দেশে দুটি লিকুইড অক্সিজেন প্ল্যান্ট স্থাপন করা হবে : স্বাস্থ্যমন্ত্রী

SHARE

স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, ‘করোনার চিকিৎসায় লিকুইড অক্সিজেনের খুবই প্রয়োজন ছিল। আমাদের দেশে লিকুইড অক্সিজেন তৈরি হলেও যতটুকু প্রয়োজন ততটুকু হয় না। যখন বেশি প্রয়োজন হয়েছে, তখন ভারত থেকে এনেও ব্যবহার করেছি। এখন আমরা বাংলাদেশে দুটি লিকুইড অক্সিজেন প্ল্যান্ট স্থাপন করতে যাচ্ছি।’

শনিবার (২৩ জুলাই) মানিকগঞ্জে কর্নেল মালেক মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ইন্টার্ন সার্জারি চিকিৎসকদের ‘বেসিক সার্জিক্যাল স্কিল’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘দুটি অক্সিজেন প্ল্যাটের উৎপাদন ক্ষমতা হবে ৪০০ টন। দেশে এখন ২০০ টনের মতো চাহিদা আছে। নতুন দুটি প্ল্যান্ট হলে সক্ষমতা আরও বাড়বে। একটি প্ল্যান্ট মানিকগঞ্জে, অপরটি উত্তরবঙ্গে স্থাপর করা হবে।’

তিনি বলেন, ‘বর্তমানে দেশে ৩৮টি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল আছে। আমাদের ওষুধপত্রের অভাব নেই। ১০০ পারসেন্ট বিশ্বমানের ওষুধ দেশে তৈরি হয় এবং রপ্তানি হচ্ছে বিদেশে। কিন্তু, একটা জিনিসের অভাব আছে, তা হলো প্রশিক্ষিত জনবল। আমাদের হাসপাতালের সবকিছু ঠিক আছে, শুধু মনিটরিংয়ের অভাব আছে। সেজন্য আমরা চারটি মনিটরিং কমিটি গঠন করেছি।’

মন্ত্রী বলেন, দেশে প্রথম ও দ্বিতীয় ডোজ ১৩ কোটি টিকা দিতে পারলেও বুস্টার ডোজ নিয়েছে মাত্র ৩ কোটি। বিনামূল্যে ভ্যাকসিনের দোকান খুলে বসেছি। কিন্তু ক্রেতা নেই। বুস্টার ডোজ নিতে মানুষের আগ্রহ কম। এটা খুবই দুঃখজনক। মানুষের আগ্রহ তৈরি করতে নানা ধরনের প্রচারণা চালানো হচ্ছে।

জাহিদ মালেক বলেন, করোনাকালে চিকিৎসাখাতে অনেক অক্সিজেনের প্রয়োজন হয়েছিল। তখন দেশে অক্সিজেন কম থাকায় ভারত থেকে অক্সিজেন এনে মানুষের চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে দেশে দেড় থেকে দুইশো টন অক্সিজেন উৎপাদন হচ্ছে। অক্সিজেনের চাহিদা পূরণের লক্ষ্যেই প্ল্যান্ট স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, করোনায় মৃত্যু হার শূন্যের কোটায় নেমে এসেছিল। কিন্তু বর্তমানে করোনা সংক্রমণের হার বাড়ার পাশাপাশি মৃত্যুর সংখ্যাও বাড়ছে। করোনায় যারা মারা গেছেন তাদের অধিকাংশ মানুষ ভ্যাকসিন গ্রহণ করেনি। যারা এখনো ভ্যাকসিন গ্রহণ করেননি তাদের দ্রুত ভ্যাকসিন নিতে হবে। কারণ ভ্যাকসিন নিলে আপনি যেমন সুরক্ষিত হবেন, পাশাপাশি আপনার পরিবার ও দেশ সুরক্ষিত হবে।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশে অনেক রোগী অর্থ ব্যয় করে বাইরের দেশে যান চিকিৎসা করাতে। একজন ভালো মানের ডাক্তার হতে গেলে প্রশিক্ষণের কোনো বিকল্প নেই। আমাদের দেশে সেবার জন্য অবকাঠামোর কোনো অভাব নেই। আমাদের প্রশিক্ষিত ডাক্তার, নার্স ও টেকনিশিয়ানের অভাব রয়েছে। এজন্য প্রশিক্ষণের ওপর আমরা জোর দিয়েছি। যাতে আমাদের ডাক্তার, নার্স ও টেকনিশিয়ান বিশ্বমানের হয়। আমাদের আর বাইরের দেশে গিয়ে চিকিৎসা নিতে না হয়।

এ সময় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন—স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) ডা. আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ আব্দুল লতিফ, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ গোলাম আজাদ খান, কর্নেল মালেক মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ জাকির হোসেন, কর্নেল মালেক মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. আরশাদ উল্লাহ, মানিকগঞ্জ পৌরসভার মেয়র রমজান আলী, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সালাম প্রমুখ।