রিজার্ভ নিয়ে গুজব ছড়ানো হচ্ছে : প্রধানমন্ত্রী

SHARE

রিজার্ভ নিয়ে গুজব ছড়ানো হচ্ছে উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘আমরা রিজার্ভ খরচ করেছি দেশের মানুষের জন্য। জনগণের জন্য বিনামূল্যে খাদ্য সরবরাহ, করোনা ভ্যাকসিন ও আর্থিক সহায়তা নিশ্চিত করে দিয়েছি। আমরা জনগণের জন্য ভাবি। কারণ আমরা জনগণের কল্যাণের জন্য কাজ করি।’
রোববার (৪ ডিসেম্বর) বিকালে চট্টগ্রাম নগরের পলোগ্রাউন্ড মাঠে আয়োজিত এক জনসভায় এ কথা বলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন ‘আমরা উন্নয়ন করি, আর বিএনপি মানুষ খুন করে। এই চট্টগ্রামে বিএনপি বারবার বোমা ও গ্রেনেড মেরেছে। বিএনপি মানুষের শান্তি চায় না।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘খালেদা জিয়ারা পারে মানুষ হত্যা করতে। আওয়ামী লীগ শান্তিতে বিশ্বাস করে। তাই আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলে জনগণ শান্তিতে থাকে। বিএনপির দুইটা গুণ আছে-ভোট চুরি আর মানুষ খুন।’
তিনি বলেন, ‘অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে বলতে হয়, সেই ১০ ডিসেম্বর বিএনপির খুব প্রিয় একটা তারিখ। বোধ হয় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর পদলেহনের দোসর ছিল বলেই ১০ ডিসেম্বর তারা ঢাকা শহর নাকি দখল করবে। আর আওয়ামী লীগ সরকারকে উৎখাত করবে। আমি তাদের বলে দিতে চাই, খালেদা জিয়া ৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি জনগণের ভোট চুরি করে ক্ষমতায় এসেছিল। আর ভোট চুরি করে ক্ষমতায় এসেছিল বলেই তাকে বাংলাদেশের মানুষ মেনে নেয়নি। সারা বাংলাদেশ ফুঁসে উঠেছিল। জনতার মঞ্চ করেছিলাম আমরা। খালেদা জিয়া বাধ্য হয়েছিল পদত্যাগ করতে। দেড় মাসও যায়নি, খালেদা জিয়া পদত্যাগে বাধ্য হয়েছিল। সে কথা বিএনপির মনে রাখা উচিত। জনগণের ভোট যদি কেউ চুরি করে বাংলাদেশের মানুষ তা মেনে নেয় না। ওরা তা ভুলে গেছে।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘জনগণের ভোট কেউ চুরি করলে বাংলাদেশের মানুষ তা মেনে নেয় না। ওরা ভোটে যেতে চায় না। কারণ জিয়াউর রহমান জাতির পিতাকে হত্যার মাধ্যমে অবৈধ পন্থায় ক্ষমতায় এসেছিল। গণতান্ত্রিক ধারা তাদের পছন্দ না।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত থাকলে দেশের উন্নতি হয়। বাংলাদেশ আজ উন্নতি হচ্ছে গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত থাকার কারণে।’
জিয়াউর রহমান একটি ভাঙা সুটকেস আর ছেঁড়া গেঞ্জি রেখে গিয়েছিলেন, খালেদা জিয়া ক্ষমতায় এসে হাওয়া ভবন খুলে কোটি কোটি টাকা দুর্নীতি করেছে বলে মন্তব্য করেন শেখ হাসিনা।
খালেদা জিয়ার সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘খালেদা জিয়া আজ জেলে কেন। এতিমের নামে টাকা এনে নিজে আত্মসাৎ করেছে। জিয়া ট্রাস্টের টাকা চুরি করেছে বলেই সাাজাপ্রাপ্ত আসামি।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘খালেদার ছেলে একটা টাকা চুরি করেছিল, সিঙ্গাপুরে মারা গেছে। টাকা পাচার করেছিল, আমরা সেই টাকার কিছু ফিরিয়ে এনেছি। আরেকজন কুলাঙ্গার বানিয়ে রেখে গেছে জিয়াউর রহমান। লন্ডনে বসে আছে। সে লন্ডনে কেন আছে। ২০০৭ সালে মুচলেকা দিয়ে পালিয়েছিল। সেখানে রাজার হালে থাকে আর দেশে যত নাশকতার কাজ করে যাচ্ছে।’
চট্টগ্রামের পলোগ্রাউন্ড মাঠ থেকে ২৯টি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন ছাড়াও আরও ছয়টি প্রকল্পের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী। এসব প্রকল্পের মোট ব্যয় ৩৩ হাজার কোটি টাকারও বেশি। এসব প্রকল্প চট্টগ্রামবাসীর জন্য উপহার বলে মন্তব্য করেন সরকারপ্রধান।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জনসভা ঘিরে মিছিলের নগরীতে রূপ নিয়েছে চট্টগ্রাম। স্লোগানে স্লোগানে মুখর হয়ে ওঠেছে বন্দরনগরী। নেতাকর্মীদের গায়ে ছবি সম্বলিত নানা রঙের টি-শার্টে পুরো জনসভাস্থল রঙিন হয়ে ওঠেছে। এছাড়া পলোগ্রাউন্ড মাঠের আশপাশ ছেয়ে গেছে ব্যানার আর পোস্টারে।
আওয়ামী লীগের জনসভা ঘিরে এদিন সকাল থেকেই বাদ্যযন্ত্র বাজিয়ে চট্টগ্রামের বিভিন্ন সংসদীয় এলাকা থেকে নেতাকর্মীরা জনসভাস্থলের দিকে আসতে থাকেন। আর চট্টগ্রামের বাইরের উপজেলা থেকে বাস-ট্রাকে করে নগরীতে প্রবেশ করেন নেতাকর্মীরা। এরপর হেঁটে মিছিল নিয়ে তারা জনসভাস্থলে যান। পুরো নগরীতে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে।
জনসভায় যে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ও বিশৃঙ্খলা এড়াতে আগে থেকেই স্থানীয় সংসদ সদস্যের নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধভাবে মিছিল আনার সিদ্ধান্ত দেয় কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ।