অগ্নিসন্ত্রাসীদের রাজনীতি থেকে বিদায় করাই এখন এক দফা: তথ্যমন্ত্রী

SHARE

তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, রাজনীতির নামে মানুষকে জীবন্ত পুড়িয়ে হত্যাকারীদের রাজনীতি থেকে বিদায় করা এবং অগ্নিসন্ত্রাসীদের সঙ্গে তাদের হুকুমদাতাদেরও বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানোই আজ দেশের মানুষের এক দফা দাবি।

শনিবার (১০ ডিসেম্বর) দুপুরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের পাদদেশে বিএনপি-জামায়াত কর্তৃক মানবাধিকার লঙ্ঘন, মানুষ পোড়ানো, অগ্নিসন্ত্রাসী ও হুকুমদাতাদের বিচারের দাবিতে আয়োজিত মানববন্ধনে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন। ‘অগ্নিসন্ত্রাসের আর্তনাদ’ নামে একটি সংগঠন এ মানববন্ধনের আয়োজন করে।

jagonews24

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আজকে এ পোড়া মানুষগুলোর জীবন্ত দগ্ধ হয়ে মৃতদের স্বজনদের অসহনীয় জীবনের জন্য দায়ী বিএনপি-জামায়াতের নেতারা। খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের নির্দেশে এবং ফখরুল, রিজভী, আব্বাস, খন্দকার মোশাররফ সাহেব যারা বড়গলায় কথা বলেন, তাদের পরিচালনায় ও অর্থায়নে দেশে অগ্নিসন্ত্রাস করা হয়েছে।’

অগ্নিসন্ত্রাসের ভয়াবহতা তুলে ধরে ড. হাছান বলেন, ‘পাঁচ শতাধিক নিরীহ মানুষকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়েছে। ৫০ জনের বেশি পরিবহন চালক-শ্রমিককে হত্যা করা হয়েছে। তিন হাজারের বেশি মানুষকে অগ্নিদগ্ধ করা হয়েছে। সাড়ে তিন হাজার গাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে, বাসে-ট্রেনে-লঞ্চে আগুন দেওয়া হয়েছে। তাদের এ প্রতিহিংসার আগুন থেকে পশুপাখি-গাছপালাও রক্ষা পায়নি। বিএনপি-জামায়াত তাই মানুষের শত্রু, পশুপাখির শত্রু, প্রকৃতির শত্রু, এরা অগ্নিসন্ত্রাসী, এরা মানবাধিকার লঙ্ঘনকারী।’

বিশ্ব মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে বিএনপি নেতাদের উদ্দেশে মন্ত্রী বলেন, ‘তারা আজ মানবাধিকারের কথা বলেন। অথচ বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান থেকে শুরু করে খালেদা জিয়া এবং আজকের মির্জা ফখরুল সাহেবরাই বাংলাদেশে মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন ঘটিয়েছে। জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মধ্য দিয়ে রক্তের ওপর পাড়া দিয়ে ক্ষমতা দখল করেছিল। ক্ষমতায় টিকে থাকতে শত শত সেনা অফিসার ও জওয়ানকে হত্যা করেছে। আওয়ামী লীগের ২২ হাজার নেতাকর্মীকে হত্যা করেছে। আর খালেদা জিয়া, তারেক রহমান অবৈধপথে ক্ষমতায় যাওয়ার লিপ্সায় হাজার হাজার মানুষকে আগুনে পুড়িয়ে হতাহত করেছে। এ সবই আমরা বিশ্ব অঙ্গনে নিয়ে যাবো।’

এসময় পেট্রল বোমায় দগ্ধ হয়ে মারা যাওয়া চৌদ্দগ্রামের মোহাম্মদ ইউসুফের ছেলে জাহেদুল ইসলাম, গাজীপুর চৌরাস্তায় দগ্ধ হওয়া কাভার্ডভ্যান চালকের বাবা মো. রমজান, শাহবাগে দগ্ধ নাহিদের মা রুনি বেগম, ঠাকুরগাঁওয়ে দগ্ধ রফিকুল ইসলাম, রাজশাহীতে কর্মরত অবস্থায় দগ্ধ এসআই জাহাঙ্গীর, যাত্রাবাড়ীতে সম্পূর্ণ মুখমণ্ডল ও শরীর ঝলসে যাওয়া সালাহউদ্দিন ভূঁইয়াসহ প্রায় অর্ধশতাধিক পেট্রল বোমার শিকার ও তাদের স্বজনরা বক্তৃতা করেন।

jagonews24

এসময় তারা কান্নায় ভেঙে পড়েন। তাদের বিলাপ ও আহাজারিতে শহীদ মিনার প্রাঙ্গণের বাতাস ভারি হয়ে ওঠে।

‘অগ্নিসন্ত্রাসের আর্তনাদ’ আহ্বায়ক শাহাদাত হোসেন বাবুলের সভাপতিত্বে এসময় বক্তৃতা করেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খান, সংস্কৃতি সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য ড. মুহাম্মদ সামাদ, ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন, মোটরচালক শ্রমিক লীগ নেতা আলী হোসেন, সংস্কৃতিব্যক্তিত্ব অরুণ সরকার রানা, আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা উপ-কমিটির সদস্য মোহাম্মদ রাশেদুল ইসলাম রাসেল প্রমুখ।