রাশিয়ায় দেখা গেল প্রিগোশিনকে, বিদেশিদের সঙ্গে বৈঠকও করছেন

SHARE

রাশিয়ার ভাড়াটে সেনা সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ভাগনারের প্রধান ইয়েভগেনি প্রিগোশিনকে বৃহস্পতিবার রাশিয়ায় দেখা গেছে। গত মাসে তাঁর নেতৃত্বে সশস্ত্র বিদ্রোহের পর এই প্রথম রাশিয়ায় প্রকাশ্যে দেখা গেল প্রিগোশিনকে।

সেন্ট পিটার্সবার্গে রাশিয়া–আফ্রিকা সম্মেলনের ফাঁকে আফ্রিকার দেশ মধ্য আফ্রিকা প্রজাতন্ত্রের একটি প্রতিনিধিদলের সঙ্গে প্রিগোশিনকে বৈঠকও করতে দেখা যায়। মধ্য আফ্রিকা প্রজাতন্ত্রে বেশ কয়েক বছর ধরে ভাগনার সেনারা অবস্থান করছেন।

মধ্য আফ্রিকা প্রজাতন্ত্রের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে প্রিগোশিনের বৈঠকটি হয়েছে সেন্ট পিটার্সবার্গের তেরেজ্জিনি প্যালেস হোটেলে। রাশিয়ার সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, ওই হোটেলে প্রিগোশিনের একটি ব্যক্তিগত কার্যালয় আছে। গত জুন মাসের শেষ দিকে ভাগনারের ক্ষণস্থায়ী বিদ্রোহের কয়েক দিন পর ৬ জুলাই ওই হোটেলে তল্লাশি অভিযান চালান রাশিয়ার কর্মকর্তারা।

বিদ্রোহের পর প্রিগোশিনকে প্রথম প্রকাশ্যে দেখা যায় ১৯ জুলাই। এদিন প্রিগোশিনের একটি ভিডিও প্রকাশ্যে আসে। ভিডিওটি ধারণ করা বেলারুশে। এতে দেখা যায়, বেলারুশের ছোট শহর অ্যাসিপোভিচিতে একটি ঘাঁটিতে ভাগনার যোদ্ধাদের অভিবাদন জানাচ্ছেন প্রিগোশিন।

প্রিগোশিনকে সাধারণত প্রকাশ্যে দেখা যেত না। অন্তরালে থেকেই ভাড়াটে এই সেনাদলের কার্যক্রম পরিচালনায় নেতৃত্ব দিয়ে আসছিলেন তিনি। তবে ইউক্রেনে রাশিয়া ‘বিশেষ সামরিক অভিযান’ শুরুর পর প্রিগোশিন ও ভাগনার যোদ্ধারা আলোচনার কেন্দ্রে আসেন। ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়ার পক্ষে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে এই ভাড়াটে বাহিনী।

তবে যুদ্ধের মাঝপথে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা বাহিনীর সঙ্গে বিরোধ দেখা দেয় ভাগনারের। যুদ্ধের জন্য ভাগনারকে পর্যাপ্ত অস্ত্র–গোলাবারুদ সরবরাহ করছে না অভিযোগ তুলে রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর কড়া সমালোচনা করতে শুরু করেন প্রিগোশিন। বিরোধের এক পর্যায়ে গত ২৩ জুন রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে বসেন ভাগনার সেনারা। রাশিয়ার মূল ভূখণ্ডের কিছু এলাকা দখলে নিয়ে মস্কোর দিকে অগ্রসর হতে থাকেন তাঁরা।

তবে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মিত্র হিসেবে পরিচিত বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেকসান্দার লুকাশেঙ্কোর মধ্যস্থতায় প্রিগোশিন বিদ্রোহ থামান। এরপর প্রিগোশিন ও ভাগনার সেনারা যান বেলারুশে। এক দিনের কম সময়ের এই বিদ্রোহের পর অনেকের ধারণা ছিল, প্রিগোশিন ও ভাগনারকে ধ্বংস করে দেবেন পুতিন। কিন্তু পাল্টা পদক্ষেপ নেওয়ার বদলে প্রিগোশিন ও ভাগনার সেনাদের ‘দায়মুক্তি’ দেন রুশ প্রেসিডেন্ট।

আলেকসান্দার লুকাশেঙ্কোর দাবি, বিদ্রোহের পর ভাগনার ও প্রিগোশিনকে যাতে ‘ধ্বংস’ করে না দেওয়া হয়, এ ব্যাপারে পুতিনকে তিনিই রাজি করিয়েছিলেন।