শর্ত পূরণ করে ভিন্ন নামে জামায়াত ইসির নিবন্ধন পেতে পারে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার (ইসি) মো. আলমগীর। তিনি বলেন, জামায়াতের কেউ যদি যুদ্ধাপরাধী না হয় এবং তাদের গঠনতন্ত্র যদি সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক না হয়, তাহলে শর্ত পূরণ করে ভিন্ন নামে তাদের নিবন্ধন পেতে বাধা নেই।
বুধবার (২৬ অক্টোবর) দুপুরে আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।
বর্তমান জামায়াতে ইসলামীর নামে রাজনৈতিক দলের নিবন্ধনের কোনও সুযোগ নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, জামায়াতের নিবন্ধন কোর্টের আদেশে বাতিল করা হয়েছে। কেউ নিবন্ধিত হতে চাইলে তাকে নতুন করে নিবন্ধিত হতে হবে।
এসময় তিনি স্পষ্ট করে জানান, মুক্তিযুদ্ধ ও সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক গঠনতন্ত্র নিয়ে কেউ আবেদন করলে তাদের নিবন্ধন দেবে না কমিশন।
বর্তমান জামায়াতে ইসলামীর নামে সংগঠনের নিবন্ধনের কোনও সুযোগ নেই এমনটা জানিয়ে কমিশনার বলেন, বঙ্গবন্ধুর হত্যার সঙ্গে জড়িত, দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধন দেওয়ার সুযোগ নেই।
এর আগে চলতি বছরের ২৯ আগস্ট রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মো. আলমগীর বলেছিলেন, ‘যুদ্ধাপরাধের দায়ে অভিযুক্ত রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন আদালতের আদেশে বাতিল হয়েছে। তাই ওই দলের ব্যক্তিরা ভিন্ন নামে আবেদন করলেও নিবন্ধন পাওয়ার সুযোগ নেই। অবশ্য আদালত কোনও আদেশ দিলে ভিন্ন কথা। সে আদেশ মানতে হবে।
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারী দল জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন বাতিল ও অবৈধ ঘোষণা করে ২০১৩ সালের ১ আগস্ট রায় দেন হাইকোর্ট। এর পাঁচ বছর পর ২০১৮ সালের ২৯ অক্টোবর দলটির নিবন্ধন বাতিল করে প্রজ্ঞাপন জারি করে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
এদিকে অপর এর প্রশ্নের জবাবে এই নির্বাচন কমিশনার বলেন, নিবন্ধিত ৩৮টি দলের অডিট রিপোর্ট পাওয়া গেলেও একটি দলের এখনও পাওয়া যায়নি। পরপর তিন বার রিপোর্ট না দিলে নিবন্ধন বাতিল হতে পারে। দুই একবার এমন হলে সতর্ক করা করতে পারে কমিশন।
রাজনৈতিক দলের বিদেশের শাখা আছে এমন অভিযোগ আসলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে বলে জানিয়ে আলমগীর বলেন, জাতীয় নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন চেয়ে বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। শর্তগুলো পূরণ হলেই নিবন্ধন দেওয়া হবে।
তিনি বলেন, কমিশনের সীমিত সক্ষমতার কারণে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলো শর্ত পূরণ করে চলছে কি না সেটা তদারক করা সম্ভব হয় না। শর্ত পূরণ করতে সময়সীমা বেঁধে না দেওয়া হলেও এসব বিষয়ে কাজ চলছে।
তিনি বলেন, ৩৩ ভাগ নারীর অংশগ্রহণ নিশ্চিত হলেও শর্ত পূরণের বিষয়টি বাস্তবতার নিরিখে করা হয়নি। রাজনৈতিক দলগুলোর ৩৩ ভাগ নারী অংশগ্রহণের বিষয়ে শর্ত পূরণের সময় ২০৩০ পর্যন্ত সময় বাড়ানোর সুপারিশ করা হয়েছে।