কৃষিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, অর্থনৈতিক, সামাজিক উন্নয়ন ও সাম্প্রদায়িকতা-ধর্মান্ধতা রুখতে ভারত-বাংলাদেশ বিদ্যমান সুসম্পকর্কে আরও সুদৃঢ় করতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের সময় ভারত, আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধে সহযোগিতা করেছে।
জীবনবাজি রেখে আমাদের পাশে থেকে যুদ্ধ করেছে, পরম আত্মত্যাগ স্বীকার করেছে। আমরা উভয় দেশই সবদিক থেকেই একে অপরের ওপর নির্ভরশীল। যদিও অর্থনৈতিক এবং ভৌগোলিক দিক থেকে ভারত একটু বড় দেশ। তারপরও দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক অত্যন্ত গভীর।
আজ শনিবার (১০ জুন) কৃষি মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানান হয়।
এতে উল্লেখ করা হয়, শুক্রবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যায় কলকাতার পিয়ারলেস ইন হোটেলে ভারত-বাংলাদেশ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সারা বিশ্বে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা বাঙালিদের যোগসূত্র বাড়ানোর সংগঠন ‘বাংলা ওয়ার্ল্ড ওয়াইড’ এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, অসাম্প্রদায়িকতা, ধর্মনিরপেক্ষতা, গণতন্ত্র ও বাঙালি জাতীয়তাবাদের আদর্শ নিয়ে ১৯৪৯ সালের ২৩ জুন আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। সেদিন থেকে এখন পর্যন্ত আওয়ামী লীগ এসব আদর্শ থেকে বিচ্যুত হয়নি। ধর্মনিরপেক্ষতা- অসাম্প্রদায়িকতার সঙ্গে কোন আপোষ করেনি। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকুক বা না থাকুক, সব সময়ই অসাম্প্রদায়িক চেতনাকে এগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেছে, আন্দোলন- সংগ্রাম করেছে। কিন্তু দেশে বিএনপিসহ কিছু দল রয়েছে, যারা ক্ষমতায় আসার জন্য সব সময়ই ধর্মকে ব্যবহার করে।
বাঙালি বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ জাতি হতে পারে উল্লেখ করে কৃষিমন্ত্রী বলেন, ভারত-বাংলাদেশের বাঙালিরা শতাব্দীর পর শতাব্দী একসঙ্গে থেকেছে। এখন বাস্তবতার কারণে দুটি দেশ, ভৌগোলিক অবস্থান ও রাষ্ট্রীয় পরিচয় ভিন্ন হলেও; বাঙালিদের চিন্তা-চেতনা, খাদ্যাভ্যাস, জীবনাচরণ, ভাষা- সংস্কৃতিসহ প্রায় সবকিছুই এক ও অভিন্ন। সেজন্য, আমরা বাঙালিরা সবাই মিলে একসঙ্গে কাজ করলে বিশ্বে বাঙালিরা অন্যতম শ্রেষ্ঠ জাতি হিসেবে পরিণত হতে পারে।
সামাজিক বিভিন্ন সূচকে বাংলাদেশের অগ্রগতির চিত্র তুলে ধরে কৃষিমন্ত্রী বলেন, বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার ২০০৮ সালের ডিসেম্বর মাসে নির্বাচনের মাধ্যমে বাংলাদেশে ক্ষমতায় আসে। সেই নির্বাচনে আমরা জনগণের বিপুল সমর্থন নিয়ে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার পরিচালনার দায়িত্ব নিয়েছি। ২০১৫ সালে আমরা দানা জাতীয় খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়েছি। সামাজিক ইনডেক্সগুলিতেও আমরা খুব ভালো ফল করেছি। অনেক ক্ষেত্রে ভারতের চেয়েও এগিয়ে আছি।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলা ওয়ার্ল্ড ওয়াইডের সভাপতি এবং কলকাতা ও মুম্বাই হাইকোর্টের সাবেক প্রধান বিচারপতি চিত্ততোষ মুখোপাধ্যায়। এ সময় বাংলাদেশি অতিথিদের মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর আতিউর রহমান, ব্যারিস্টার আমীর-উল ইসলাম, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদার, বিশিষ্ট সাংবাদিক স্বদেশ রায়, কলকাতায় বাংলাদেশের উপহাইকমিশনার আন্দালিব ইলিয়াস, ভারতের রবীন্দ্র ভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য পবিত্র সরকার প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন কলকাতা প্রেসক্লাবের সভাপতি স্নেহাশিস সুর।