইংরেজি পড়তেই হবে। শুধু তাই নয়, তৃতীয় ভাষা হিসেবে যে অঞ্চলে যে ভাষার প্রয়োগ বেশি বা কার্যকারিতা বেশি সেই অঞ্চলে সেই ভাষা পড়ানো যাবে। তা হিন্দি হতে পারে, আবার সাঁওতালি বা উর্দুও হতে পারে। অর্থাৎ এক্ষত্রে পশ্চিমবঙ্গের ইংরেজি মিডিয়াম স্কুলগুলোতে বাংলা ভাষা পড়াতেই হবে।
জানা গেছে, সোমবার বিষয়টি নিয়ে মমতার মন্ত্রিসভায় আলোচনা হয়। সেখানেই বেসরকারি ইংরেজি মিডিয়াম স্কুলগুলোতে দ্বিতীয় ভাষা হিসেবে বাংলাকে বাধ্যতামূলক করার বিষয় প্রস্তাব আনা হয়। পাশপাশি বলা হয়, তৃতীয় ভাষা হিসেবে অঞ্চলভেদে সাঁওতালি, উর্দু বা অন্য কোনও ভাষার ব্যবহার করা যেতে পারে। ইংরেজি মিডিয়াম ছাড়া অন্য কোনও মিডিয়ামের ক্ষেত্রে এই নিয়ম প্রযোজ্য হবে না বলে জানা যায়।
তবে নতুন শিক্ষানীতিতে এই সিদ্ধান্ত আবশ্যিক হবে কিনা তা নিয়ে এখনও সন্দেহ আছে। কারণ এ নিয়ে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত জানায়নি রাজ্য সরকার। তবে এ নিয়ে মুখ খুলেছেন অধ্যাপক নৃসিংহপ্রসাদ ভাদুড়ী। তিনি বলছেন, বাংলাকে আবশ্যিক করা হতে পারে এমন সম্ভাবনা যদি আদৌ তৈরি হয়, এই সিদ্ধান্ত যদি রাজ্য সরকার নেয়, তাহলে এর চেয়ে ভালো খবর তো হতে পারে না। সরকার এমন ভাবলে তা অবশ্যই সমর্থন যোগ্য বিষয়। মাতৃভাষায় শিক্ষার উন্নতি না ঘটলে, আসলে ক্ষতি তো আমাদেরই।
প্রায় একই সুরেই কথা বলেছেন নাট্যকার কৌশিক সেনও। বাংলা প্রসঙ্গে তিনি বলছেন, বাংলাকে সমস্ত বেসরকারি বিদ্যালয়ে পড়াতেই হবে, একথা যদি ভাবনার মধ্যে আনা হয়। তাহলে তা সমর্থনযোগ্য বলেই আমার মনে হয়।
মূলত পশ্চিমবঙ্গের একাধিক বেসরকারি ইংরেজি মিডিয়াম স্কুলগুলোয় বাংলা পড়ানো হয় না। প্রথম ভাষা হিসেবে ইংরেজি বাধ্যতামূলক। দ্বিতীয় ভাষা হিসেবে বাংলা নেওয়ার সুযোগ থাকলেও বহুক্ষেত্রে বাবা-মায়ের কথা মত শিক্ষার্থীরা হিন্দি বা অন্য ভাষা নিয়ে থাকে। ফলে স্কুল জীবনে বাংলাটা পড়া হয় না পশ্চিমবঙ্গের সিংহভাগ শিক্ষার্থীর। এবার সেই পরিস্থিতি বদলাতে উদ্যোগী হয়েছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। যদিও সরকারি ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলগুলোয় ইংরেজির পর বাংলাকেই প্রাধান্য দেওয়া হয়ে থাকে। বাধ্যতামূলক করা হতে পারে বেসরকারি ইংরেজি মিডিয়াম স্কুলগুলোর ক্ষেত্রে। তবে রাজ্য সরকারের এই ভাবনায় অনেকেই বাংলার সুদিনই দেখছেন।